শনিবার, ২২ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

শরীর খারাপের চেয়ে ‘দাগি’র শুটিং প্রাধান্য পেয়েছে: তমা মির্জা

রাফিউজ্জামান রাফি
প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img
অভিনয় দক্ষতা ও সৌন্দর্যের দ্যুতি, দর্শকপ্রিয়তার তিল পরিমাণ ঘাটতি নেই অভিনেত্রী তমা মির্জার। তবুও প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ে শামিল হন না। কাজ করেন বেছে বেছে। যতবার ক্যামেরায় ধরা দেন ততবারই যেন সোনা ফলে। সদ্য প্রকাশিত ‘আমলনামা’ ওয়েবফিল্মটিই উদাহরণ। একইসময় ঈদে মুক্তিপ্রতীক্ষিত ‘দাগি’ সিনেমার পূর্বাভাসেও আভাস দিচ্ছেন দারুণ কিছুর। সেসব নিয়ে তমা কথা বলেছেন ঢাকা মেইলের সঙ্গে। 

‘আমলনামা’র জন্য প্রস্তুতিটা কেমন ছিল? কোনো চ্যালেঞ্জ বোধ করেছেন?


বিজ্ঞাপন


কাজটি নিয়ে আগে আমরা অনেকবার বসেছি। পুরো স্ক্রিপ্ট বারবার পড়েছি। প্রতিটি চরিত্র কেমন হবে— সবকিছু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমার সাধারণত বাস্তবধর্মী, ব্যতিক্রম ও চ্যালেঞ্জিং কাজ করা হয়। এখানেও চ্যালাঞ্জের বেশকিছু জায়গা ছিল। যেমন ওয়েবফিল্মটিতে আমার চরিত্রটির দুটি বাচ্চা আছে। পর্দায় তাদের সঙ্গে আমার বন্ডিং যেন বাস্তবসম্মত লাগে, মনে হয় বাচ্চা দুটি আমারই— বিষয়টি মাথায় রেখেছি। একই ধরনের অভিনয় দর্শকের বারবার ভালো লাগে না। আলাদাভাবে কীভাবে চরিত্রটি তুলে ধরা যায় সেটিও চ্যালেঞ্জ ছিল। পারভীন চরিত্রটি খুবই ইনোসেন্ট। যে বাইরের এতসব প্রতিবন্ধকতা কখনও মোকাবেলা করেনি। তার ওপর স্বামী এভাবে নিখোঁজ। তার মানসিক বিপর্যস্ততা কোন পর্যায়ের হতে পারে এটা তুলে ধরা, ইমোশন বিল্ডআপ করা চ্যালেঞ্জিং ছিল। পাশাপাশি দর্শককে যুক্ত করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওই জায়গা থেকে এগুলো আমার কাছে চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছে। তবে যেহেতু দর্শক পছন্দ করছেন, রিভিউ ভালো পাচ্ছি সেহেতু মনে হচ্ছে কাজটি বেশ ভালোভাবেই করতে পেরেছি।

tama_20250309_145951501_(1)

অল্প সময়ের ব্যবধানে আপনাকে দুটি ভিন্ন চরিত্রে (‘আমলনামা’ ও ‘দাগি’) পেতে যাচ্ছে দর্শক। কেমন লাগছে?

‘আমলনামা’ ও ‘দাগি’র চরিত্র দুটি একটি অন্যটি থেকে একেবারেই বিপরীত। অভিনয়, লুক অ্যান্ড ফিল— কোনোকিছুতেই মিল নেই। কাজ দুটিতে দর্শক আমাকে ভিন্নভাবে পাবেন। একইরকম ক্যারেক্টার হলে বোরিং লাগত। অভিনয়শিল্পী হিসেবে আমারও কোনো সার্থকতা থাকত না। ওই জায়গা থেকে আমার জন্য এটা আনন্দের। কেননা চরিত্রগুলোতে নতুন কিছু আছে এবং দর্শকের গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে। এজন্য আমি কৃতজ্ঞ। যারা ‘আমলনামা’ দেখেছেন এবং যারা ‘দাগি’ দেখবেন তাদের কাছে। 


বিজ্ঞাপন


কাছাকাছি সময়ে এই দুটি চরিত্রে নিজেকে ক্যামেরার সামনে দাঁড় করিয়েছেন। এক চরিত্র থেকে আরেক চরিত্রে নিজেকে থিতু করা কতটা চ্যালেঞ্জের ছিল? 

সম্ভবত দুই মাসের ব্যবধানে কাজ দুটি করা। তবে এক চরিত্র থেকে আরেকটিতে থিতু হতে খুব একটা কষ্ট হয়েছে বলব না। কেননা পারভীন চরিত্রটির পর দুই মাসের মতো সময় পেয়েছি নতুন চরিত্র ধারণের জন্য। শিহাব শাহীন ভাই আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। তাছাড়া কাজটিতে যুক্ত হওয়ার পর থেকে আমার চিন্তার পুরোটা জুড়ে ‘দাগি’ ছিল। চরিত্রটি কীভাবে জীবন্ত করে তুলব এটাই ছিল একমাত্র ভাবনা। ‘আমলনামা’ থেকে ‘দাগি’র এই জার্নিটা খুব ভালো লেগেছে।

415413103_2032915610396955_673596859189089073_n

এক চরিত্র থেকে আরেক চরিত্রের জার্নিটা ব্যক্তিগত জীবনে কোনো প্রভাব ফেলে কি?

অন্যদের কি হয় জানি না তবে আমার ওপর প্রভাব ফেলে। ‘ফ্রাইডে’র পর ‘সুড়ঙ্গে’র ময়না চরিত্র ধারণ করতে আমার বেশ সময় লেগেছে। কারণ মুনা চরিত্রটিতে ভায়োলেন্স ছিল। যখন পারভীন চরিত্রটি করেছি ওই ইমোশনটা আমাকে আঁকড়ে ধরেছিল বেশ কিছুদিন। সেখান থেকে বেরিয়ে ‘দাগি’তে ঢুকেছি। যখন পুরো চরিত্রে ঢোকা হয়, নিজে ওই চরিত্রটি হয়ে ওঠা হয়, তখন প্রভাব থাকাটা স্বাভাবিক। না থাকা অস্বাভাবিক। কারণ ধ্যান-জ্ঞান, ওঠবস, খাওয়া-দাওয়া— সবসময় ওই চরিত্রে থাকা হয়। ‘ফ্রাইডে’তে আমি মুনা, ‘আমলনামা’য় পারভীন হয়েছিলাম ‘দাগি’তে আরেকটি চরিত্র— ব্যক্তি জীবনে বেশ মিষ্টি একটা প্রভাব ফেলে। আমার ভালো লাগে।

‘দাগি’ নিয়ে দর্শকের উৎসাহ উন্মাদনা ও প্রত্যাশা ভীষণ। চাপ বোধ করছেন কি? 

আলাদাভাবে ‘দাগি’ নিয়ে চাপ অনুভব করছি না। তবে যেকোনো কাজের আগে আমার ভেতরে চাপ কাজ করে। দর্শক আসলে কীভাবে নেবেন এই চাপটা থাকে। কারণ দর্শকের ভালো লাগা মন্দ লাগাকে অনেক বেশি প্রাধান্য দিই। সেজন্য ব্যক্তি ও অভিনেত্রীর তমা মির্জার চাপ লাগে। চাপ কমাতে এভাবে ভাবি— আমি অবশ্যই ভাগ্যবান কারণ ঈদে আমার ছবি আসছে, এতো ভালো ভালো ছবির মধ্যে আমার ছবি আছে এবং এই সুন্দর একটি আনন্দের অংশ হতে যাচ্ছি, আশা করি ভালো কিছুই হবে।

408179807_2020286531659863_5873058996264311465_n

‘দাগি’র শুটিং চলাকালীন কোনো ঘটনা আছে যা আমাদের সঙ্গে ভাগ করা যায়?

‘দাগি’র শুটিং নিয়ে খুব ব্যস্ত ছিলাম। সবকিছু সুন্দর হতে হবে এটা নিয়ে সচেতন ছিলাম। ফলে  আলাদা করে কোনো ঘটনা মনে রাখা হয়নি। তবে ওই সময় আমার শরীর খারাপ ছিল। কিন্তু শরীর খারাপটা প্রাধান্য পায়নি। শুটিং ভালো হতে হবে এটাই ছিল প্রধান বিষয়। 

‘সুড়ঙ্গে’র পর ‘দাগি’তে আফরান নিশোর সঙ্গে। দুটি কাজের অভিজ্ঞতা কতটা আলাদা?

‘সুড়ঙ্গে’র অভিজ্ঞতা তো অসাধারণ। ‘দাগি’র অভিজ্ঞতা আরও ভালো। যেহেতু নিশো ভাইয়ের সঙ্গে এটা আমার দ্বিতীয় সিনেমা সেহেতু আমাদের বোঝাপড়া খুব ভালো ছিল। অভিনেতা ও ব্যক্তি নিশো ভাই— একই ব্যক্তির দুটি রূপ এত সুন্দর যে তার সঙ্গে যারা কাজ করেছেন তাদের জন্য অনেক বেশি ব্লেসিং। আমার জন্যও তাই।

440115029_2109760746045774_1447713733872922468_n

অন্য সিনেমাগুলোর ট্রেলার দেখেছেন? কেমন লেগেছে?

অন্য ছবির টিজারগুলো খুব ভালো লেগেছে। আশা করছি এবার ঈদে খুব ভালো ভালো ছবি আসছে। দর্শকের খুব পছন্দ হবে। মনের দাগ কেটে দেবে। নিজের ছবির বাইরে সব ছবি দেখার চেষ্টা করব। বিশেষ করে ‘জংলি’ ও ‘বরবাদ’।

আরআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর