সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

‘রূপান্তর’ বিতর্ক ভিডিওবার্তায় যা বললেন জোভান 

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৬ পিএম

শেয়ার করুন:

‘রূপান্তর’ বিতর্ক ভিডিওবার্তায় যা বললেন জোভান 

ঈদে উপলক্ষে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘রূপান্তর’ নাটক নিয়ে উত্তপ্ত সামাজিক মাধ্যম। নাটকটির মাধ্যমে দেশে ‘ট্রান্সজেন্ডার সংস্কৃতি’ প্রমোট করার অভিযোগ এনেছেন নেটিজেনরা। সেইসঙ্গে দিয়েছেন বয়কটের ডাক। 

এ নাটকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেতা ফারহান আহমেদ জোভান। ফলে তার বিরুদ্ধে ছোড়া হয়েছে বয়কটের তীর। এমতাবস্থায় জোভান জানিয়েছিলেন ভবিষ্যতে দর্শক পছন্দ করেন না এরকম কাজ করবেন না। এবার সামাজিক মাধ্যমে করলেন দুঃখ প্রকাশ। 


বিজ্ঞাপন


নিজের ফেসবুক থেকে ‘রূপান্তর’ নাটক নিয়ে ভিডও আঁকারে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেন জোভান। সেখানে বলেন, আশা করি সবাই ভালো আছেন এবং নিজের পরিবার নিয়ে সুন্দর করে ঈদ কাটিয়েছেন। এই ঈদে আমার বেশকিছু নাটক প্রকাশ পেয়েছে এবং প্রথম দিন থেকেই ভালো সাড়া পাচ্ছিলাম। ঈদটা আমারও সুন্দরভাবে কাটতে পারত কিন্তু সেটি হয়নি। একটি অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়ে আপনারা যেমন কষ্ট পেয়েছেন তেমনই আমিও কিন্তু কষ্ট পাচ্ছি। আমি একদমই ভালো নেই। আপনারা বুঝতেই পারছেন। কারণ আমাকে আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করছেন। হয়তোবা আমার মানসিক অবস্থা তারা বুঝতে পারছেন। এ কারণেই মনে হয়েছে আপনাদের কাছে কিছু কথা বলা দরকার। 

এরপর বলেন, আমার অভিনীত ‘রূপান্তর’ নাটক ঘিরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তা একেবারেই অপ্রত্যাশিত। এই নাটকের মাধ্যমে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার কোনো উদ্দেশ্য আমাদের নেই। আমি নিজেও মুসলিম পরিবারের ছেলে। আমি জানি আমি ধর্মকে কতটা বিশ্বাস করি, আল্লাহকে কতটা শ্রদ্ধা করি। এই নাটকের মাধ্যমে কোনো কিছু প্রমোট বা প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্য আমাদের ছিল না। শুধু একটি ক্যারেক্টার প্লে করার চেষ্টা করেছি এবং সেটার মাধ্যমে এতগুলো মানুষকে কষ্ট দিয়েছি। সেজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমি মনে প্রাণে আপনাদের সবার কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। 

আরও বলেন, আমি ১১ বুছর ধরে নাটক করছি। আজ আমার যে অবস্থান এর জন্য আমার একার অবদান নেই। দর্শকের ভালোবাসা ও সমর্থন ছিল বলেই এই অবস্থানে আসতে পেরেছি। আমার কাজ করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দর্শকে একটু বিনোদন দেওয়া, তাদের খুশি করা। এজন্যই এত কষ্ট করি আমি। 

সবশেষে জোভান বলেন, এরপর থেকে আমি আরেকটু বেশি সচেতন থাকব। সতর্ক থাকব আমার চরিত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রে। যেন তারা কোনোভাবেই মনঃক্ষুণ্ণ না হন। কষ্ট না পান। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, আমার যে কাজগুলো আপনাদের এতদিন ভালো লেগেছে তার থেকেও ভালো কাজ উপহার দেব। শুধু একটাই অনুরোধ আমার ওপর কোনো কষ্ট রাখবেন না। আমার জন্য দোয়া করবেন এবং সবাই ভালো থাকবেন। আপনাদের সবাইকে ভালোবাসি। 
এর আগে নাটকটি নিয়ে ঢাকা মেইলকে জোভান বলেছিলেন, এদিকে বয়কটের ডাক ওঠার পর জোভান বলেছিলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না নাটকটি নিয়ে কেন এমন সমালচনা করা হচ্ছে। নাটকটির ভিউ হয়েছিল নব্বই হাজার। তাহলে বাকি মানুষ তো দেখেনি। আমার মনে হয় না তারা দেখেই সমালোচনা করছে।’ 


বিজ্ঞাপন


নাটকটি নিয়ে দর্শকের এমন অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়ায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় জোভান। তিনি বলেছিলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি ঘোরের মধ্যে আছি। বুঝতে পারছি না কী হচ্ছে।’

এদিকে নাটকটিতে অভিনয়ের কারণে জোভানের বিরুদ্ধেও দেওয়া হয়েছে বয়কটের ডাক। ধুয়ে দেওয়া হচ্ছে তাকে। এরকম আচরণকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন অভিনেতা। তার ভাষায়, ‘এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে। কারণ সামগ্রিকভাবে কথা বলার চেয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণটা বেশি হচ্ছে।’ 

নেটিজনেদের এমন সমালোচনার মুখে জোভান সিদ্ধান্ত নেন দর্শক পছন্দ করেন না এমন কোনো চরিত্রে অভিনয় করবেন না তিনি। অভিনেতা বলেছিলেন, ‘যেহেতু মানুষ পছন্দ করছে না সেহেতু এসব আর করা যাবে না। এরপর থেকে এগুলো আর করব না।’

১৫ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় উন্মুক্ত করা হয় ইউটিউবে প্রকাশ করা হয় ‘রূপান্তর’। হরমোনজনিত কারণে একজন মানুষের একা হয়ে যাওয়ার গল্প তুলে ধরা হয়েছে নাটকে। এটি নির্মাণ করেছেন রাফাত মজুমদার রিংকু। জোভান-মাহি ছাড়াও অভিনয় করেছেন সাবেরী আলম ও সমাপ্তি মাসুক।

জানা গেছে, গল্পটি মূলত একজন তরুণ চিত্রশিল্পীকে ঘিরে। যিনি শৈশবে ট্রেন দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন পরিবারের সদস্যদের। এ কারণে তিনি জানতে পারেননি তার বাবা-মা কে কিংবা কোন ধর্মের মানুষ। বড় হয়েছেন শিশু আশ্রমে।

চিত্রকর হিসেবে তিনি পেয়েছেন খ্যাতি। এর মধ্যে একজন ধনীর দুলালি তার আঁকায় মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পড়েন। বিয়ের জন্য পারিবারিকভাবে প্রস্তাব দেওয়া হয় এই শিল্পীকে। কিন্তু তিনি সাফ জানিয়ে দেন, তাকে দিয়ে সেটা সম্ভব নয়। এরপর তার চিকিৎসকের মাধ্যমে জানা যায়, তিনি আসলে একটি হরমোনজনিত বিরল জটিলতায় ভুগছেন।তিনি দেখতে পুরুষের মতো হলেও মানসিকভাবে তিনি একজন নারী।

এমন গল্পে নির্মিত নাটকটি দেখার পর থেকেই শুরু হয় সমালোচনা। নাটকের মাধ্যমে ‘ট্রান্সজেন্ডার সংস্কৃতি’ প্রমোট করার অভিযোগ এনে দেওয়া হয় বয়কটের ডাক। অবস্থা বেগতিক দেখে ১৬ এপ্রিল ইউটিউব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় নাটকটি।

Posted by Facebook on Date:

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর