ফেলে আসা শৈশবের কিছু গল্প থাকে রমজানের ঘ্রাণমাখা। ঘুম ভেঙে সেহেরি খাওয়া দিয়ে শুরু হতো দিন। ক্লান্ত শরীর টেনে ইফতারের টেবিলে বসার মধ্য দিয়ে হতো শেষ। এরমধ্যে এমন কিছু ঘটনা ঘটত যা মনে রাখার মতো। বছর ঘুরে পবিত্র এই মাসটি ফিরে আসার সময় সঙ্গে করে নিয়ে আসে সেসব।
বিজ্ঞাপন
ঢাকা মেইলের কাছে শৈশবের রোজা নিয়ে স্মৃতিচারণ করলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ফারিন খান। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই রোজা রাখি। ছয় বছর বয়সে প্রথম কোরআন শরীফ খতম দিয়েছি। আমি একটি রক্ষণশীল পরিবার থেকে এসেছি। ফলে ছোটবেলায় নামাজ-রোজা আবশ্যক ছিল। নামাজ না পড়লে ভাত নেই এরকম একটা অবস্থা ছিল।’
একরত্তিদের রোজা রাখায় বরাবরই আপত্তি থাকে বাবা-মায়ের। তারা বিভিন্নভাবে শিশুদের রোজা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেন। এমনটা ঘটত ফারিনের সঙ্গেও। তবে সেসব বিশেষ কানে তুলতেন না তিনি। লুকিয়ে রোজা রাখতেন।
ফারিন বলেন, ‘আমি ছোট বলে রোজা রাখতে দিতেন না বাবা-মা। সেহেরিতেও ডাকতেন না। কিন্তু আমি সেহেরি না খেয়েই লুকিয়ে রোজা রাখতাম। দিনের বেলা খাবার দিলে জানলা দিয়ে ফেলে দিতাম, ময়লার ঝুড়িতে ফেলতাম। বাসার সবাই জানত আমি খেয়েছি। একবার স্কুলে পরীক্ষা চলছিল। সেবার লুকিয়ে রোজা রাখছিলাম। রোজা রেখে স্কুলে গিয়ে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলাম। এরপর প্রধান শিক্ষক আম্মুকে ফোন করে স্কুলে আসতে বলেন। তিনি ভেবেছিলেন আমার পরিবার যেহেতু রক্ষণশীল তাই আমাকে রোজা রাখতে হয়। আম্মু গেলে প্রধান শিক্ষক এসব বললে আম্মু বলেন, আমরা তো ওকে রোজা রাখতে দেই না। ওকে তো প্রতিদিনই খাবার দেই। তখন আমি বলি যে আমি দুপুরে খাবার খাই না। জানলা দিয়ে ফেলে দেই। আম্মু তখন কান ধরে বাসায় নিয়ে গিয়ে দেখেন জানলার পেছনে অনেক খাবার পড়ে আছে। এই ঘটনাটি বেশ মজার ছিল।’
বিজ্ঞাপন
ছেলেবেলায় অনেকেই রোজা অবস্থায় ভুলে এটা সেটা খেয়ে ফেলে। কেউ লুকিয়ে খাবার খায়। এ প্রসঙ্গে ব্যাটারি গলির ক্রাশ বলেন, ‘আমি রোজা নিয়ে খুব সিরিয়াস ছিলাম। লুকিয়ে কখনও খাবার খাইনি। তবে ভুলে পানি খেয়েছি। ছোটবেলায় সাইক্লিং করতাম। সাইকেল চালিয়ে বাসায় গিয়ে ভুলে ঢকঢক করে পানি খেয়ে ফেলতাম। পরে মনে পড়ত আমি তো রোজা।’
রোজার মধ্যে ঈদের কাজের ব্যস্ততা থাকে। তাই মাসটি লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন করেই চলে যায় অভিনয়শিল্পীদের। পরিবারের সঙ্গে ইফতারের সুযোগটা খুব বেশি হয় না। এ নিয়ে ফারিন বলেন,‘কাজের কারণে অনেক সময় পরিবারের সঙ্গে ইফতার করা হয় না। একসময় খারাপ লাগত। এখন ইতিবাচকভাবে দেখি। কারণ যাদের সঙ্গে কাজ করি তারা আমার আরেকটি পরিবার। নিজের পরিবারের সঙ্গে না হলেও এই পরিবারের সঙ্গে তো করা হচ্ছে।’
ব্যস্ততা ফারিনকে দেয় না অবসর। এর পুরোটা জুড়েই কাজ। হাতে একগুচ্ছ ঈদ নাটক। এছাড়া একটি মিউজিক ভিডিও রয়েছে। তবে সে বিষয়ে কিছু বললেন না। সময় এলে বিস্তারিত তুলে ধরবেন বলে জানালেন।