শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

চরিত্রের প্রয়োজনে গালিগালাজ থাকতে পারে: আজিজুল হাকিম 

রাফিউজ্জামান রাফি
প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৩ পিএম

শেয়ার করুন:

চরিত্রের প্রয়োজনে গালিগালাজ থাকতে পারে: আজিজুল হাকিম 
ভিকি জাহেদ নির্মিত ওয়েব সিরিজ ‘আকা’ দর্শকদের মনোযোগ কেড়েছে। বিশেষভাবে নজরে এসেছে জনপ্রিয় অভিনেতা আজিজুল হাকিম অভিনীত ‘কায়সার চাচা’ চরিত্রটি। সেই সূত্র ধরে ঢাকা মেইলের সঙ্গে ফোনালাপ জমেছিল অভিনেতার। 

‘আকা’ ওয়েব সিরিজে আপনার অভিনীত ‘কায়সার চাচা’ চরিত্রটি দারুণ প্রশংসা পাচ্ছে। এরকম প্রত্যাশা করেছিলেন? 


বিজ্ঞাপন


গল্পটি ভিকি জাহেদের। আগেও তার কাজ করেছি। ওর স্ক্রিপ্টগুলো একটু আলাদা হয়। গল্পটি পড়ার সময় স্ক্রিপ্ট ও চরিত্রগুলোর প্রতি আমার এক ধরনের ভালোলাগা তৈরি হয়। সেই ভালোলাগা থেকে কায়সার চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হই। দর্শকদের যে চরিত্রটি এরকম ভালো লাগবে তা আগে থেকে বলা মুশকিল। কারণ কোনো চরিত্রে কাজের সময় এক ধরনের প্রত্যাশা থাকে। চরিত্রটি ভালোমতো ধারণ করতে পারলাম কি না, পরিচালকের চাহিদা অনুযায়ী উপস্থাপন করতে পারলাম কি না— শঙ্কাগুলো কাজ করে। তবে আমি যে চরিত্রই করি না কেন সেটি বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে যা প্রয়োজন সব করার চেষ্টা করি। ‘আকা’তেও একইভাবে কাজ করেছি।     

চরিত্রটিতে প্রচুর গালিগালাজ রয়েছে। সেজন্য কোনোরকম জড়তাবোধ করেছেন? 

এ ধরনের গালিগালাজ কায়সার চাচা চরিত্রটির স্বাভাবিক আচরণের মধ্যে পড়ে। সেসব ফুটিয়ে তুলতে যতটুকু করা দরকার আমি করেছি। তবে চরিত্রটিতে আরও বেশি গালাগাল ছিল। দর্শকদের কাছে যেন বেশি খারাপ না লাগে পরিচালকের সঙ্গে আলাপ করে সেই অনুযায়ী করার চেষ্টা করেছি। আমার কাছে যতটুকু স্ল্যাং দরকার মনে হয়েছে সেটুকু ব্যবহার করা হয়েছে। 

aziz


বিজ্ঞাপন


আপনার কাছে কেমন লেগেছে ‘আকা’?  

‘আকা’ মুক্তির সময় আমেরিকা ছিলাম। এক মাস পর গত ৫ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরেছি। এখনও সিরিজটি দেখার সুযোগ হয়নি। সময় করে দেখব। তবে দর্শকরা ‘আকা’র প্রশংসা করছেন। শুধু আমার চরিত্র না পুরো সিরিজ নিয়ে অনেকে কথা বলছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনদের মন্তব্য পড়ে মনে হয়েছে তাদের কাছে ভালো লাগছে।

কাজটি আপনার ক্যারিয়ারের অন্য কাজগুলো থেকে আলাদা মনে হয়েছে? 

একজন অভিনেতা হিসেবে প্রত্যেক চরিত্র আমার কাছে আলাদা মনে হয়। সবসময় চরিত্রগুলোর মধ্যে ভিন্নতা খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করি। যে কারণে আমার কখনও অভিনয় করতে একঘেয়েমি লাগে না। চরিত্র নির্মাণের জন্য যা যা প্রয়োজন সব করি। প্রতিটি চরিত্র করার সময় মনে হয় আমাকে শতভাগ সৎ থেকে কাজটি করতে হবে। ওই চরিত্রটি তখন আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তাই অভিনেতা হিসেবে কখনও বলতে পারব না যে এই চরিত্রের চেয়ে ওই চরিত্র আমার কাছে আলাদা। আমি মনে করি ‘আকা’ দর্শকদের কাছে এক ধরনের সাড়া জাগিয়েছে। ভবিষ্যতে হয়তো আরেক ধরনের চরিত্র হাইপ তুলতে পারে। না-ও পারে। কিন্তু একজন শিল্পী হিসেবে চরিত্রের প্রতি ডেডিকশন, ভালোবাসা, ভালোলাগা নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করি।     

অনেকের মতে বাংলা নাটকে দৈন্যদশা চলছে। আপনার মন্তব্য কী? 

সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে অনেক কিছুর পরিবর্তন ঘটে। একসময় শুধু বাংলাদেশ টেলিভিশন ছিল। তারপর অনেকগুলো চ্যানেল এলো। ডিজিটাল চ্যানেল হলো। প্রযুক্তির উন্নতি হয়েছে, ফরম্যাট চেঞ্জ হচ্ছে। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে, ইউটিউবে কাজ হচ্ছে। আমরা যখন টেলিভিশনে কাজ করেছি তখন এক ধরনের সেন্সরশিপ ছিল। এখন সবাই সেলফ সেন্সরশিপ নিয়ে কাজ করছে। নিজেস্ব সেন্সরশিপের কোনটা সমাজের জন্য ইতিবাচক, কোনটা নেতিবাচক সেটা মাথায় রেখে নির্মাতা, গল্পকার, অভিনয়শিল্পীরা কাজ করবেন— এটাই প্রত্যাশা আমাদের।

image-191194

গল্পে গালিগালাজ ব্যবহারে অনেকের আপত্তি। এ বিষয়ে কী বলবেন? 

আমি অযথা গালাগালির পক্ষে না। চরিত্রের প্রয়োজনে স্ল্যাং থাকতে পারে। একটা সময় অনেকে বলতেন আঞ্চলিক ভাষায় নাটক হচ্ছে। ক্যারেক্টার যদি আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে তাহলে হতেই পারে। কিন্তু অযথা হাইপ সৃষ্টি করতে কিংবা লজিক ছাড়া গালিগালাজ থাকলে দর্শক সেটা ছুঁড়ে ফেলবেন। 

ব্যস্ততা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি। 

সামনে কিছু সিরিয়ালের অভিনয়ের চিন্তাভাবনা আছে। আমি এক মাসের বেশি দেশের বাইরে ছিলাম। মঞ্চ নাটক নিয়ে আমেরিকা ও কানাডার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছি। আমার স্ত্রী (জিনাত হাকিম) গত ৩০ বছর ধরে দেশে বাইরে ইভেন্ট করেন। নিজের লেখা ও অন্যের নাটক নিয়ে আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশ, যুক্তরাজ্য, দুবাই, কানাডার মঞ্চে প্রদর্শন করেন। গোটা পৃথিবীতে বাংলাদেশের মানুষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। সেখানকার বাঙালি কমিউনিটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকমের উৎসব করে। বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবসসহ বিশেষ দিনগুলোতে তারা অনুষ্ঠান করে। সেই অনুষ্ঠানগুলোতে মঞ্চনাটকের মতো করে নাটক উপস্থাপন করি। অনেক সময় দেখা যায়, অভিনয়শিল্পী হিসেবে অ্যাওয়ার্ড নিতে গেছি দর্শকরা একটু অভিনয় দেখতে চাইলেন—  তখন বিব্রতকর অবস্থা তৈরি হয়। এটা বুঝতে পেরে জিনাত প্রবাসী ও দেশের শিল্পীদের মিলিয়ে কাজটি করছেন। গত ৩০ বছর সফলতার সাথে কাজটি হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমেরিকা ও কানাডায় আমরা চারটি নাটক করে এসেছি। দেশে কিছু ওটিটি ও ইউটিউবের কাজের ব্যস্ততা আছে। টেলিভিশনেও নতুন সিরিয়ালের কিছু কাজ আছে। শিগগিরই শুরু হবে।    

e25fd5921ab0e88dea595cbeedb84d24-5fae1cef8d391

সিনেমার খবর...  

‘দেয়ালের দেশে’র পর কোনো ছবিতে কাজ করিনি। ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে করা হয়ে ওঠেনি। তবে নিজের সিনেমা নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। সেটা নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবত কাজ করছি। শিগগির আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব। পরিকল্পনা শেষ করতে পারলে এ বছর শুরু করতে পারব। অন্যথায় আগামী বছর।

আরআর 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর