শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

ইবিতে শিক্ষার্থীকে হলের কক্ষ থেকে বের করার অভিযোগ 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০৪:৫৭ পিএম

শেয়ার করুন:

ইবিতে শিক্ষার্থীকে হলের কক্ষ থেকে বের করার অভিযোগ 
ছবি : ঢাকা মেইল

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) লালন শাহ হলের আবাসিক শিক্ষার্থীকে হলের বৈধ কক্ষ থেকে বের করার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে শনিবার (১ এপ্রিল) হল প্রভোস্ট বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী। 

গত বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) হলের ৪২৮নং কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। 


বিজ্ঞাপন


ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম মাহাদী হাসান। কিনি ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। 

লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী বলেন, আমার আবাসিকতাপ্রাপ্ত কক্ষে বিগত কিছুদিন যাবত অবস্থান করছিলাম। গত ৩০ মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সিদ্দিক (পরিসংখ্যান ২০১৬-১৭) এর মাধ্যমে তরিকুল ইসলাম তরুন (বাংলা ২০১৬-১৭) ফাহিম ফয়সাল (ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ২০১৭-১৮) ও আতাউর রহমান রাজু (বাংলা ২০১৮-১৯) আমাকে হলে আসতে বলে। আমি তখন ইফতার শেষ করে নামাজের জন্য যাচ্ছিলাম। ফোন পেয়ে আমি দ্রুত হলে চলে আসি। সেখানে পৌছে দেখতে পাই আমার বই, খাতা, তোশক, বালিশ রুমের বাইরে করিডোরে পড়ে আছে। আমাকে ৪২৭নং কক্ষে যেতে বলা হয়েছিল। সেখানে আগে থেকেই তরুন, ফাহিম, রাজুসহ আরও একজন উপস্থিত ছিলেন। আমি সালাম দিয়ে কক্ষে প্রবেশ করি। প্রথমে ফাহিম আমাকে বলে তুই মাহাদী? আমি হ্যাঁ বলি। তারপর আমাকে বলে তুই কোন কক্ষে থাকিস! আমি বলি ৪২৮ আমার আবাসিক কক্ষ, আমি ওই কক্ষেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে অবস্থান করছি। তখন ফাহিম বলে আগে কোথায় ছিলি? আমি বলি ৩০৮নং এ মেহেদী হাসান তানভীর-এর অতিথি হিসেবে ছিলাম। এখন আমার কক্ষ (৪২৮) বরাদ্দ হয়েছে আমি এখানেই থাকব। 

এটা বলার সাথেই রাজু আমাকে ধমক দিয়ে বলে তুই কে! তোকে আগে কখনও হলে দেখিনিতো। কে তোরে হলে তুলেছে? আর ওইসব আবাসিকতার কাহিনী বাদ দে, আমরা যা বলবো হলে তাই হবে। তখন তরুন বলে, আমারে চিনিস তুই, আমি কে? এখনও ভালই ভালই ৪২৮ থেকে সবকিছু নিয়ে কোথায় যাবি যা ৩০৮ এ থাকবি নাকি কোথায় থাকবি আমরা জানি না। এইটা বলার পর ইতোমধ্যে রুমের বাইরে করিডোরে ফেলে দেয়া বই খাতা তোশক, বালিশসহ আমার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দিকে ইঙ্গিত করে বলে এইখানে তোর সবকিছু আছে নিয়ে চলে যাস। এছাড়াও লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী তার আবাসিকতা সুনিশ্চিত, হয়রানি করার জন্য তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।

জানা গেছে, অভিযুক্ত তরিকুল ইসলাম তরুন, ফাহিম ফয়সাল, আতাউর রহমান রাজু ছাত্রলীগের হয়ে লালন শাহ হল নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী বলে জানা গেছে। এদিকে অভিযুক্ত তরুণ এর আগে জিয়া হল থেকে দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করে বের করে দিতে চেয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি হিসাববিজ্ঞান বিভাগের রিয়াদ নামে একজনকে বাসের সিট নিয়ে মারার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।


বিজ্ঞাপন


অভিযুক্ত ছাত্রলীগকর্মী ফাহিম ফয়সাল বলেন, আমরা তাকে হল থেকে বের করিনি। বরং মাহাদী ৩০৮নং রুমে প্রায় দুইবছর ধরে থাকে অন্য একজনের আবাসিক সিটে। ওই আবাসিক সিটের ছেলেকে যখন ৪২৮নং কক্ষে দেওয়া হয়, তখন সে ওই কক্ষের আবাসিকতা দাবি করে। তাকে বলা হয়েছে তুমি তো ৩০৮ এ থাকো এখন এখানে কেন? তুমি ওখানেই থাকো বলে তার জিনিস নিয়ে চলে যেতে বলি।

আরেক অভিযুক্ত আতাউর রহমান রাজু বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, অভিযোগকারী শিক্ষার্থীকে সিট থেকে বের করার অভিযোগ মিথ্যা। কারণ সে ওই সিটে উঠেই নি। আর আমরা কোনো আবাসিক ছাত্রকে হলে উঠতে হলে উঠতে বাধা দেইনি। আমরা সবসময়ই বৈধ শিক্ষার্থীদের হলে উঠতে সাহায্য করছি।

লালন শাহ হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। হল সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে বসে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/এইচই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর