জীবনের লেনাদেনা চুকিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ভারতের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে দেশটির সংগীতাঙ্গনে। স্তব্ধ হয়ে গেছেন এই গায়কের সহকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সেই হারানোর বেদনা ছুঁয়ে গেছে এ দেশের সংগীতাঙ্গনেও। কেকের এই চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না কণ্ঠশিল্পী দিলশাদ নাহার কনা।
প্রিয় গায়কের মৃত্যুশোক ঢাকা মেইলের সঙ্গে ভাগ করে কনা বলেন, ‘কেকে আমাদের প্রজন্মের সবচেয়ে প্রিয় কণ্ঠশিল্পীদের একজন। আমরা যখন স্কুল-কলেজে পড়তাম, তখন থেকেই তার গান শুনতাম। তার এভাবে চলে যাওয়ার সংবাদ শোনার পর থেকেই খুব খারাপ লাগছে। রাতে ঘুমাতে পারিনি আমি।’
বিজ্ঞাপন

কয়েকদিন আগেও সহকর্মীদের সঙ্গে কেকের কথা আলোচনা করেছেন কনা। এমনটা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তিন-চারদিন আগে আমি আর ইমরান একটা অনুষ্ঠানের রিহার্সেলে ছিলাম। সেদিনও আমরা তার কথা বলছিলাম। মৃত্যুর আগে যে গানটি গেয়েছেন সেই গানটি নিয়ে আলোচনা করছিলাম। কী অদ্ভুত লিরিক! কী দারুণ গায়কী! এর মধ্যেই তার মৃত্যুর খবর শুনতে হবে ভাবতে পারিনি।’
একজন কণ্ঠশিল্পী কখনও তার শ্রোতাদের বঞ্চিত করতে চান না। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সেটাই প্রমাণ করে গেছেন কেকে। এমনটা উল্লেখ করে জনপ্রিয় এই গায়িকা বলেন, ‘আপনি কেকের কালকের শোয়ের ভিডিও দেখলেই বুঝতে পারবেন, তিনি অসুস্থ বোধ করছিলেন। তার চোখে-মুখে ক্লান্তি ফুটে উঠেছিল। নিশ্চয়ই খারাপ লাগছিল। তারপরও গান বন্ধ করেননি। কারণ একজন কণ্ঠশিল্পী তার শ্রোতাদের কখনও ঠকাতে চান না। তাই মঞ্চে উঠে ভালো লাগা খারাপ লাগা ভুলে গান গাইতে থাকেন তারা।’

বিজ্ঞাপন
এ সময় কনসার্টের আয়োজকদের হেঁয়ালিপনার কথা তুলে কনা বলেন, ‘শোয়ের আয়োজকরা অনেক সময় শিল্পীদের সুবিধার কথা ভুলে যান। অসংখ্য মানুষের সমাগমে দাঁড়িয়ে গান গাওয়ার সময় বিশুদ্ধ বাতাসের ঘাটতি থাকে। ফলে আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সমস্যা হয়। কেকের ক্ষেত্রেও সেটা হয়েছিল। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে শিল্পীকে মঞ্চটা ফাঁকা করে দিতে হয়। বিশেষ করে গরমকালে আয়োজকদের এই বিষয়গুলো মাথায় রাখা উচিত। কিন্তু তারা অনেকটা অমনোযোগী থাকেন এ ব্যাপারে। দেখা যায় যে, তাদের লোকজনই মঞ্চে ভিড় করে থাকেন।’
কনা মনে করেন, কেকের মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল উপমহাদেশের সংগীতাঙ্গনে। তিনি আশা রাখেন, আয়োজকরা ভবিষ্যতে শিল্পীদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো মাথায় রাখলে এমন ক্ষতির সম্মুখীন আর হতে হবে না। আর কারও জীবন হুমকির মুখে পতিত হবে না।
আরআর/আরএসও

