ফেলে আসা শৈশবের কিছু গল্প থাকে রমজানের ঘ্রাণমাখা। ঘুম ভেঙে সেহেরি খাওয়া দিয়ে শুরু হতো দিন। ক্লান্ত শরীর টেনে ইফতারের টেবিলে বসার মধ্য দিয়ে হতো শেষ। এরমধ্যে এমন কিছু ঘটনা ঘটত যা মনে রাখার মতো। বছর ঘুরে পবিত্র এই মাসটি ফিরে আসার সময় সঙ্গে করে নিয়ে আসে সেসব।
ঢাকা মেইলের কাছে শৈশবের রোজা নিয়ে স্মৃতিচারণ করলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি। কেমন ছিল শৈশবের রমজান— জানতে চাইলে বলেন, ‘প্রথম রোজার কথা সেভাবে মনে নেই। তবে খুব উত্তেজিত থাকতাম। রোজা রাখার চেষ্টা করতাম। কে কয়টা বেশি রোজা রাখল— এ নিয়ে কাজিনদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হতো।’
বিজ্ঞাপন
একরত্তিদের রোজা রাখায় বরাবরই আপত্তি থাকে বাবা-মায়ের। তারা বিভিন্নভাবে শিশুদের রোজা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেন। এমনটা ঘটেছে হিমির সঙ্গেও। তিনি বলেন, ‘বাবা মা ছোট বয়সে রোজা রাখতে দিতে চাইতেন না। আম্মু বলতেন, দুপুরে খেলে দুইটা রোজা হবে। বিকেলে খেলে তিনটা হবে। দেখা যেত খেয়ে দেয়ে আমরা ৩০টার (৩০ দিন) মধ্যে নব্বইটা রোজা রেখে ফেলতাম।’
আরও বলেন, ‘আমি যে রোজা রেখেছি এটা কখনও ভুলতাম না। আমার ভাই অনেক সময় ভুল করে পানি খেয়ে ফেলত। আমার তখন মনে হতো ইশ আমার ভুল হয় না কেন। তাহলে আমিও খেতে পারতাম।’
বিজ্ঞাপন
শিশু-কিশোরের কাছে গোটা মাস রোজা রাখাটা বেশ কৃতিত্বের। বড়দের বাহবাও পাওয়া যায়। তাই ওই বয়সে অনেকেই আপ্রাণ চেষ্টা করে সবকটা রোজা রাখার। হিমির মধ্যেও ছিল এ প্রচেষ্টা। তিনি বলেন, ‘একবার ৩০টি রোজা রেখে রেকর্ড করতে যাচ্ছিলাম। রোজার শেষের দিকে কেনাকাটার ধুম পড়ে। সেসময় আমরা শপিং করতে গিয়েছিলাম বসুন্ধরা শপিং মলে। এত খারাপ লাগছিল যে বলার মতো না। ক্ষুধায় থাকতে না পেরে ইফতারের ১৫-২০ মিনিট আগে রোজা ভেঙে ফেলি। ওই ঘটনা মাঝে মাঝেই মনে পড়ে। সারাদিন কষ্ট করে রোজা রেখে শেষ সময় এসে ভেঙে ফেলেছিলাম।’
এদিকে সামনেই ঈদ। দর্শকপ্রিয় এ অভিনেত্রীর কাজের ভিড়বাট্টা কেমন— জবাবে বলেন, ‘রোজার মধ্যে অনেক চাপ পড়ে যায়। সেকারণে রোজার আগেই আমরা অনেক কাজ করেছি। এছাড়া এবার বড় কাজগুলো দুই দিনের জায়গায় তিন দিন করে সময় নিয়ে ধরে ধরে করেছি। নিয়মিত তো কমেডি ঘরানার কাজ করা হয়। ঈদে কিছু সিরিয়াস গল্পের কাজ করা হয়েছে।’
সবশেষে হিমি জানান, রোজায়ও ব্যস্ত সময় কাটাতে হবে। লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন করেই মাস যাবে। শুরু হবে প্রথম দিন থেকেই। তাই পরিবারের সঙ্গে ইফতার করা হবে না। সারতে হবে শুটিং সেটেই। এ নিয়ে মন খারাপ হয় না। কেননা হিমি মনে করেন কাজের জায়গাটি তার আরেকটি পরিবার।