সাহিত্যের ভান্ডারে কবি কাজী নজরুল ইসলাম এক বিশ্বকোষ। ইসলামি সাহিত্যের পুনর্জাগরণের তিনি অন্যতম অগ্রদূত। ছিলেন মানবতা ও সাম্যের কবি। যা ইসলামের অপরিহার্য অংশ। রাসুল (সা.) ছিলেন মানবতার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। মুসলিম ইতিহাসের আলোক বর্তিকা।
হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে ভালোবেসে কাজী নজরুল ইসলাম রচনা করেছেন শত শত হামদ-নাত। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম 'ত্রিভুবনের প্রিয় মুহাম্মদ এলো রে দুনিয়ায়'। জনপ্রিয় এই গানটি কবির ইসলামি ভাবধারার সংগীত সৃষ্টির অনন্য নিদর্শন। চলুন জেনে নেওয়া যাক এর ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট।
বিজ্ঞাপন
নজরুলই প্রথম বাংলায় গজল-গান রচনা করেছেন: সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী
গজলটি আরবি-ফারসি শব্দের মিশ্রণে লিখিত। যা নজরুলের অনন্য ভাষাশৈলীর দক্ষতা ফুটে উঠেছে। এই নাতে রাসুল (সা.)-এর গুণাবলী, দুনিয়ায় তার আগমনের তাৎপর্য তুলে ধরেছেন। মানবজাতির প্রতি এই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানবের ভালোবাসার কথা তুলে ধরেছেন কবি।
এটি রাগপ্রধান সংগীতের ধারায় রচিত। ইতিহাস থেকে জানা যায় জাতীয় কবি যখন এই গজলগুলো সুর দিতেন তখন হারমোনিয়াম ব্যবহার করতেন। এটিও তার ব্যতিক্রম নয়।
বিজ্ঞাপন
অবশেষে জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেলেন কাজী নজরুল
'ত্রিভুবনের প্রিয় মুহাম্মদ' গজলটির সুর নজরুল কোথায় পেয়েছিলেন বা কার কাছ থেকে শিখেছিলেন তা নিয়ে কোনো সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় না। ধারণা করা হয়, ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূচনাকালে জার্মানি বাহিনীর বিরুদ্ধে ইরাকে প্রশিক্ষণে পাঠানো বেঙ্গল রেজিমেন্ট এর সৈনিকদের কাছ থেকেই 'কাটিবিম' এর সুরটি পেয়েছিলেন নজরুল। আর সেই সুরেই রচনা করেছিলেন এ নাতটি।
'কাটিবিম' সুর কি? নজরুল গবেষক আসাদুল হক বলেন, এটি সিরিয়ার হাজার বছরের পুরনো সুর। ‘বানাত ইস্কান্দারিয়া’ গানে এ সুর ব্যবহার করা হয়েছিল। তুরস্ক সংস্করণে এ সুরকে 'কাটিবিম' বলে ডাকা হয়।
কাজী নজরুল ইসলামের বায়োপিক, কবির স্ত্রীর চরিত্রে স্পর্শিয়া
'ত্রিভুবনের প্রিয় মুহাম্মদ' গজলটি একশ বছর আগে লেখা হলেও তার আবেদন কমনি বিন্দুমাত্র। বিভিন্ন ধর্মীয় সাংস্কৃতি প্রতিযোগিতাও শোনা যায়। বর্তমান সময়ের অনেক ইসলামি সংগীতশিল্পীদের কণ্ঠে মূর্ছনা ছড়াই এ গজল।
ইএইচ/