কমপক্ষে সত্তর বছর আগের ঘটনা। সেসময় চার্চগেট স্টেশন থেকে মেরিন ড্রাইভ যাওয়ার রাস্তায় প্রেম করতেন এক জোড়া তরুণ-তরুণী। ছেলেটি উত্তর কলকাতার বনেদি বাঙালি পরিবারের। অন্যদিকে মেয়েটি মালয়ালি। পেশায় কলেজ শিক্ষিকা।
ইংরেজি,ফরাসি ভাষায় দক্ষ কলেজ শিক্ষিকা নিজের উজ্জ্বল ক্যারিয়ার বিসর্জন দিয়েছিলেন। ওদিকে ছেলেটিও দ্বিধায়। বাড়ির লোক কিভাবে মানবেন,তাদের বাড়ির ছেলে এক মালয়ালি শিক্ষিকার প্রেমে পড়েছেন৷
বিজ্ঞাপন

এদিকে মা কিছুটা অনুভব করেছিলেনছেলের মনের কথা। সাহস দিয়ে তিনি বলেছিলেন 'তুই বিয়ে করবি৷ তোর বাবা কাকারা তো করবে না৷ তুই যাকে বিয়ে করে সুখী হবি তাকে কর'৷ বাড়ির সবাই কে বুঝিয়ে রাজি করান মা-ই৷ এভাবেই গাঁটছড়া বাঁধেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী মান্না দে ও জায়া সুলোচনা
১৯৫৩সালের ১৮ডিসেম্বর চার হাত এক হয় মান্না-সুলোচনার। বিয়ে ভাগ্য ভালো ছিল মান্না দের। কেননা সে বছর মান্না দে অসংখ্য হিট গান উপহার দেন তিনি৷ বিশেষত 'দো বিঘা জমিনের' 'ধরতি কহে পুকার কি'৷ আরও আশ্চর্য বিয়ের বছর তার বাংলা গানে প্রথম পা রাখা৷ মা বলেছিলেন 'তুই কি আর বাংলা গান গাইবি না'?

বিজ্ঞাপন
রবি ঠাকুরের গান মান্না-সুলোচনার জীবন মিলিয়ে দিয়েছিল। মুম্বাইয়ে রবীন্দ্রজন্মবার্ষিকী পালনের সময় সেখানকার বেঙ্গলি ক্লাবে গানবাজনার অনুষ্ঠান হতো৷ সেখানে সুলোচনা কুমারনকে রবীন্দ্রসংগীত তুলতে সাহায্য করেছিলেন মান্না দে৷ 'হিমের রাতে ওই গগনের দীপগুলিরে'র মতো তিন-চারটি রবীন্দ্রসংগীতের কথা হলে তিনি আলোড়িত হতেন৷
স্বামী-স্ত্রী ডুয়েট গেয়েছেন 'হিমের রাতে ওই গগনের দীপগুলিরে'। হয়তো সে কারণেই মান্না দে'র ধারে কাছে আসতে পারে না অন্য অনেক গান! কারণ সুলোচনা ছিলেন মান্না দের জীবনের অদৃশ্য বীণা
গত ২৪ অক্টোবর ছিল উপমহাদেশের বিখ্যাত এ গায়কের চলে যাওয়ার দিন। ২০১৩ সালের এই দিনে মারা যান তিনি।

