রূপ ও গুণের দ্যুতি ছড়িয়ে দর্শকদের যারা প্রতিনিয়ত সম্মোহিত করছেন তাদের মধ্যে অন্যতম ফারিন খান। জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী অভিনয়ের সব মাধ্যমেই সুরভি ছড়াচ্ছেন। ফলে ব্যস্ততা তার আকাশ সমান। ফারিনের সঙ্গে কথোপকথন জমেছিল ঢাকা মেইলের। শুনিয়েছেন তার ব্যস্ততা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার উপাখ্যান।
ব্যস্ততা কী নিয়ে…
বিজ্ঞাপন
কয়েকটি টিভিসি নিয়ে পরিকল্পনা করলাম। ফটোশুট সারলাম। কবিতা আবৃত্তি করলাম।
আপনি দেখছি সর্বগুণে গুণান্বিতা…
ঠিক তা না (হাসি)। তবে হওয়ার চেষ্টা করছি।
বিজ্ঞাপন
আর কী করছেন?
সামনে একসঙ্গে চার নাটকের শুটিং। ১ থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত এ নিয়ে চট্টগ্রামে ব্যস্ত থাকব। সহশিল্পী ইমতিয়াজ বর্ষণ ও শাশ্বত দত্ত। নাটকের পর টিভিসির শুটিং, ওভিসির কাজ আছে। এরপর ভালোবাসা দিবসের প্রজেক্টগুলো শুরু হবে। সামনে ঈদের কাজগুলোও থাকবে। অনেক ব্যস্ততা।
ব্যস্ততার তরী বাইতে গিয়ে বিরক্ত হন না?
কাজ নিয়ে বিরক্ত হই না। কাজগুলো যেরকম হওয়া উচিত অনেক সময় সেরকম হচ্ছে না মনে হয়। তখন বিরক্ত লাগে।
সেসময় মনে হয় না সব ছেড়েছুড়ে কারও হাত ধরে কোথাও গিয়ে নিরিবিলি বসে থাকতে?
কারও হাত ধরার চেয়ে নিজের হাত ধরে বসে থাকা ভালো। নিজের হাত ধরে যদি একবার দাঁড়ানো যায় তাহলে পথচলাটা দারুণ হয়। কেননা কারও হাত ধরলে ছুটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দুইদিন পর বেদনার সাথে পথচলা শুরু হবে। তখন আবার নতুন হাত খুঁজতে হবে। কেননা এটা অভ্যাস। প্রেমে পড়ার বা হাত ধরার অভ্যাস করতে চাই না।
সামাজিক মাধ্যমে নিয়মিত ছবি, ভিডিও দিচ্ছেন। মন্তব্য পড়ে মনে হয় অনুসারীরাও মুখিয়ে থাকেন আপনাকে দেখতে।
অনুসারীরা-ই আমার সব। তাদের হাত ধরে-ই বেঁচে আছি। দর্শক যেদিন আমার হাত ছেড়ে দেবেন সেদিন বিলীন হয়ে যাব। যতদিন তারা হাত ধরে রাখবেন ততদিন সুন্দর সুন্দর ছবি, ভিডিও দিতে পারব। ভালো ভালো কাজ করতে পারব। তাদের হাত ধরেই থাকতে চাই। কেননা তাদের ভালোবাসা আমাকে অনুপ্রাণিত করে।
এই ভালোবাসা নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?
ভালোবাসা আসলে আশীর্বাদ। যে ভালোবাসাই হোক। বাবা-মা, ভাই-বোন, বন্ধু যে কারও। এটা জোর করে পাওয়া যায় না। চেষ্টা করেও মেলে না। লোকে বলে ভালোবাসলে চেষ্টা করতে হয়। এটা ভুল। কেননা যখন অপর প্রান্তের মানুষটি বুঝবে যে আপনি ভালোবাসা পেতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন তখন পুরো বিষয়টা-ই নড়বড়ে হয়ে যায়। ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক বড় বড় আর্টিস্ট আছেন যারা ভক্তদের ভালোবাসা পেয়েছেন। এটা একেবারেই স্রষ্টা থেকে আসা। তিনি তাদেরই ভালোবাসা দেন যারা তার প্রিয়।
কখনও কাস্টিং কাউচের শিকার হয়েছেন?
আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে মূলত যারা কাজ করেন তারা কাজকেই মূল্যায়ন করেন। এর বাইরে কিছু নিয়ে ভাবেন না। আমি ভাগ্যবান যে এরকম মানুষের সঙ্গেই কাজ হয় আমার। সেকারণে এ ধরনের আচরণ পাইনি কখনও। এরকম আচরণ যাদের থেকে আসে তারা ইন্ডাস্ট্রির কেউ নন। অপরিচিত মানুষজন। নায়িকাদের নিয়ে এক ধরনের ফ্যাসিনেশন থাকে, স্বপ্ন থাকে। হয়তো ওই জায়গা থেকে অনেকে বিভিন্নভাবে আমাদের পোক করার চেষ্টা করে। তবে এখানে জোর করে কিছু হয় না। সম্পূর্ণ নিজের ওপর নির্ভর করে। যদি কখনও শোনেন কারও সাথে কিছু আছে তাহলে বুঝবেন এটা প্রেম। একদমই প্রেম। দুজনের আগ্রহ না থাকলে কখনও কিছু হয় না। এটা শুধু মিডিয়ায় না, সবক্ষেত্রেই।
ওটিটিতে থিতু হয়ে অনেকে নাটক থেকে সরে যাচ্ছেন। আপনার ক্ষেত্রেও কি এরকম হওয়ার সম্ভাবনা আছে?
সিনিয়রদের অনেকে এরকম করছেন। তাদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আলাদা। কারণ তারা অনেক বছর কাজ করছেন। একটা জায়গা তৈরি হয়েছে। চাইলেই নিজের মতো করতে পারেন। আমরা ছোটরা চাইলেই একটি মাধ্যম বাদ দিয়ে অন্য মাধ্যমে ঢুকতে পারি না। আর আমি মনে করি একটা সেক্টরে ফিক্সড হওয়ার মতো আর্টিস্ট এখনও হইনি।
নতুন বছর কীভাবে সাজাতে চান?
ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছি ২০১৭ সালে কিন্তু নিয়মিত কাজ করছি এক বছর ধরে। স্বপ্নটা অনেক বড়। আসছে বছর বড় বড় প্রোডাকশনের সঙ্গে কাজের ইচ্ছা আছে। ভালো গল্প, গুণী নির্মাতাদের সঙ্গে কাজের ইচ্ছা আছে। নিজের অভিনয়ে যেন উন্নতি করতে পারি সে চেষ্টা থাকবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে কাজের বাইরে প্রেম ভালোবাসা কোনোকিছু নিয়ে ভাবতে চাই না।
আরআর