রোববার, ১৬ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

দাদুর ছিল ভীষণ পান ও চায়ের নেশা: খিলখিল কাজী 

বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২৪, ০১:১৭ পিএম

শেয়ার করুন:

দাদুর ছিল ভীষণ পান ও চায়ের নেশা: খিলখিল কাজী 

বল বীর— বল উন্নত মম শির! শির নেহারি’ আমারি নত শির ওই শিখর হিমাদ্রির! কিংবা আজ সৃষ্টিসুখের উল্লাসে— মোর মুখ হাসে মোর চোখ হাসে মোর টগবগিয়ে খুন হাসে— পঙক্তিগুলো মনে পড়লেই মানসপটে ভেসে ওঠে ঝাকড়া চুলের বাবরি দোলানো মহান কবি কাজী নজরুল ইসলামের কথা। একাধারে প্রেম, সাম্য, দ্রোহ ও মানবতার কবি তিনি।

আগামীকাল ১১ জ্যৈষ্ঠ কবির জন্মবার্ষিকী। ১৮৯৯ সালের ওই দিনে জন্মগ্রহণ করেন বাংলা সাহিত্যের এই বরপুত্র। এ উপলক্ষে নজরুলের গত জন্মবার্ষিকীতে ঢাকা মেইল মুখোমুখি হয়েছিল কবির নাতনি ও নজরুল সংগীতশিল্পী খিলখিল কাজী। কথায় কথায় কবির নাতনি জানিয়েছিলেন, নজরুলেন পান ও চায়ের নেশা ছিল। 


বিজ্ঞাপন


তিনি বলেন, তিনি প্রেমের কবি ছিলেন বলেই তো বিদ্রোহী কবি হতে পেরেছিলেন। প্রেম বলতে তো শুধু প্রেয়সীর প্রেম না। দেশের প্রতি প্রেম, মানুষের প্রতি প্রেম, জীবের প্রতি প্রেম, নীতি-নৈতিকতার প্রতি প্রেম। এসবই তো তার বৈশিষ্ট্য। এ ছাড়া তিনি সাম্যের কবি ছিলেন। আরও অনেক বিশেষণ রয়েছে তার নামের সঙ্গে। তবে আমি তাকে দেখি একজন মানুষ হিসেবে। মানুষ হিসেবে অসাধারণ ছিলেন তিনি। লিখেছেন, ‘গাহি সাম্যের গান, মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান’। কিন্তু ব্যক্তি নজরুলের চর্চা তেমন হয় না। তার বন্ধুরা স্মৃতিচারণে লিখেছেন, ব্যক্তি নজরুল ছিলেন অসাধারণ। মানুষকে সমান চোখে দেখতেন তিনি। তাকে অনেকে কাফের, যবন ফতোয়া দিয়েছে। কিন্তু তাদেরও তিনি ভালোবেসেছেন। যারা তাকে ঘৃণা করেছেন তিনি তাদের পাঁচগুণ ভালোবেসেছেন। মাটির মানুষ ছিলেন। তার ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে শোনা যায় সেসব কথা। সরোজবালা দেবী, আঙুরবালা, ইন্দুবালা তার ছাত্রী ছিলেন। ছাত্র-ছাত্রীরা তাকে কাজীদা বলে ডাকতেন। 

এ সময় বলেন, দাদুর ছিল ভীষণ পান ও চায়ের নেশা। তার একটি সিলভারের বাক্স ছিল। সেখানে এক শ একটা পান সাজানো থাকত। একবার এক ছাত্র জিজ্ঞেস করেছিলেন, এত চা খাওয়ার কারণ। শুনে কবি বলেছিলেন, চালাক যদি হতে চাও, লাখ পেয়ালা চা খাও। সরোজবালা দেবীর এক স্মৃতিচারণ থেকে জানা যায়, একবার নজরুলের এক নাটকে তার গান গাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সরোজ দেবী তো ভয়ে অস্থির। এত বড় কবির গান গাবেন! সাহস পাচ্ছিলেন না। কিন্তু নজরুল বললেন, তুই পারবি। আমি তোকে শেখাব। দাদু তখন তাকে বললেন, নে একটা পান খা। সরোজবালার মুখে একটি পান গুঁজে দিলেন। সরোজ দেবী বলেন, কী সুগন্ধী যে ছিল সেই পান! এভাবে তার সঙ্গে মিশে গিয়ে সাহস জুগিয়ে গান গাইয়ে নিয়েছিলেন দাদু। এই হলেন ব্যক্তি নজরুল। আমাদের বাবা-চাচাও এমন ছিলেন। মানুষে ভেদাভেদ করতেন না তারা। আমরাও দাদুর এই গুণ পেয়েছি। সব মানুষকে সমান চোখে দেখি।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর