ঈদে মুক্তিপ্রতীক্ষিত সিনেমাগুলো যখন আড়মোড়া ভাঙব ভাঙব করছিল ঠিক তখন ‘বরবাদে’র টিজার এমন নাড়া দিল যে সব লুজার হয়ে গেল।
এক মিনিট ৪৪ সেকেন্ড। ভায়োলেন্স, রোমান্স, অ্যাকশন এবং শেষে চমক হিসেবে যীশু সেনগুপ্ত। কিন্তু সব বোল্ড করে হাই ভোল্টেজ চমক হিসেবে ধরা দিলেন শাকিব খান।
বিজ্ঞাপন
এন্ট্রি দেখেই ‘সেন্টি’ খাওয়ার দশা। ঠোঁটে আঙুল চেপে যখন বললেন, ‘সাইলেন্স’ তখন আসলেই যেন চারপাশ সরব থাকার লাইসেন্স হারাল।
এরপর রক্তমাখা মুখ দেখে জাস্ট শক্ত হয়ে যেতে হয়। আর চুরুট টানার দৃশ্যটা তো পাগল বানিয়ে দেয়। কিং খানের এন্ট্রি থেকে এন্ডিং দেখে নিন্দুকও বলবে লোকটা খাটতে পারেন। ডায়লগ ডেলিভারি ও অভিনয় দিয়ে প্রতিটি দৃশ্য এভাবেই জীবন্ত করে তুলেছেন।
তবে সবশেষ লুকটা গুজবাম্প। সাদা পোশাক, হাতে মেশিন, পায়ে ট্যাটু, মার খাওয়া মুখমণ্ডল জ্বলছে ভিসুভিয়াসের মতো। দেখে টাকায় লেখা কথাটির সাথে মিলিয়ে বলতে হয় ‘এই শাকিবকে দেখিবামাত্রই দর্শক হলে যাইতে বাধ্য থাকিবে।
বিজ্ঞাপন
এবার বলব অন্যান্য বিষয়ে। টিজারে শুরুতে একটি চরিত্রের বর্ণনা উঠে এসেছে। অ্যাডিক্টেড, রেপিস্টসহ যারমধ্যে সকল বদ গুণ বিদ্যমান। যার কৃতকর্মে তার মা-ও লজ্জিত।
অনেকে ভাবছেন ‘বরবাদে’ এভাবেই দেখা যাবে শাকিবকে। তাই যদি হয় তবে সিনেমাটি ভিন্ন মাত্রা পাবে। কেননা নায়ককে নেতিবাচক চরিত্রে দেখানোটা দুঃসাহসী ব্যাপার। তবে আমার মনে হচ্ছে চরিত্রটি শাকিবের নয়। হয়তো তাকে ভুল বোঝা হচ্ছে কিংবা হতে পারে সে অন্য কেউ।
ওদিকে যীশু সেনগুপ্তকেও টিজারে রেপিস্ট হিসেবে উন্মোচন করা হয়েছে। তবে যীশুর উপস্থাপনায় প্রভাবের অভাব ছিল। জানি না সিনেমায় কীরকম হবে। যদি যীশুকে স্পেস দেওয়া হয় তাহলে খেলা জমে যাবে। কেননা যিশু দুর্দান্ত একজন অভিনেতা। কলকাতার পাশাপাশি দক্ষিণেও কাঁপাচ্ছেন আজকাল। মনে হয় ওই স্পেস যীশু পাবেন। কেননা এমনি এমনি তো আর তাকে নেওয়া হয়নি।
এবার কথা বলব ভায়োলেন্স নিয়ে। টিজারে ভায়োলেন্স যেভাবে দেখানো হয়েছে সিনেমায় যদি এই ধারাবাহিকতাটা থাকে তাহলেই যথেষ্ট।
ইধিকা পালকে নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন মনে করছি না। তার দুই ঝলক উপস্থিতি বিশেষ কিছু মনে হয়নি। আর এসব সিনেমায় নায়িকাদের সেরকম কিছু করারও থাকে না। সাপোর্টিং চরিত্রগুলো নিয়েও একই মত।
এদিকে ‘বরবাদে’র টিজার আসতেই ‘অ্যানিমেলে’র কথা আসছে। অনেকেই বলছেন অনেক কিছুই ‘অ্যানিমেল’ থেকে টোকা হয়েছে। তারপরও মনে করি না এ নিয়ে বলার কিছু আছে। কেন না পরিচালক সিনেমাটি বানানোর সময় নিজেই বলিউড ও দক্ষিণী সিনেমাগুলোর রেফারেন্স দিয়েছিলেন। ওই জায়গা থেকে অনুকরণ না বলে অনুপ্রেরণা বলা যায়।
পরিচালক মেহেদী হাসান হৃদয়ের প্রথম সিনেমা বলে অনেকে দ্বিধায় ছিলেন। টিজার সে দ্বিধার বিদায় ঘটিয়েছে। উল্টো বলা যায় অভিষেকেই অভাবনীয় সাফল্য হাতছানি দিচ্ছে তাকে।
তবে কিছু জায়গায় সম্পাদনায় সমস্যা মনে হয়েছে। কিছু ফুটেজে অসামঞ্জস্যতা স্পষ্ট। পাশাপাশি লাইন ধরে গাড়ি আসার দৃশ্যটা না দিলেও হতো। এরকম দৃশ্য হরহামেশা সিনেমাগুলোতে ব্যবহার করা হয়।
এই কথাগুলো যখন বলছি ঠিক তখনই কানে বাজছে, ‘ওই জিল্লুর, মাল দে। সেইসঙ্গে ‘তুফান’ সিনেমার মতো বলতে ইচ্ছা করছে, ‘‘পূর্বের বিধি মোতাবেক ঈদের দিন পুরো দেশকে ‘বরবাদে’র হাতে তুলিয়া দেওয়া হইবে। সে যা চাইবে পাইবে যা করিতে চাইবে করিবে তাকে বাধা দেওয়ার এখতিয়ার কেউ রাখিতে পারিবে না।’’