একটা সময় বোকাবাক্স খুললেই মিষ্টি হাসি হেসে হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো মুগ্ধতা ছড়াতেন সুমাইয়া শিমু। সাবলীল অভিনয়ে ছড়াতেন দ্যুতি। ‘সুহাসিনী ও ‘সু-অভিনেত্রী’ বিশেষণ দুটির মালকিনও বনেছিলেন অল্প সময়ে।
আজকাল আগের মতো পর্দায় ধরা দেন না অভিনেত্রী। এতে আক্ষেপ জমেছিল অনুরাগীদের মনে। এবার তা ঘোচার পালা। কেননা ওয়েব সিরিজ ‘২ষ’ এর শেষ পর্ব ‘বেসুরা’র মাধ্যমে ফেরার গল্প লিখছেন শিমু। এরইমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে নুহাশ হুমায়ূন পরিচালিত এ কনটেন্টের পূর্বাভাস।
বিজ্ঞাপন
কয়েক ঝলকের উপস্থিতিতে দর্শকের পলক কেড়েছেন শিমু। সামাজিক মাধ্যমেও চলছে ইতিবাচক আলোচনা। বিষয়টি ভালো লাগার পাশাপাশি সম্মানের বলে মনে করছেন অভিনেত্রী।

ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, ‘এখনও কাজটি প্রকাশ পায়নি। সবে পূর্বাভাস এসেছে। সেটি যদি নেটিজেনদের মাঝে সাড়া ফেলে তবে তা অবশ্যই আমার কাছে ভালোলাগার ও সম্মানের।’
শিমু যখন নিয়মিত ছিলেন সেসময় অনুরাগীদের কাছাকাছি থাকা ছিল দুষ্কর। আজকের চিত্রটি ভিন্ন। প্রিয় তারকাকে নিয়ে লালিত মন্তব্য চাইলেই দর্শক ছুড়ে দিতে পারছেন। বিষয়টি খেয়াল করেছেন অভিনেত্রী।
বিজ্ঞাপন
তার কথায়, ‘যখন নিয়মিত কাজ করতাম তখন সামাজিক মাধ্যমের প্রসার এখনকার মতো ঘটেনি। ফলে দর্শকের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকা সম্ভব ছিল না। কেউ কেউ ফোন করতেন। কিন্তু আমার ফোন নাম্বার তো আর সবার কাছে ছিল না। তাই সে সুযোগটি কম ছিল। কোথাও গেলে হয়তো দেখা হতো। এর বাইরে পত্রিকার মাধ্যমে ভক্তরা আমাদের সম্পর্কে জানতে পারতেন। এখন সামাজিক মাধ্যমের কারণে আমরা তাদের অনেক কাছাকাছি থাকছি। চাইলেই অনুরাগীরা আমাদের ছবিতে বা পোস্টে মন্তব্য করতে পারছেন। যেটা আমাদের জন্য ইতিবাচক। কেননা সহজেই তাদের মতামত জানতে পারছি। ওই জায়গা থেকে বলতে চাই শুধু প্রশংসা না, গঠনমূলক সমালোচনা করুক সবাই।’

এই প্রথম ওটিটি মাধ্যমে নিজেকে মেলে ধরছেন এ তারকা। স্বাভাবিকভাবেই জানতে চাওয়া সে অভিজ্ঞতা সম্পর্কে। অভিনেত্রী বললেন, ‘ওটিটি এখন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। আন্তর্জাতিক মানের কাজ হয়। নিজেরও আগ্রহ রয়েছে। এই মাধ্যমের কিছু বিশেষত্ব রয়েছে। এখানে সব খাতের জন্য আলাদা দেখভালের ব্যবস্থা থাকে। গোছানো সবকিছু। সিনেমায় যেমন থাকে। আমি একজন অভিনয়শিল্পী। আমার কাজ অভিনয়। এর বাইরে অন্য কিছু নিয়ে আমাকে মাথা ঘামাতে হয়নি।’
তিনি যোগ করেন, ‘টিভি নাটকে কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। একজন নির্মাতা চাইলেই মন খুলে কাজ করতে পারতেন না। বাজেটের স্বল্পতা মাথায় রাখতে হতো। ফলে অনেক কিছুই সম্ভব হতো না। ওটিটিতে সে সীমাবদ্ধতা নেই বলে মনে হয়েছে আমার। ফলে মন খুলে কাজ করতে পারছেন নির্মাতারা। যারা সীমাবদ্ধতার কারণে অন্য মাধ্যমে মনের মতো কাজ করতে পারেননি এখানে তারাও পারছেন। অভিনয়শিল্পীরাও ভিন্নধর্মী কাজে নিজেকে যুক্ত করতে পারছেন।’

‘বেসুরা’তে সুমাইয়া শিমুর উপস্থিতি-ই বলে দেয় ব্যতিক্রমী চরিত্রে ধরা দিচ্ছেন অভিনেত্রী। বিষয়টি তুলতেই এ তারকা মনে করিয়ে দেন চরিত্রভিত্তিক কাজে তিনি নতুন নন। বলেন, ‘যখন নিয়মিত কাজ করতাম তখন যে শুধু গ্ল্যামার ভিত্তিক কাজ করতাম তা কিন্তু না। চরিত্রভিত্তিক কাজও করেছি। ভিন্নধর্মী কাজে প্রশান্তি পাই। ধরুন আমি চিকিৎসক না কিন্তু যখন চিকিৎসকের চরিত্রে অভিনয় করি তখন আমার ভেতরে অন্য একজন বাস করে যে আমি না। এটা এক ধরণের ভালো লাগা তৈরি করে।’
তবে ‘বেসুরা’র সেটে হাজিরের আগে কিছুটা চিন্তিত ছিলেন সুহাসিনী। তার ভাষ্য, ‘আমি কিছুটা চিন্তিত ছিলাম। কেননা এখন যারা কাজ করছেন তাদের সঙ্গে কাজ হয়নি। খাপ খাইয়ে নিতে পারব কি না ভাবছিলাম। কিন্তু সবাই আমাকে এত দারুণভাবে গ্রহণ এবং সম্মান করেছেন সেটা আশাতীত ছিল।’

এবার ‘বেসুরা’কে পাশে রেখে কিছু কথা হয় অভিনেত্রীর সঙ্গে। একসময়ের নিয়মিত অভিনেত্রী আজ পর্দায় অনিয়মিত। সাংসারিক ব্যস্ততাই কি একমাত্র কারণ? অভিনেত্রী জানান, নির্দিষ্ট কোনো কারণে নিজেকে আড়াল করেননি। নানাবিধ ব্যস্ততার ফলে আগের মতো দেখা যায় না তাকে। তবে ‘বেসুরা’র মাধ্যমে ফেরাকে প্রত্যাবর্তন বলছেন না। তিনি মনে করেন আগের মতো লাইট ক্যামেরা অ্যাকশনের সঙ্গে ওঠবস না থাকলেও মাঝে মাঝে দেখা দেন। তাই অভিনেত্রীর ভাষ্য, ‘প্রত্যাবর্তন বলবেন না।’
২০২৩ সালের ৮ নভেম্বর যমজ সন্তানের মা হন শিমু। সন্তানদের কুশলাদি জানতে চাইলে এ তারকা বললেন, ‘হ্যাঁ,ওরা খুব ভালো আছে। দোয়া করবেন যেন ভালো থাকে সুস্থ থাকে।’

