শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চবি, আহত ২০

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১ জুন ২০২৩, ০৭:২৪ পিএম

শেয়ার করুন:

ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চবি, আহত ২০

খাবার হোটেলে বসাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রক্টর, পুলিশ ইনচার্জ ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন। র‌্যাব মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের সূচনা হয় গতকাল বুধবার (৩১ মে) দিবাগত রাত ১০টার দিকে শাহ আমানত হলের সামনের ঢাকা হোটেলে। সেখানে খাবার খেতে গিয়ে দুই পক্ষের দুই কর্মীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। ঘটনার জের ধরে সিএফসির কয়েকজন কর্মী মিলে সিক্সটি নাইনের এক কর্মীকে মারধর করে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তী সময়ে পক্ষ দুটি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।


বিজ্ঞাপন


এরপর রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ প্রশাসন মিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) মিজানুর রহমান ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা শেখ আব্দুর রাজ্জাকসহ মোট ছয়জন আহত হন।

আজ বৃহস্পতিবার (১ জুন) দুপুর ১টা থেকে তারা আবারও দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায়। সিএফসির নেতাকর্মীদের দাবি, বেলা ১১টার দিকে ক্লাসে যাচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক রমজান। এমন সময় সিক্সটি নাইনের কয়েকজন কর্মী মিলে তাকে রাম-দা দিয়ে কোপায়।

CU2

বিবদমান পক্ষ দুটির নাম 'সিএফসি' ও 'সিক্সটি নাইন'। এর মধ্যে 'সিএফসি'র কর্মীরা শাহ আমানত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তারা শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদাফ খানের অনুসারী। 'সিক্সটি নাইন'র কর্মীরা শাহজালাল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তারা শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর অনুসারী।


বিজ্ঞাপন


সিএফসির নেতা শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদাফ খান বলেন, গতকাল (বুধবার) রাতে আমাদের কয়েকজন জুনিয়র ঢাকা হোটেলে ভাত খেতে গিয়েছিল। খাবার টেবিলের সংকট হওয়ায় 'সিক্সটি নাইন'র এক কর্মীকে আমাদের জুনিয়ররা একটু পাশ হতে বলেছিল। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি হয় এবং বিষয়টা সেখানেই শেষ হয়ে যায়। কিন্তু তারা আজ (বৃহস্পতিবার) শাখা ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক রমজানকে কুপিয়েছে। আমাদের পাঁচ ছয়জন কর্মী আহত হয়েছে।

'সিক্সটি নাইন'র নেতা শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, রাতে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সিক্সটি নাইনের এক কর্মীর সাথে খাবার হোটেলে বসা নিয়ে সিএফসির ছেলেরা বাকবিতণ্ডায় জড়ায় এবং তাকে মারধর করে। এরপর আজও তারা আবারও আমাদের হলে অ্যাটাক করেছে। এতে আমাদের সাত আটজন কর্মী আহত হয়েছে।

CU3

দুই পক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী উভয়পক্ষে মোট ১৩-১৪ জন কর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজনকে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ আবু তৈয়ব। তিনি বলেন, আমাদের মেডিকেলে দশ ১২ জন আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছে। এর মধ্যে দুজনকে গুরুতর অবস্থায় চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোহাম্মদ নুরুল আজিম সিকদার বলেন, একটা খাবার হোটেল থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত। পরে তা বড় আকার ধারণ করে। রাতে একজন পুলিশ ও একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ প্রায় পাঁচ-ছয়জন আহত হয়েছেন। আজ আবারও সংঘর্ষ হলে আমার পায়ে একটা ঢিল এসে পড়ে। একটু ব্যথা পেয়েছি।

প্রক্টর বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাছাড়া র‌্যাব, ডিবি, পুলিশ, গোয়েন্দাসহ সবাই উপস্থিত রয়েছে। এরপর আবারও এরকম কোনো ঘটনা ঘটলে শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তাছাড়া এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর