সাবেক তথ্যপ্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত ও সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদের নেতৃত্বে ‘আলো আসবেই’ নামক একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কিছু স্ক্রিনশট গতকাল মঙ্গলবার সকালে সোশ্যালে ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায়, অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস, সোহানা সাবাকে যাদের অবস্থান ছিল ছাত্রদের আন্দোলনের বিপক্ষে!
তারা মত দেন যেভাবেই হোক আন্দোলন থামাতে হবে। আরেকজন শিল্পী পরামর্শ দেন ছাত্রদের ওপর গরম পানি ঢেলে দেওয়ার জন্য। এদিকে অভিনেত্রী মনিরা মিঠুর দাবি আলো আসবেই গ্রুপের মতো একটি গ্রুপ আছে অ্যাক্টর ইকুইটির।
বিজ্ঞাপন
গতকাল বুধবার বিষয়টি নিয়ে একটি দীর্ঘ পোস্ট দেন। সেখানে অভিযুক্ত করেন অভিনেত্রী নাজনীন হাসান চুমকিকে। নিজের পোস্টের একাংশে মিঠু লেখেন, ‘প্রায় ৮ মাস আগে বিঞ্জের একটি ধারাবাহিক নাটকের শুটিংয়ের সময় ড. এজাজ ভাই, আমি, শামিম আহমেদ, আমরা— অনেকেই একটা খুবই স্বাভাবিক হাস্যোজ্বল ভিডিও করি এবং সেটা আমার পেজে আপলোড দিই। সেই ভিডিওর ভিউ হয় মিলিয়নের ওপরে । কারণ এজাজ ভাই আর আমাকে দর্শক কানেক্টেড করতে পারে হুমায়ুন আহমেদ স্যারের নাটকের সাথে।’
এরপর লেখেন, ‘আমাদের শিল্পী সংঘ থেকে আমাকে অনুরোধ করা হয় সেই ভিডিওটি ডিলিট করে ফেলার জন্য। আমি আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কেন? একজন বললেন যে শিল্পী সংঘের সেক্রেটারি নাজনীন হাসান চুমকির নাকি সারারাত ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল যে, কীভাবে আমি এই অশ্লীল ভিডিও আপলোড দিলাম। কারণ ভিডিওর এক জায়গায় ড. এজাজ ভাই কমলা খাচ্ছিলেন আর ‘বিচি’ শব্দটা উচ্চারণ করেছিলেন।’
আরও লেখেন, ‘অ্যাক্টর ইকুইটির সেই গোপন গ্রুপের একজন সদস্য আমাকে কিছু স্ক্রিন শট পাঠান আমি যেন দ্রুত ভিডিওটি ডিলিট করি। স্ক্রিন শটে দেখি সুজাত শিমুল আমাকে তুমুল গালাগাল করছেন। সারাজীবন মনে থাকবে সুজাত শিমুলের এই লাইনটি— এরা শিল্পী নামের বিষ্ঠা। মানে আমি আর কি । তিনি কবিতার মতো আরও অনেক গালাগাল দিয়েছিলেন আমাকে সেই গোপন গ্রুপে।’
মিঠুর কথায়, ‘আমি অবাক হয়ে দেখলাম যে, শিল্পী সংঘের কোনো সিনিয়র সদস্য সুজাত শিমুলকে বলেন নাই যে, একটি ভিডিওর জন্য মিঠু আপাকে এইভাবে গালাগাল করছো কেন? নাজনীন হাসান চুমকি তো আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারতেন যে, মিঠু আপা ভিডিওটি শ্রুতিমধুর না, মুছে ফেলেন । কারণ তার সাথে আমার কোনো ধরনের বিবাদ ছিল না।’
বিজ্ঞাপন
মনিরা মিঠুর এমন অভিযোগে অবাক অভিনেত্র নাজনীন হাসান চুমকি। নিজের ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘থিয়েটার, ধারাবাহিক নাটক, ক্লাব ৯২-৯৪, পাঠচক্র, অফিস, বিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদির ন্যায় অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশের কমিটির সদস্যদের নিয়ে Messenger & WhatsApp Group ছিল এবং আছে। খুব স্বাভাবিক, থাকে এবং থাকবেই। সেটাকে কিনা 'আলো আসবেই' এর তুলনা করলেন স্বনামধন্য ও শ্রদ্ধেয় মুনিরা মিঠু আপা!’
এরপর লেখেন, ‘সেখানকার কথোপকথন এই কমিটির একজন সদস্য তাকে স্ক্রিনশট পাঠাল (শুধুমাত্র আমার এবং সুজাত শিমুল ভাইয়ের) সেটার ভিত্তিতে তিনি আজ যে বিশাল স্ট্যাটাস দিলেন। সেই স্ট্যাটাসকে আবার নিউজ করল কিছু নিউজপেপার। উক্ত নিউজপেপারগুলো একবারও আমার বা সুজাত শিমুলের সাথে কথা বলারও প্রয়োজন মনে করল না! এটা খুবই দুঃখজনক।’
অভিনেত্রী আরও লেখেন, ‘যাইহোক, ১০ মে ২০২৪, বেলা ১০:২৫ মিনিটে অর্থাৎ ৪মা স পূর্বে মিঠু আপা বারবার আমাকে নক করে এই একই বিষয় নিয়ে প্রায় দেড় ঘন্টা যাবৎ অনেক কথা বলেছিলেন, লিখেছিলেন এবং ভয়েস টেক্সটও পাঠিয়েছিলেন। দুজন সহকর্মীর ভুল বোঝাবুঝির অবসান ও সুসম্পর্ক পুনঃবহাল হয়েছিল।’
সবশেষে বলেন, ‘কিন্তু আজ এই স্ট্যাটাস ও নিউজগুলো পড়ার পর সেইসব কথোপকথনের স্ক্রিনশট ও ভয়েস টেক্সট (আমার কাছে এখনও সযতনে আছে) প্রকাশ করে দিলে কার সম্মান বাড়বে সেটাই ভাবছি।’
এদিকে চুমকীর পোস্টের মন্তব্যের ঘরে মনিরা মিঠু উত্তর দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, স্ক্রিনশট ও ভয়েস টেক্সট প্রকাশ করতে পারেন চুমকি। এতে তার বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই।