মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

ভালো গল্প ছাড়া অভিনয় করব না: ইমন

রাফিউজ্জামান রাফি
প্রকাশিত: ০৩ জুন ২০২২, ০৫:১৩ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img
খানিকটা বিরতির পর বড়পর্দায় ফিরেছেন মামনুন ইমন। তবে নায়ক হিসেবে নয়, অভিনেতা হিসেবে হাজির হয়েছেন তিনি। এই ধারা অব্যাহত রাখতে চান ভবিষ্যতেও। তার উপলব্ধি হয়েছে, অভিনয়টা দায়িত্বশীল কাজ। তিনি জানেন, পাড়ার হাবলুকে হলদে প্যান্ট, খয়েরি জামা আর ডার্ক গ্লাস পরালে নায়ক মনে হবে। তাই গ্ল্যামার বা স্টারডমের লোভ সরিয়ে রাখতে চান। অভিনয়ের মাটি, সেই পরিবেশের গন্ধ তার সামনে এগিয়ে যাওয়ার মূলমন্ত্র। এসব নিয়ে ঢাকা মেইলের সঙ্গে কথা বলেছেন ইমন। 

আজ ‘আগামীকাল’ সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে। কয়েক বছর পর বড়পর্দায় দেখা মিলল আপনার। কেমন লাগছে?

ভালো লাগাটা স্বাভাবিক। যারা এতদিন ধরে আমার সিনেমার অপেক্ষায় ছিলেন ‘আগামীকাল’ মুক্তির মাধ্যমে তাদের অপেক্ষার পালা শেষ হলো। আমি চেষ্টা করেছি নিজের সেরাটা দিয়ে অভিনয় করতে। নায়ক ইমেজ থেকে বেরিয়ে অভিনেতা হিসেবে নিজেকে হাজির করেছি। এখন থেকে ‘অভিনেতা ইমন’কে পাবেন দর্শক।

ক্যারিয়ারের এতগুলো বছর পর অভিনেতা হওয়ার দিকে জোর দিচ্ছেন। এই উপলব্ধির কারণ কী?

আমি আসলে বোঝাতে চেয়েছি, নায়কের চেয়ে আগে ভালো অভিনেতা হতে চাই। অভিনয় জানা নায়ক হতে চাই। আমির খানকে দেখুন, তিনিও নায়ক অথচ কী দারুণ অভিনেতা! আমি সেটাই বোঝাতে চেয়েছি। আসলে দাগ কাটার মতো কিছু চরিত্র চাই। ধরুন, আমি নায়ক কিন্তু ভালো গল্প পেলাম না। এলাম আর গেলাম। দুইটা গান আর কয়েকটা দৃশ্যে অভিনয় করলাম। দর্শকের মনে জায়গা পেলাম না। তাহলে লাভটা কী হলো? সেজন্যই এখন থেকে ভালো গল্পের সিনেমা ছাড়া কাজ করব না বলে চিন্তা-ভাবনা করছি। আমি তো অনেকগুলো সিনেমায় কাজ করেছি। মানুষ আমাকে রোমান্টিক নায়ক হিসেবে পেয়েছেন। কিন্তু কিছু অভিনেতা আছেন যারা অল্প কাজ করেন। যে কয়েকটা করেন তার সবগুলোই জনপ্রিয়তা পায়। এটা হলো গল্প ও অভিনয়ের গুণ। আমি আসলে সেটাই বলতে চেয়েছি। এটাই হওয়া উচিত। এটা ছাড়া আমি তো দর্শকের মনে জায়গা করে নিতে পারব না।

agamikal


বিজ্ঞাপন


দর্শক সিনেমা হলে ফেরা শুরু করেছেন। ঈদের সিনেমাগুলো বেশ ভালো চলেছে। ‘আগামীকাল’ সিনেমাটি সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে বলে মনে করেন?

আসলে ঈদ তো একটা বড় উৎসব। ওই সময় মানুষের মধ্যে সিনেমা দেখার একটা ঝোঁক থাকে। তা ছাড়া এবার ঈদে করোনার কারণে টানা দুই বছর বন্ধ থাকার পর সিনেমা হল খুলেছে। আপনি খেয়াল করে দেখবেন, ঈদে যাদের ছবিগুলো মুক্তি পেয়েছে শুধু তারা না; আমরা সবাই সেই সিনেমাগুলোর প্রচারণা করেছি। কারণ আমরা চাচ্ছিলাম দর্শক হলে আসুক। তাদের হলমুখী হওয়ার অভ্যাসটা ফিরে আসুক। দর্শক কিন্তু ঈদের সিনেমাগুলো দেখতে হলে এসেছেন। ব্যবসা-বাণিজ্য তো পরের কথা। এখনও সিনেমাগুলো চলছে। এর মধ্যে ‘পাপ পুণ্য’ সিনেমাটি নয়টি হলে মুক্তি পেয়েছে। সিনেমাটি মানুষ দেখছেন। এবার আমাদের সিনেমাটি মুক্তি পেল। আমি তো চাই, আজ বন্ধের দিন সবাই হলে গিয়ে সিনেমাটি উপভোগ করুন। তবে একটা কথা হচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে মানুষ হলবিমুখ ছিলেন। আমার মনে হয় হলমুখী হওয়ার সংস্কৃতিটা ফিরে আসতে একটু সময় লাগবে।

সিনেমাটি প্রচারণায় শুরু থেকেই আপনি বেশ সরব রয়েছেন। তবে এক্ষেত্রে আপনার সহশিল্পী মমর নীরবতা খেয়াল করার মতো। কী বলবেন এটা নিয়ে?

আমার সিনেমা মুক্তির সময় নির্মাতা ও প্রযোজক আমাকে প্রচারণায় থাকতে বলেন। তখন ব্যক্তিগত কাজও থাকতে পারে। সেই অযুহাত দিয়ে আমি কিন্তু প্রচারণা থেকে বিরত থাকতে পারি। তা না করে আমি নিজ দায়িত্বে সিনেমার প্রচারণায় থাকি। কেননা, শুরু থেকেই সিনেমা আমার ভালোবাসার জায়গা। এর জন্য আমি অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। তবে মম কেন নীরব রয়েছেন—সেটা বলতে পারব না। মানুষের ব্যক্তিগত সমস্যা থাকতে পারে। তার ক্ষেত্রেও তেমনটা হতে পারে। আমার মনে হয়, তার ব্যক্তিগত কোনো সমস্যা চলছে। সেকারণেই হয়ত প্রচারণায় পাওয়া যাচ্ছে না।

Emon-Momo

যখন মিডিয়ায় আসেন তখন আপনাকে নিয়ে সবাই খুব আশাবাদী হয়েছিলেন। ক্যারিয়ারের এই সময়ে তাদের আশা পূরণ করতে পেরেছেন?

দেখুন, আমি কিন্তু অভিনয় শিখে আসিনি। এসেই একটি বিজ্ঞাপনে কাজ করেছিলাম। বিজ্ঞাপনটি খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। সেটা দেখেই আমাকে অনেকে তাদের বড় বড় কাজের সঙ্গে যুক্ত করেন। দর্শকও আশাবাদী হন। কিন্তু একজন মঞ্চাভিনেতা ১৫ বছর মঞ্চে কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। এরপর পর্দায় এসে ব্রেক পেলে তার সফলতা আসে। কিন্তু সেটা তার একদিনের না, ১৫ বছরের সাধনার ফসল। আমাদের বেলায় তা না। আমি মডেলিংয়ের মাধ্যমে এসেছি। আমার মডেলিং দেখেই সবাই আশাবাদী হয়েছিলেন। সেই জায়গা আমি পূর্ণ করেছি।

Emon

অভিনয়টা দেখে দেখে শিখেছি। আগে অনেক কিছু বুঝতাম না। এখন অনেক কিছু বুঝি। কাজ সম্পর্কে ধারণা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ভালো কাজও করেছি। ‘পাসওয়ার্ড’ সিনেমায় আমার চরিত্রটিতে বেশ ব্যতিক্রম ছিল। সামনে আমার বেশকিছু সিনেমা আসছে। ‘কাগজ: দ্য পেপার’, ‘বীরত্ব’ ও ‘কানামাছি’ চলচ্চিত্রগুলো নিয়ে আমি ‘আগামীকালে’র চেয়ে আশাবাদী। সিনেমাগুলোতে অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ ছিল। ভবিষ্যতেও এমন সিনেমায় কাজ করার ইচ্ছা আছে। আশা করি সবার আশার বাস্তবায়ন ঘটবে।

ক্যারিয়ার নিয়ে কী ভাবছেন?

অভিনয়টা ঠিকমতো করতে চাই। চরিত্র নির্ভর কাজ করতে চাই। একজন অভিনেতাকে সামনে আনে তার কাজ। আমিও এখন কাজ নিয়েই ভাবতে চাই। কাজের বাইরে কোনো চিন্তাই আসে না আমার।

/আরআর/আরএসও/

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর