দেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদের মৃত্যু বার্ষিকী আজ। ১৪ বছর আগে ২০১১ সালের এই দিনে ‘কাগজের ফুল’ নামের একটি চলচ্চিত্রের শুটিং লোকেশন দেখে ফেরার পথে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হন।
প্রামাণ্যচিত্র ‘আদম সুরত’, ‘মুক্তির গান’, ‘মুক্তির কথা’ এবং পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মাটির ময়না’, ‘অন্তরযাত্রা’, ‘রানওয়ে’কাজের মাধ্যমে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছিল। ‘মাটির ময়না’ শুধু দেশের নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের গর্ব হয়ে দাঁড়ায় কান চলচ্চিত্র উৎসবে ফিপরেস্কি পুরস্কার জিতে নেয় এবং প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অস্কারের জন্য মনোনীত হয়।
বিজ্ঞাপন
১৯৮৯ সালে চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানকে নিয়ে ‘আদম সুরত’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন তিনি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর ১৯৯৫ সালে তারেক মাসুদের নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘মুক্তির গান’ ও ‘মুক্তির কথা’ (১৯৯৬) প্রশংসিত হয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও।
শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর ছেলে আশফাক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিবিসির ভিডিওগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। সবার কাছে মিশুক মুনীর নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন তিনি। কর্মজীবনে দীর্ঘদিন দেশের বেসরকারি টেলিভিশন সাংবাদিকতা করেছেন। ১৯৫৯ সালে নোয়াখালী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন মিশুক মুনীর।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরকে একুশে পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত করে সরকার।
বিজ্ঞাপন

২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় বিপরীতমুখী চুয়াডাঙ্গা এক্সপ্রেসের একটি বাসের সঙ্গে তারেক মাসুদ ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মিশুক মুনীরকে বহনকারী মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হন। ‘কাগজের ফুল’ চলচ্চিত্রের লোকেশন দেখতে গিয়ে ফেরার পথে তারা হারিয়ে যান চিরতরে।
তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর স্মরণে ‘চলচ্চিত্র পথ’ শিরোনামের বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে চিত্রগ্রাহকদের সংগঠন ক্যামেরাম্যান অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। আজ বিকেল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বীর উত্তম মীর শওকত সড়কে অবস্থিত গ্রাউন্ড জিরোতে হবে এই অনুষ্ঠান।
চলচ্চিত্র পথ অনুষ্ঠানে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করবেন নির্মাতা প্রসূন রহমান, নাহিদ মাসুদ ও আসিফ মুনীর। আয়োজনটি সবার জন্য উন্মুক্ত।
ইএইচ/

