যাদের অভিনয়ে পর্দা হয়ে ওঠে চুম্বকের মতো শক্তিশালী, এক লহমায় বন্দি হন দর্শক তাদের মধ্যে অন্যতম রাশেদ মামুন অপু। নাটকে নিজেকে প্রমাণ করে ওটিটিতে অভিনয়ের দ্যুতি ছড়িয়ে বড়পর্দায় পায়ের তলার মাটি শক্ত করেছেন। জনপ্রিয় এ অভিনেতার সঙ্গে ফোনালাপ জমেছিল ঢাকা মেইলের।
ব্যস্ততা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি…
বিজ্ঞাপন
কামরুজ্জামান রোমানের ওয়েব ফিল্ম ‘কিল হাউজ’ শেষ করলাম। এরমধ্যে চারটি ছবিতে কাজের কথা হয়েছে। সাইনের অপেক্ষায়। জুলাইয়ের শেষ অথবা আগস্টের শুরুতে নতুন সিনেমার কাজ শুরু করব। এছাড়া সাংগঠনিক ব্যস্ততা রয়েছে।

এর আগে এক ডজনের মতো সিনেমা হাতে ছিল আপনার। এখন সংখ্যাটি কত?
সম্ভবত ৯-১০টি ছবি মুক্তির অপেক্ষায় আছে। এরমধ্যে মিজানুর রহমান লাবুর ‘আতরবিবিলেন’, জাকির হোসেন রাজুর ‘চাদর’, অপূর্ব রানার ‘দ্য রাইটার’ রয়েছে।
ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই নেতিবাচক চরিত্রে আগ্রহ। কেন?
বিজ্ঞাপন
নেতিবাচক চরিত্রে অনেকগুলো শেড থাকে। বৈচিত্র্য থাকে। অভিনয় করে মজা পাওয়া যায়। অভিনয়টাকে বিশ্বাস করাতে হয়। ক্যারেক্টারের ভেতর অনেকগুলো অ্যাপ্রোচ থাকে। লেয়ার থাকে। এই জায়গাগুলোতে অভিনয় করতে আমি খুব স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।

খল চরিত্রে আলাদা কোনো প্রস্তুতি প্রয়োজন হয়?
সব চরিত্র আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। নেতিবাচক চরিত্রের জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি নিতে হবে বলে মনে করি না। সব চরিত্রই আমার কাছে নতুনভাবে শুরু মনে হয় এবং মনে করি ওটাই আমার শেষ কাজ। আমার স্বপ্নের কোনো ক্যারেক্টার নেই। যখন যে কাজে চুক্তিবদ্ধ হই সেটাই স্বপ্নের ক্যারেক্টার। তাই প্রস্তুতিও সমানভাবে নিই।
স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না এরকম চরিত্রেও অনেক সময় অভিনয় করতে হয়। কেমন লাগে?
একদম অস্বস্তিদায়ক। আমি মনে করি পেশা হিসেবে যে কাজই করি না কেন তাতে আনন্দ থাকা প্রয়োজন। আনন্দের জায়গায় যদি আমার সারভাইভের প্রশ্ন আসে তা অবশ্যই অস্বস্তিদায়ক। কিন্তু কিছুই করার নেই। কেননা অভিনেতাদের অনেক ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এটা অবশ্য সব পেশার মধ্যেই আছে।

মানসিক চাপ কীরকম অনুভব করেন?
মেনে নিতে পারছি না কিন্তু বাধ্য হয়ে কাজটি করতে হচ্ছে— এই মানসিক চাপ আকাশ সমান। কাজের শুরুতে থাকে। আরম্ভ করার পর প্রতিনিয়ত ভোলার চেষ্টা চলে। সততা ও নিষ্টার সঙ্গে কাজ শেষ করার চেষ্টা চলে। কারণ আমি পারিশ্রমিক পাচ্ছি। তাই অসততা অবলম্বন করা যাবে না। মানসিক চাপ ভুলে যাওয়া এবং দিন শেষে টাকার খাম পকেটে ভরে প্রচণ্ড রকমের মন খারাপ নিয়ে ফেরা— একজন অভিনেতার জন্য অস্বস্তির জায়গা।
নায়ক হওয়ার স্বপ্ন ছিল?
কোনো কালে, কোনোভাবে, কখনোই ছিল না। যখন থিয়েটার করেছি তখন অভিনয়কে ভালোবেসে করেছি। আমার কাছে নায়ক, চরিত্রাভিনেতা বা খলনায়ক আলাদাভাবে কখনও টানেনি। নায়ক হওয়ার আলাদা কোনো ফ্যাসিনেশনও ছিল না।

সংগঠনের ব্যস্ততার প্রভাব অভিনয়ের ওপর পড়ে?
আমি নয় বছর বয়স থেকে সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। সংগঠন আমার কাছে সহজাত ব্যাপার৷ অনেকটা ডাল-ভাতের মতো। সংগঠনের কারণে পড়াশোনা বা দৈনিন্দন জীবন কখনও ব্যহত হয়নি। বাবাও সংগঠনিক ছিলেন। বিভিন্ন দিবসে অনুষ্ঠানের রিহার্সালগুলো বাসা থেকে দেখেছি। বাসাতে সাংস্কৃতিক পরিবেশ ছিল। সংগঠন করার জন্য আলাদা প্রস্তুতি কোনোদিন নিতে হয়নি। সংগঠন সংগঠনের মতো আছে। আমার ক্যারিয়ারের দিকেও ফোকাস আছে৷ তারপরও একটা সময় তো সংগঠনকে দিতেই হয়৷ ভালোবেসে সংগঠন করি। ওটা মেনে নিয়েই করতে হয়।
ঈদের সিনেমাগুলো দেখেছেন?
ঈদের সিনেমা দেখা হয়নি। কারণ অনেকদিন পর ঈদ করতে রাজশাহীতে গিয়েছিলাম। ছুটিতে অনেকদিন থাকা হলো। ১০-১২ দিন পর ফিরেছি। ফিরেই সংসার ও সাংগঠনিক কাজে ঝাপিয়ে পড়তে হয়েছে। এরমধ্যে ঈদের সিনেমা দেখার ফুরসত মেলেনি।
আরআর

