পতিত আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ হয়েও কুষ্টিয়ায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গিয়ে বিতর্কের সুনামি তুলে দিয়েছেন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস। বৃহস্পতিবারের (৪ সেপ্টেম্বর) ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বক্তব্যও দেন। কী বলেছিলেন নায়িকা?
বক্তব্যকালে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘সেই ঢাকা থেকে সাত ঘণ্টা জার্নি করে এসেছি আপনাদের সঙ্গে দেখা করব এবং কথা বলব বলে। আমি শিল্পী, এটাই আমার পরিচয়। এই পরিচয়ে দর্শকদের ভালোবাসা পেয়েছি। এজন্য আপনাদের কাছাকাছি আসি। জানতে পেরেছি আপনারা সেই দুপুর ১২টা থেকে গরমের মধ্যে বসে আছেন। এটা আসলে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।’
বিজ্ঞাপন
অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি বগুড়ার মেয়ে। এর আগে রাজবাড়ী এসেছিলাম, কিন্তু খোকসা আসা হয়নি। এখানে আনার জন্য প্রাণপ্রিয় বড় ভাই রিপন ভাইকে (স্থানীয় বিএনপি নেতা) ধন্যবাদ জানাই। রিপন ভাই আপনাদের সেবা করতে চান। আমি চাইব, সেই সুযোগ আপনারা করে দেবেন।’
অপু আরও বলেন, ‘যে মানুষ আপনাদের চাওয়া-পাওয়ার মূল্য দিতে চায়, আমি মনে করি তার থেকে আর বড় মনের মানুষ হতে পারে না। আপনারা তাকে যে ভালোবাসা ও সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছেন, আমি চাইব তিনি যেন লক্ষ্য পূরণ করতে পারেন। আপনারা বাংলা চলচ্চিত্রের সঙ্গে থাকবেন।’
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরের পরে কুষ্টিয়ার খোকসায় আয়োজিত বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জানিপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে শোডাউন, ভোজন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন অপু বিশ্বাস। তার সঙ্গে ছিলেন চিত্রনায়ক নিরব হোসেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি হতে দুইবার মনোনয়নপত্র কেনেন ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের প্রাক্তন স্ত্রী অপু বিশ্বাস। প্রথমবার ২০১৯ সালে। সে বার শেখ হাসিনার সবুজ সংকেত পাননি আলোচিত এই নায়িকা। অর্থাৎ, তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
এরপর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি ফের আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত মহিলা আসনের মনোনয়নপত্র কেনেন অপু বিশ্বাস। কিন্তু দ্বিতীয় চেষ্টায়ও এমপি হওয়ার খায়েশ পূরণ হয়নি তার।
শুধু মনোনয়ন চাওয়া নয়, আওয়ামী লীগের যেকোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি এবং প্রচার-প্রচারণার অগ্রভাগে সবসময় দেখা গেছে অপু বিশ্বাসকে। এছাড়া মাত্র ১০০ টাকা পারিশ্রমিকে একটি সিনেমায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধও হয়েছিলেন। যদিও পরে সিনেমাটি থেকে সরে দাঁড়ান।
পাশাপাশি শেখ হাসিনার সঙ্গে তোলা একটি ছবি বহুদিন ধরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজের প্রোফাইলে দিয়ে রেখেছিলেন অপু বিশ্বাস। সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ‘নারী উন্নয়নের প্রতীক’ বলে মুখে ফেনাও তুলতেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হাসিনার সঙ্গের সেই ছবিটি প্রোফাইল থেকে সরিয়ে ফেলেন তিনি।
সেই আওয়ামী লীগ-ঘনিষ্ঠ অপু বিশ্বাসের বিএনপির অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে যাওয়া নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠা খুবই স্বাভাবিক। এ নিয়ে এরইমধ্যে নানা মহলে হইচই শুরু হয়েছে। গালে হাতে দিয়ে ভাবতে বসেছেন বিএনপির হাইকমান্ড। অপুকে যারা আমন্ত্রণ করেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে শোনা যাচ্ছে।
এএইচ

