শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

র‍্যাগিং-এ জড়িত শিক্ষার্থীই হচ্ছেন ঢাবির শিক্ষক! 

এম এইচ ইমরান 
প্রকাশিত: ০৭ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৫৪ পিএম

শেয়ার করুন:

র‍্যাগিং-এ জড়িত শিক্ষার্থীই হচ্ছেন ঢাবির শিক্ষক! 

র‍্যাগিং-এ জড়িত থাকা এক সাবেক শিক্ষার্থীকে দেওয়া হচ্ছে প্রভাষক পদে নিয়োগ। এমন অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের বিরুদ্ধে। বিভাগের ২টি প্রভাষকের শূন্য পদের একটিতে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন ওই শিক্ষার্থী। অভিযোগ রয়েছে- অভিযুক্ত সাবেক শিক্ষার্থীকে প্রভাষক পদ পাইয়ে দিতে সব ধরনের তদবির করেছেন ওই বিভাগের দুই অধ্যাপক। 

প্রভাষক পদে নিয়োগ পেতে যাওয়া ওই শিক্ষার্থীর নাম মোছা. নিলুফা ইয়াসমিন।


বিজ্ঞাপন


সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে দ্বিতীয় বর্ষে থাকা অবস্থায় প্রথম বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের একটি ক্লাস রুমে দীর্ঘক্ষণ আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠে ওই শিক্ষার্থীসহ তার কয়েকজন সহপাঠীর বিরুদ্ধে। সে সময়ে তারা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ধমকাধামকি ও গালি-গালাজ করে। এছাড়াও গায়ে হাত দেওয়া, কপালে টিপ ও লিপস্টিক দিয়ে দেওয়া, মেয়েদের গায়ের ওড়না খুলে ছেলেদের গায়ে পড়িয়ে দেওয়া ও অশ্লীল হিন্দি ভিডিও প্রজেক্টরে ছেড়ে নাচানো, চুমু দেওয়া ইত্যাদি যৌন হয়রানিমূলক ঘটনা ঘটে। শুধু তাই নয়; র‍্যাগিং এর স্বীকার কতিপয় ছাত্রীকে বারবার স্পর্শকাতর অঙ্গের নাম উচ্চারণ করতে বাধ্য করা হয়।

তখনও র‍্যাগিং-এর এমন ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠে বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। পরে শাস্তি না দিয়ে শুধু মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া এবং এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারি কমিটিকে না জানানোর জন্য তৎকালীন চেয়ারম্যানের নিকট অনুরোধ জানায় ওই শিক্ষকরা। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন মোছা. ওয়াহিদা হক। পরবর্তীতে দ্বিতীয় বর্ষের ঐ শিক্ষার্থীরা ক্ষমা প্রর্থনা করে আবেদন করে এবং আলাদা আলাদা স্বীকারোক্তিমূলক লিখিত আবেদন পত্র উপাচার্য বরাবর জমা দেয় বিভাগ। 

সেই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মৎসবিজ্ঞান বিভাগের তৎকালীন বিভাগীয় চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে কে নিয়োগ পাবে, কে না পাবে এবং কে পাওয়া উচিত, কে না পাওয়া উচিত তার সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ কমিটির হাতে।

তিনি আরও বলেন, র‍্যাগিং একটি গর্হিত কাজ। র‍্যাগিং করা শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান সব সময় স্পষ্ট।  


বিজ্ঞাপন


সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যে বিভাগের দুটি প্রভাষকের শূন্য পদে নিয়োগের জন্য দরখাস্ত করার আবেদন করে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ বোর্ড। গুঞ্জন উঠে প্রভাষকের দুটি শূন্য পদের একটিতে নিয়োগ পেতে যাচ্ছে র‍্যাগিং এর দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের একজন। তাছাড়া অভিযোগ উঠেছে, ওই সাবেক শিক্ষার্থীকে প্রভাষক পদে নিয়োগ পাইয়ে দিতে নানা মহলে তদবির করে যাচ্ছে উক্ত বিভাগেরই কয়েকজন শিক্ষক। 

তবে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি মৎস বিজ্ঞান বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রোকনুজ্জামানের। একাধিকবার মেসেজে ও মুঠোফোন যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে, তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

র‍্যাগিং এ অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর প্রভাষক পদে নিয়োগ সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল (শিক্ষা) বলেন, এই বিষয়ে আমি অবগত নই।

প্রতিবেদক/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর