সবচেয়ে নিখাদ মায়ের ভালোবাসা। সবসময় সন্তানের জন্য আঁচলে ভালোবাসা গচ্ছিত রাখেন। তার অসীম মমতা সন্তানের সঙ্গে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছায়ার মতো থাকে। তবে বারো বছর ধরে মমতার এই ছায়া থেকে বঞ্চিত অভিনেত্রী প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। এক যুগ হলো না ফেরার দেশে চলে গেছেন তার মা জনপ্রিয় অভিনেত্রী দোয়েল।
তবে প্রতিদিনই মাকে মনে পড়ে দীঘির। কেননা শোকের নদী শুকায় না। এদিকে আজ ১২ মে বিশ্ব মা দিবস। এদিন যেন হারানোর ঢেউ আছড়ে পড়ছে ভেতরে। ঢাকা মেইলের নিকট সেই অনুভূতি ব্যক্ত করলেন ঢালিউডের এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী।
বিজ্ঞাপন
দিবসটিতে কী মায়ের কথা আরও বেশি মনে পড়ে? আলাদা করে উছলে ওঠে শোক? জানতে চাইলে দীঘি বলেন, ‘অবশ্যই মনে পড়ে। একটু হলেও তাকে দেখতে ইচ্ছে করে। এখন বড় হয়েছি। অনেক সুযোগ হয়েছে যা ছোটবেলায় ছিল না। এখন মা থাকলে তার জন্য অনেক কিছু করতে পারতাম। যখন দেখি অন্যরা করছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড দিচ্ছে। তখন খুব ইচ্ছে করে আমিও যদি পারতাম। কিন্তু সেটা তো আর সম্ভব না। যখন দেখি সেখান থেকে আমি বঞ্চিত। তখন খারাপ লাগে।’
আরও পড়ুন: মা হচ্ছেন ফারিয়া শাহরিন
মা সঙ্গে থাকলে চলার পথ আরও মসৃণ হয়ে উঠত বলে মনে করেন এ তারকা। তার ভাষায়, ‘মায়ের আদর, শাসন সবই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। শাসনটা বিশেষ করে। কেননা সেটা না থাকলে এ পর্যন্ত আসা হতো না। তার উপদেশ আমার বেশি মনে পড়ে। প্রতিটি বিষয়ে তিনি এত সুন্দর করে উপদেশ দিতেন যেটা এখন পাই না। মনে হয় এখন মা থাকলে আমার জন্য সবকিছু আরও সহজ হয়ে যেত। এই বিষয়টা সবচেয়ে মিস করি।’
বিজ্ঞাপন
একরত্তি বয়সে বুঝতে শেখার আগেই ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান দীঘি। পান আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা। এর সবটা মায়ের কারণে হয়েছে বলে মনে করেন এ অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘যতটুকু মনে পড়ে তিনি-ই সব দায়িত্ব নিয়ে আমাকে দিয়ে কাজ করাতেন। আমার ওপর কখনও কিছু চাপিয়ে দিতেন না। বিষয়টি ছিল এরকম, তিনি যদি বুঝতে পারতেন তাহলে আমি এমনিতেই করতে পারতাম কাজগুলো। কখনও তার কথার বাইরে যেতাম না। মা যেভাবে বুঝিয়ে দিতেন সেভাবেই করতাম। সেটা অভিনয় হচ্ছে না কী হচ্ছে সেটা তিনি-ই বুঝতেন।’
ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে এবং নিজের কাজগুলো দেখতে বসে মায়ের কথা মনে পড়ে দীঘির। তিনি বলেন, ‘আমি এখনও অনেক কিছু বুঝি না। মনে হয় মা থাকলে ভুলগুলো ধরিয়ে দিতেন। বলতেন, এই জায়গায় এই ড্রেস পরো, এই জায়গায় এই এক্সপ্রেশন দাও। এই বিষয়গুলোর জন্যও মাকে খুব মিস করি।’
মা হারা সব সন্তানেরই বেদনার রঙ এক। সম্ভব না বোঝার পরও মাঝে মাঝে মনে হয় মাকে যদি ফিরে পাওয়া যেত। দীঘিও এর ব্যতিক্রম না। মাকে তার অনেক কিছু বলার আছে। ভেতরে জমিয়ে রেখেছেন সব।
তিনি বলেন, ‘তাকে ছাড়া বারোটা বছর কীভাবে কাটালাম, কী করলাম সব শোনাব এবং বলব মা আমার অনেক কষ্ট হয়েছে তোমাকে ছাড়া এতটা বছর। তুমি আর যেও না। তোমাকে পেয়েছি তুমি থেকে যাও আমার সাথে।’
দীঘি অভিনীত সবশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’। জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের ‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’ উপন্যাস অবলম্বনে এটি নির্মাণ করেন আব্দুস সামাদ খোকন। সম্প্রতি অভিনেত্রী শেষ করেছেন একটি ওয়েব সিরিজের কাজ। এছাড়াও কথা চলছে আরও কয়েকটি কাজের।
আরআর