মাত্র ৫৪ বছর বয়সে থেমে গেছে ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকের জীবন ঘড়ি। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় কলকাতার একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। প্রিয় শিল্পীর মৃত্যুতে ভারতসহ পুরো বিশ্বের অনুরাগীদের মনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
জানা যায়, কলকাতায় একটি লাইভ কনসার্টে অংশ নিয়েছিলেন কেকে। সন্ধ্যা ৬.৪৫ নাগাদ নজরুল মঞ্চে ওঠেন। ভক্তকুলকে গানের জোয়ারে ভাসিয়ে তোলেন। অনুষ্ঠান চলাকালীন অস্বস্তিবোধ করলেও কেকে থামেননি। অনুষ্ঠান শেষে হোটেলে ফেরার পর মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাকে দ্রুত একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত সাড়ে ৯টায় চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিজ্ঞাপন
কেকের মৃত্যুর খবর ফেসবুকে প্রথম জানান সংগীত শিল্পী অমিত কুমারের স্ত্রী রিমা গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে তার। আকস্মিক মৃত্যুর কারণ জানতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, শিল্পীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শোকের ছায়া নেমে আসে অনুরাগী মহলে। কনসার্টে উপস্থিত দর্শকরা জানান, অনুষ্ঠানের চলাকালীন অস্বস্তিবোধ করছিলেন কেকে। বারবার তাকে ঘামও মুছতে দেখা যায়। তবুও তিনি থামেননি। সুরের মূর্ছনায় মুগ্ধতা ছড়িয়ে গেছেন।
কেকের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক টুইটবার্তায় তিনি শোক প্রকাশ করে লেখেন, ‘সঙ্গীতশিল্পী কেকের অকালপ্রয়াণে আমি গভীর ভাবে শোকাহত। তার গান প্রতিটি বয়সের মানুষকে কার্যত একটা সুতোয় বেঁধে রেখেছিল।’
বিজ্ঞাপন
১৯৬৮ সালের ২৩ আগস্ট দিল্লির এক মালায়ালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এই সংগীত শিল্পী। বলিউডে ক্যারিয়ার শুরুর আগেই প্রায় সাড়ে তিন হাজার বিজ্ঞাপনে জিঙ্গেল গেয়েছিলেন তিনি।
নব্বইয়ের দশকে বলিউড মিউজিকে কেকের উত্থানের শুরু হয়। ১৯৯৪ সালে প্লেব্যাক গায়ক হিসেবে নাম লেখান। ইন্ডিয়ান পপ মিউজিকে নতুন এক দিশা দেখিয়েছিলেন কেকে। নব্বইয়ের দশক থেকে এখন পর্যন্ত বলিউড মিউজিক লাভার থেকে শুরু করে পুরো বিশ্বের গানপ্রেমীদের অসংখ্য মন মাতানো গান উপহার দিয়েছেন এই শিল্পী।
বাংলা, হিন্দি, তামিল, কণ্ণড়, মালয়ালাম, মারাঠি, অসমীয়া ভাষায় গান গেয়েছেন কেকে। তার জনপ্রিয় গানের তালিকায় রয়েছে ‘আঁখো মে তেরি’, ‘যারা সা’, ‘খুদা জানে’, ‘তুহি মেরি শব হ্যায়’,'দিল ইবাদত', ‘ক্যায়া মুছে প্যায়ার হ্যায়’, ‘হালে দিল’, ‘তুম মিলে’ ইত্যাদি। ‘বাচনা ইয়ে হাসিনো’ ছবির ‘খুদা জানে’ গানের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কারও পান কেকে।
এনএম/এএস

