শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

অভিনয়টা মানুষ যত সহজ ভাবে ততটা না: জেফার 

রাফিউজ্জামান রাফি
প্রকাশিত: ০৬ মে ২০২৫, ০৫:৩৭ পিএম

শেয়ার করুন:

অভিনয়টা মানুষ যতটা সহজ ভাবে ততটা না: জেফার 
একটা সময় নিজস্ব গন্ডিতে থাকলেও প্রতিভার সবকটা পাপড়ি ছড়িয়ে জেফার রহমান এখন সবার। মাইক্রোফোন, ক্যামেরা দুটোতেই ছড়াচ্ছেন মুগ্ধতা। ‘দাগি’, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’, ‘তীর’ থেকেই তা প্রমাণিত। সম্প্রতি ঢাকা মেইলের কাছে মনের আগল খুলেছিলেন জনপ্রিয় এই সংগীতশিল্পী ও অভিনেত্রী। 

সু-সময়ের হাত ধরে হাঁটছেন। কেমন বোধ করছেন? 


বিজ্ঞাপন


অবশ্যই ভালো লাগছে। হয়তো অনেকের কাছে মনে হবে আমি হুট করে অনেক কাজ করছি। কথাটা সত্যি না। আমি আগে থেকেই আছি। আমার অগ্রগতি মানুষ দেখতে পেয়েছে। ইউটিউবে ইংরেজি গানের মাধ্যমে… এরপর আস্তে আস্তে পরিবর্তন। তারপর বাংলা গানে ট্রানজিশন। অনেক কিছু রয়েছে আমার ক্যারিয়ারে। এমন না যে আমি হুট করে এসেছি। হয়তো কাজ করতে করতে এখন একটা জায়গা তৈরি করতে পেরেছি। শেষ দুই-তিন বছর আমি খুব গুরুত্বের সাথে কাজ করছি। গানের ক্ষেত্রে ঝুমকা’ থেকে শুরু করে যেটা যেটা হয়েছে বেশ সাড়া পেয়েছি। মনে হয় এখন সুযোগও বেশি পাচ্ছি। অনেক পরিশ্রমও করছি। সবকিছু মিলিয়ে ভালো যাচ্ছে। 

473615177_1146948100122102_6420678487903346593_n

‘তুমি আমি শুধু’ ওয়েব ফিল্মে কীভাবে যুক্ত হলেন? 

শিহাব শাহীন ভাইয়ের সঙ্গে এই ওয়েব ফিল্মটিতে আমার প্রথম কাজ হওয়ার কথা ছিল। প্রথম মিটিং হয়েছিল এটা নিয়েই। এটা নিয়ে কথা বলতে বলতে ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন, ‘দাগির গান হয়। তাকে আমি বলেছিলাম, ‘ভাইয়া একটা ঠান্ডা গান দিয়েন। কারণ আমার যে স্টাইল সেটা খুব একটা ব্যবহার করতে পারছি না।’ তখন তিনি বললেন, ‘‘আচ্ছা ঠিক আছে ‘দাগি'তে এমন একটা গান আছে। তুমি কণ্ঠ দিতে পারো।’ এভাবেই ‘নিয়ে যাবে কি' গানটি করা। যেটা করে ভালো সাড়া পেয়েছি। যে কাজগুলো নিয়ে পরে কথা হয়েছিল সেগুলো আগে হয়ে গেছে। আগের কাজটা এখন হচ্ছে। 


বিজ্ঞাপন


আপনি ও প্রীতম হাসান দুজনেই গানের মানুষ। ক্যামেরায় কেমিস্ট্রি কেমন হবে বলে মনে হচ্ছে? 

এই চ্যালেঞ্জটাই তো মনে হয় শিহাব ভাই নিতে চাচ্ছেন। আমরা দুজনেই গানের মানুষ। অভিনয়ও করি। কিন্তু প্রীতম অভিনয়ে আমার থেকে বেশি নিয়মিত। দুজনের জন্যই ভিন্ন অভিজ্ঞতা হবে। আমরা নিয়মিত শো করি। সেখানে প্রতিনিয়ত দেখা হয়। তাছাড়া আমরা আগে থেকেই ভালো বন্ধু। ওই জায়গা থেকে এই ওয়েব সিনেমায় অভিনয় দুজনের জন্যই নতুন অভিজ্ঞতা। এবার দেখা যাক কেমন হয়। 

473532857_1145874273562818_1384871850212715304_n

ক্যামেরা, মাইক্রোফোন— কোথায় বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন? 

অবশ্যই মাইক্রোফোন। ওখান থেকেই আমার শুরু। ক্যামেরায় তো পরে যুক্ত হয়েছি। যদিও অভিনয়ে আমি নতুন কিন্তু অনেক আগে থেকে নিজের মিউজিক ভিডিও নিজেই করছি। তাই ক্যামেরা আমার কাছে নতুন মনে হয় না। তবে এখন যে আমাকে নিয়ে অন্য নির্মাতারা কাজ করছেন এটা নতুন। বিভিন্ন চরিত্রে নিজেকে উপস্থাপন করা, চরিত্র বুঝতে পারা, ধরতে পারার বিষয়গুলো নতুন।

অভিনয়ের জার্নিটা কেমন উপভোগ করছেন? 

অভিনয়টা মানুষ যতটা সহজ ভাবে ততটা সহজ না। কারণ সম্পূর্ণ ভাবনা থেকে একটা মানুষ হওয়ার চেষ্টা করতে হয়। ওই চরিত্রের মতো করে ভাবতে, কথা বলতে হয়। এই বিষয়গুলো আমার কাছে নতুন। বিষয়গুলো কীভাবে আয়ত্তে আনতে হয় পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করে করে শিখছি। তবে আমি নিজের কাজগুলোতে অনেক বেশি যুক্ত। আমার ভিডিও, গান, কম্পোজিশন সবকিছুতেই। ওটা আমার স্টেজ। ওটা জেফার। ওটা আর্টিস্ট। এখানে ওই জেফার হয়ে থাকলে হয় না। এখানে নিজেকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে হয়। এটা আমার কাছে অনেক চ্যালেঞ্জের। হয়তো আমার পছন্দ হচ্ছে, ভালো লাগছে, শেখার আগ্রহ আছে বলেই কাজগুলো করছি। 

495644554_1225410895609155_8113762041344491523_n

জেফার এখন সবার। শুরুতে পরিকল্পনাটা এরকম ছিল? 

চাইলে অনেক আগেই আমাকে পর্দায় দেখা যেত। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে নির্মাতারা বিজ্ঞাপন, টেলিফিল্ম, নাটকে কাজের জন্য প্রস্তাব দিতেন। প্রথমদিকে সবাইকে না বলে দিতাম। কারণ আমার লক্ষ্য ছিল সংগীতশিল্পী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। তারপর কিছু করলে করব। নিজেকে সংগীতশিল্পী হিসেবে চিনিয়েছি। তারপর অভিনয়ে এসেছি। অর্থাৎ যেভাবে ভেবেছিলাম সেভাবেই হয়েছে। তবে অভিনয় করতেই হবে এরকম কখনও পরিকল্পনা ছিল না! মিউজিকাল ক্যারিয়ার গড়ে অভিনয়ে আসাটাই মুল পরিকল্পনা ছিল। 

জেফারকে সিনেমায় দেখা যাবে? 

সিনেমা অনেক পরের কথা। আগে নিজেকে একজন ভালো অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করি। সেজন্য সময় লাগবে। এখন মুলত অভিনয়ের প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। কাজের মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করছি। একজন অভিনয়শিল্পীর পুরো বিষয়গুলো একটা একটা করে শিখছি। এরপর যদি মনে করি পারব বা কোনো পরিচালক যদি মনে করেন তাহলে হতেই পারে। 

481446787_1177934160356829_755633154378198038_n

পুরনো হেয়ারস্টাইলে আবার দেখা যাবে? 

সেটা যেকোনো সময়েই করতে পারি। যেহেতু নিজের ইচ্ছাতেই করা ছিল। এখন আগের মতো করি না। ওটা অনেক বছর ছিল। এখন আমার কাছে চুল ছেড়ে রাখতেই ভালো লাগে। তবে ওটা আমি ইচ্ছা হলেই করত পারব। 

ভক্ত, সমালোচক— কাকে বেশি ভালোবাসেন? 

যারা আমাকে উৎসাহ দেন তাদের বেশি ভালোবাসি। অনুরাগী, সমালোচক, বন্ধু, পরিবার যেই হোক। তবে হ্যাঁ, সমালোচনা করতেই পারে। কিন্তু দিন শেষে আমি একজন শিল্পী। নিজের শিল্পের পরিচর্যা নিজেই করি। তাছাড়া একজন শিল্পী এতো বেশি কথা শুনলে কিছু করা সম্ভব না। তাই আমি আমার মতো কাজ করি। আগামীতেও কাজ করে যাব। অনেকের পছন্দ হবে, অনেকের হবে না। তবে আমি আমার কাজটা করে যেত চাই।

আরআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর