এর আগে টলিউড প্রযোজক রানা সরকার বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানকে নিয়ে। শাকিব অভিনয় ভালো পারেন না বলে মন্তব্য করেছিলেন। এদিকে ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘তুফান’ সিনেমা নিয়ে দুই বাংলায় চলছে সমান উন্মাদনা। এপারের মতো ওপারের দর্শকরাও মুখিয়ে আছেন ঢালিউড সুপারস্টারের সিনেমাটি দেখতে। কলকাতার প্রযজকরাও বেশ আগ্রহী কিং খানের পেছনে লগ্নি করতে।
এই যখন অবস্থা তখন ফের সরব হলেন পশ্চিমবঙ্গের এই প্রযোজক। তার মতে শাকিব অভিনেতা হিসেবে খুব ভালো না কিন্তু তার সিনেমা সুপারহিট হয়। একইসঙ্গে রানা সরকার খুঁজে বের করেছেন টলিউড সুপারস্টারদের সিনেমা শাকিবের ছবিগুলোর মতো ব্যবসাসফল না হওয়ার কারণ।
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি নিয়ে নিজের ফেসবুকে ‘জাতিস্মরে’র প্রযোজক লিখেছেন, ‘শাকিব খান অভিনেতা হিসেবে খুব ভালো এরকম না। কিন্তু তার প্রত্যেকটা সিনেমা সুপারহিট হয়। এমনকি ঈদের ছুটিতে শাকিব খানের একের বেশি সিনেমা রিলিজ হলেও সবকটা সুপারহিট হয়। গান সুপারহিট হয়, মিউজিক ভিডিও সুপারহিট হয়। এক শাকিব খানের জন্য পুরো বাংলাদেশ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি লাভের মুখ দেখে।’
এরপর লিখেছেন, ‘এমন অবস্থা হয়েছে এখন কলকাতার প্রযোজকরাও ঢাকায় গিয়ে শাকিব খানের সিনেমা প্রযোজনা করে প্রফিট করার রাস্তা নিয়েছে। কিন্তু কলকাতার সুপারস্টারদের নিয়ে সিনেমা বানাতে পারছে না বা চাইছে না, কেন? বাংলাদেশের দর্শক, মূলত শাকিব খানের ফ্যানরা সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখার জন্য পাগল। বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার দর্শকদের মতো পাগলামি দেখা যায়। শাহরুখ সালমানের ফ্যানদের মতো পাগলামি দেখতে পাওয়া যায়।’
রানা সরকার লেখেন, ‘কিন্তু আমি ঠিক বুঝি না আমাদের কলকাতার সুপারস্টারদের কথা। এত প্রচার, এত গালভরা ইন্টারভিউ, কিন্তু এতদিন পরেও কেন পশ্চিমবাংলার দর্শক মিনিমাম ব্যবসা দিতে ইচ্ছুক নয়, হলে সিনেমা দেখতে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই, দর্শকের কোনো দায়বদ্ধতা নেই প্রিয় সুপারস্টারদের প্রতি।’
এ প্রযোজকের কথায়, ‘ফ্যানদের যত কথা শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায়। তারা সবাই সিনেমা হলে গেলে এপার বাংলাতেও সুপারস্টারদের সিনেমাগুলো শাকিব খানের মত হিট হতো। সমস্যাটা ঠিক কোথায় আমাদের সুপারস্টারদের?’
বিজ্ঞাপন
এরপর বেশকটি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন এ প্রযোজক। তিনি লিখেছেন, ‘তারা অভিনয় পারেন না? সিনেমা ভালো তৈরি করতে পারেন না? কাজ কম কথা বেশি? প্রযোজক পান না বলে নিজের সিনেমা নিজেকেই প্রযোজনা করতে হয়? শুধু স্যাটেলাইট রাইট বিক্রির থেকে লাভ করার কথা ভেবে সিনেমা বানান, বক্স অফিসের কথা ভাবেন না? নাকি পশ্চিমবঙ্গের মেনস্ট্রিম সিনেমার দর্শক সিনেমা হলে গিয়ে তাদের সিনেমা আর দেখতে চান না, তারা হিন্দি আর দক্ষিণী সিনেমা দেখেন?’
প্রশ্ন তোলার পর রানা সরকার লেখেন, ‘সুপারস্টার হলেই যে সে ভালো প্রযোজনা করতে পারবে এটা এ বাংলায় এখনও সত্যি না। সুপারস্টারদের প্রযোজনায় হিট সিনেমার সংখ্যা হাতে গোনা। আর কলকাতার প্রযোজকরা কেন সুপারস্টারদের নিয়ে সিনেমা বানাচ্ছেন না তার কারণও সুপারস্টারদের অতিরিক্ত চাহিদা।’
জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে পশ্চিমবঙ্গের সুপারস্টারদের চেয়ে শাকিবকে এগিয়ে রেখেছেন রানা সরকার। সেইসঙ্গে প্রশ্ন রেখেছেন, ‘হিন্দি বা দক্ষিণের সুপারস্টারদের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। কিন্তু আমাদের সুপারস্টাররা ন্যূনতম শাকিব খানের মতো জনপ্রিয়তা গড়ে তুলতে পারলেন না কেন?’
নব্বই দশকের গ্যাংস্টারের গল্প দেখা যাবে ‘তুফান’-এ। এতে শাকিবের বিপরীতে অভিনয় করেছেন টলিউডের মিমি চক্রবর্তী এবং বাংলাদেশের মাসুমা রহমান নাবিলা। সালাউদ্দিন লাভলু, মিশা সওদাগর, গাজী রাকায়েত, সুমন আনোয়ার, ফজলুর রহমান বাবু, চঞ্চল চৌধুরীসহ আরও অনেককে দেখা গেছে।
দেশের দুই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আলফা আই ও চরকির সঙ্গে ছবিটি প্রযোজনা করবে কলকাতার এসভিএফ। তুফান পরিচালনা করেছেন রায়হান রাফী।