শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

অপারেশনের পরদিনই ব্যানবেইসে শিক্ষক, ঘুরছেন অবসরের টাকার জন্য

পিয়াস সরকার
প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:১১ পিএম

শেয়ার করুন:

অপারেশনের পরদিনই ব্যানবেইসে শিক্ষক, ঘুরছেন অবসরের টাকার জন্য
ফাইল ছবি

এক বছর আগে অবসরে গেছেন টাঙ্গাইলের আসিয়া হাসান আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজের এক শিক্ষক। নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত তিনি। চিকিৎসা করাচ্ছেন বাংলাদেশ ও ভারতে। চিকিৎসা ব্যয় ছাড়াও দৈনন্দিন খরচ তো আছেই। অবসরে যাওয়ায় এই খরচ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই অবসরের টাকা পেতে নিয়মিত আসছেন বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোতে (ব্যানবেইস)। কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও অবসরের টাকা পাননি এই শিক্ষক। কবে পাবেন তাও জানেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই শিক্ষক বলেন, আমি নানা রোগে আক্রান্ত। আমার পায়ের মাংস বৃদ্ধি পেয়েছিল। তাই সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকায় এসে অপারেশন করি। দেশে চিকিৎসার পাশাপাশি আমি বছরে একবার ভারতে যাই চিকিৎসার জন্য। কিন্তু অবসরে যাওয়ার পর খুব বিপদে আছি। টাকাটা না তুললে চিকিৎসা যে হচ্ছে না। তাই ভাবলাম ঢাকাতেই যেহেতু আছি খোঁজ নিয়ে যাই। টাকা ছাড়া যে আর চলছে না।


বিজ্ঞাপন


Benbaisব্যানবেইস কার্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পলাশী এলাকায়। এখান থেকে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা অবসরোত্তর টাকা পেয়ে থাকেন।

মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সরেজমিন ব্যানবেইসে গিয়ে এবং সেখানে উপস্থিত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে দেখা যায়, টাকা পেতে আগে অনেক ঝামেলা হলেও বর্তমানে সকল কার্যক্রম অনলাইনে হওয়ায় ঝামেলা কিছুটা কমেছে। তবে ঊর্ধ্বতন কারও সুপারিশ না হলে শিক্ষকদের অবসরের টাকার জন্য তিন থেকে চার বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। চাকরি থেকে অবসরের পর জীবনের শেষ গচ্ছিত এই টাকা তাই সময়মতো না মেলায় শিক্ষকদের পড়তে হয় নানা সমস্যায়।

ব্যানবেইসে কথা হয় বগুড়া শাহজাহানপুর দারুল উলুম দাখিল মাদরাসার শিক্ষক মোবারক হোসেনের সঙ্গে। তিনি ২০১৯ সালে অবসরে যান। কিন্তু এখনো মেলেনি অবসরের টাকা। তিনি বলেন, এদের নিয়ম ভালো। কিন্তু টাকা দিতে অনেক দেরি করে। চাকরি শেষে টাকা না পেলে চলব কিভাবে? টাকার সর্বশেষ তথ্য নিতে এ নিয়ে চারবার আসলাম। তারা শুধু বলছেন, হবে। কিন্তু কবে হবে সেটা আর বলেন না।

Benbaisতিনি আরও বলেন, আমি ১৯৮৫ সালে চাকরিতে যোগ দেই। ১৯৯৬ সালে এমপিওভুক্ত হই। এই বৃদ্ধ বয়সে তিন বছর ধরে অপেক্ষা করছি, কিন্তু টাকা আর পাচ্ছি না। কবে পাব তাও জানি না।


বিজ্ঞাপন


ব্যানবেইসে অপেক্ষারত একাধিক শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুর্নীতির মুখে তাদের পড়তে হয়নি বা ঘুষ দিতে হয় না। কিন্তু কারো কোনো কাগজের সঙ্কট থাকলে তা জমা দিতে ভোগান্তি পোহাতে হয় অনেক। আবার ঊর্ধ্বতন কারো সুপারিশ নিয়ে কোনো শিক্ষক আসলে তিনি আগে টাকা পেয়ে যান। প্রত্যেকেই বলেন, তিন থেকে চার বছর অপেক্ষা করতে হয় টাকার জন্য।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যানবেইসের মহাপরিচালক মহিবুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, দেরি হওয়ার কারণ আমাদের ফান্ড কম। আমরা এই সঙ্কট মোকাবিলায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাথে বৈঠক করেছি। আশা করছি শিগগিরই সুফল পাব।

পিএস/জেএম/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর