কিশোরগঞ্জের গোরখোদক মনু মিয়াকে চেনেন না এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বেঁচে থাকতে সুদীর্ঘ ৪৯টি বছর কবর খননের কাজ করে কাটিয়েছেন। কোনো ধরনের পারিশ্রমিক কিংবা বকশিস নেননি এজন্য। জীবদ্দশায় খনন করেছেন ৩ হাজার ৫৭টি কবর। মনু মিয়ার এই মহত্ত্ব টেনেছিল অভিনেতা খায়রুল বাসারকে।
তার মৃত্যুর খবর শুনে পুরস্কার ফেলে ছুটে গিয়েছিলেন জানাজায়। এবার মনু মিয়ার মতো আরেক মহৎ ব্যক্তির সন্ধান দিলেন অভিনেতা। রমেশ মাঝি নামের ওই ব্যক্তি ৫৪ বছর ধরে বিনা ভাড়ায় খেয়া পার করছেন।
বিজ্ঞাপন
রমেশ মাঝিকে নিয়ে করা একটি ভিডিও প্রতিবেদন নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেছেন খায়রুল বাসার। ওই ভিডিও থেকে জানা যায়, শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ভজেশ্বর ইউনিয়নের কীর্তিনাশা নদীর লক্ষীপুর ঘাটে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খেয়া পার করেন তিনি। রোজ অসংখ্য যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছে দেন তিনি। কিন্তু বিনিময়ে কারও থেকে পারিশ্রমিক হিসেবে একটি পয়সাও নেন না।
শীত-গরম, রাত-দিন পরোয়া করেন না রমেশ মাঝি। যাত্রী থাকলে গভীর রাতেও বৈঠা ধরেন। এক স্থানীয়কে বলতে শোনা যায়, রাত ৩টায়ও যদি খেয়া পা করে দিতে বলা হয়। তৎক্ষণাৎ তিনি নৌকা নিয়ে তৈরি হন। এছাড়া মানুষের বিভিন্ন উপকার করে থাকেন।
রমেশ মাঝি বলেন, ৫৪ বছর ধরে খেওয়া পার করছি। ১০০ বছর ধরে এই ঘাটে আমার বাপ-দাদা মানুষ পারাপার করেছেন। তারাও কিছু নেননি। স্থানীয়রা ভালোবেসে ধান-চাল দিয়েছেন। তা দিয়েই জীবন যাপন করেছেন। আমিও ফ্রি নিয়ে যাই সবাইকে। কারণ জনসেবা করলে আল্লাহ খুশি। এত আয় করে কী করব। মানুষের একটু আশীর্বাদ নিয়ে যেতে পারলেই খুশী।
নিজের ফেসবুকে রমেশ মাঝির ভিডিও শেয়ার করে খায়রুল বাসার লিখেছেন, ‘মনু কাকা চলে গেছেন! আমরা পরিচয় পেলাম আরেক মহৎ প্রাণ রমেশ মাঝির। আমরা যেন রমেশ মাঝির দুর্দিনে পাশে থাকি। রমেশ মাঝি যেন বুক ভরে নিশ্বাস নিয়ে বলতে পারেন আমার সব আছে, সবাই আমার মানুষ; আমার আর কি লাগবে!’
বিজ্ঞাপন
খায়রুল বাসারের মন্তব্যের ঘরে অনেকেই অভিনেতাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রমেশ মাঝির কথা প্রচার করায়। অনেকে রমেশ মাঝির প্রতি প্রদর্শন করেছেন সম্মান।

