এলেন-দেখলেন-জয় করলেন— কথাটি যেন ঢালিউড সুপারস্টার সালমান শাহের জন্য প্রযোজ্য। সাড়ে তিন বছরের ক্যারিয়ারে দর্শকদের উপহার দিয়েছেন ২৭টি সিনেমা। এরমধ্যে ২৪টি সুপারহিট। নব্বই দশকের মাঝামাঝিতে তাঁর ফ্যাশন স্টাইল কলেজ পড়ুয়াদের প্রভাবিত করেছিল। মিষ্টি হাসি, রোমান্স আর অ্যাকশন তাঁকে এনে দিয়েছিল তারকা খ্যাতি।
তাঁর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করেছে। আজ ঢালিউডের স্বপ্নের নায়কের ২৯ তম মৃত্যু বার্ষিকী। এখনও প্রাসঙ্গিক তিনি। বর্তমান প্রজন্ম সালমান শাহকে দেখেনি। অথচ প্রিয় নায়কের তালিকায় প্রথম স্থানে অনেকেই রেখেছেন স্বপ্নের নায়কের নাম।

বিজ্ঞাপন
সালমান শাহর মৃত্যুর এত বছর পর এখনও কেন দর্শকদের কাছে জনপ্রিয়- এমন প্রশ্নের জবাব খুজেছে ঢাকা মেইল। সানজিদা আক্তার নামের এক ভক্ত বলেন, সালমান শাহ আমার কাছে এক অনন্য নাম। পর্দায় তাঁর ঝলমলে উপস্থিতি দেখে চোখ ফেরানো দায়। প্রতিটি চরিত্রে নিজেকে ভেঙে নতুনভাবে গড়তেন। অভিনয় দক্ষতা আর ব্যক্তিত্ব তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে। আমি সলমানের মৃত্যুর অনেক বছর পরে জন্মালেও তাঁর কাজগুলো দেখে সুপারস্টারকে চিনেছি। সালমান শাহ শুধু একজন নায়ক নন, তিনি সকল প্রজন্মের অনুপ্রেরণা।
মৌমিতা মেহের জাবীন নামে অন্য একজন নিজের অনুভুতির কথা জানিয়ে বলছেন, ছোটবেলা থেকে মায়ের মুখে শুনতাম সালমান শাহের নাম। বিশেষ করে তাঁর প্রথম ছবি “কেয়ামত থেকে কেয়ামত” এর কথা। মায়ের মুখে শুনেছি ছবিটি মুক্তির পর দেশের প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের ঢল নেমেছিল। নতুন নায়ক সালমানকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল এক অদ্ভুত উত্তেজনা। আমিও দেখতে শুরু করি তাঁর সিনেমাগুলো। সালমানের চোখের অভিব্যক্তি আর রোমান্টিক দৃশ্যগুলো আমাকে মুগ্ধ করে। বর্তমান প্রজন্মের তরুণদের কাছে তিনি এখনও ফ্যাশন আইকন। তাঁর হেয়ারস্টাইল, পোশাক, চলাফেরা—এসব অনুসরণ করত দেখা যায় তরুণদের।

সৌরভ মজুমদার নামে আর একজন অনুরাগীর ভালোবাসা ফুটে উঠেছে এভাবে, সালমান শাহর মৃত্যু আজও কাঁদায় সিনেমাপ্রেমীদের। অভিনয়, স্টাইল ও ব্যক্তিত্বে তিনি ছিলেন অদ্বিতীয়। তাঁর সিনেমার গানগুলো আমাকে নস্টালজিক করে তোলে। সব সখিরে পার করিতে নেব আনা আনা, ভালো আছি ভালো থেকো আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো-এর মতো জনপ্রিয় গানগুলো বন্ধুদের সঙ্গে চায়ের আড্ডাকে জমিয়ে তোলে।
বিজ্ঞাপন
গণমাধ্যমকর্মী নিশীতা মিতু বলেন, সালমান শাহ যখন মারা যান তখন আমি ২ বছরের শিশু। অর্থাৎ যেসময় আমি ওনার সিনেমা দেখেছি তার অনেক আগেই উনি এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। প্রথম কোন সিনেমা দেখেছিলাম ঠিক মনে পড়ছে না। ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ কিংবা ‘আনন্দ অশ্রু’ হবে বোধহয়। কিশোরীবেলায় পর্দায় সালমান শাহকে দেখেই তার প্রেমে পড়ে গেছি।
_20250906_142203358.jpg)
তিনি যোগ করেন, এরপর অনেক বছর পেরিয়ে গেছে। আমি বড় হয়ে গেছি। কিন্তু সালমান এখনও আটকে আছেন সেই তরুণ বয়সে। যেই তরুণের প্রেমে পড়ছে আমাদের পরের প্রজন্ম। ভালোবাসা, মায়ের প্রতি সম্মান, দাদী-নানীর সঙ্গে খুনসুটি কিংবা সন্তানের জন্য বাবার অকৃত্রিম স্নেহ— সবকিছুতেই যেন সেরা সালমান শাহ।
সবশেষে বলেন, আমাদের বয়স বাড়লেও পর্দার সালমান শাহ’র বয়স নির্দিষ্ট ফ্রেমে আটকে আছে। তাই মৃত্যুর ৩১ বছর পরেও তিনি আমাদের পছন্দের নায়কের তালিকায় আছেন। থাকবেন আজীবন।

