শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ঢাকা

আন্দোলনের ‘ফাঁদে’ বশেমুরবিপ্রবি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০২২, ০৫:৫৫ পিএম

শেয়ার করুন:

আন্দোলনের ‘ফাঁদে’ বশেমুরবিপ্রবি
ছবি: ঢাকা মেইল

শিক্ষকদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত ৯ নভেম্বর থেকে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) বন্ধ রয়েছ অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম। এতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষাও থমকে গেছে। শিক্ষকদের এই আন্দোলনের ফলে বেশ কয়েকটি বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষাও শেষ হয়নি। সবমিলিয়ে চলতি বছরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাধিক আন্দোলনের ফলে পিছিয়ে পড়েছে বশেমুরবিপ্রবি।

বর্তমান সময়ে যেখানে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার শেষ করছে, সেখানে বশেমুরবিপ্রবির বেশ কয়েকটি বিভাগ নিজেদের শিক্ষাবর্ষের প্রথম সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষাই শুরু করতে পারেনি। ফলে ইতোমধ্যেই অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেশ পিছিয়ে পড়েছেন বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা।


বিজ্ঞাপন


যদিও ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী ইতোমধ্যেই তীব্র ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারবে কি-না এ নিয়েও চিন্তিত অনেক শিক্ষার্থীরা। আবার অনেকেই দাবি করেছেন- অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিছিয়ে পড়ায় চাকরির বাজারেও তারা পিছিয়ে পড়েছেন।

>> আরও পড়ুন: হল-ল্যাব নয়, বশেমুরবিপ্রবিতে নির্মাণ হবে হাইটেক পার্ক

বশেমুরবিপ্রবির অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবদুস সালাম ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই সেশন জটে আছি। চরম হতাশার মধ্যে আমাদের দিন কাটছে। বারবার অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় আমরা পড়াশোনায় ঠিকমতো মন দিতে পারছি না। দ্রুত এটার সমাধানে আসা উচিত।’

এর আগে গত ৯ নভেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধের ডাক দেয় বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি। ওই বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘শিক্ষক সমিতি ও শিক্ষকবৃন্দের অভিন্ন নীতিমালা নির্দেশিকাটি হুবহু গ্রহণ করার ব্যাপারে তীব্র আপত্তি থাকা সত্ত্বেও শিক্ষকদের সাধারণ সভার পরামর্শ মোতাবেক অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক গঠিত অভিন্ন নীতিমালা পর্যালোচনা কমিটির কোনো সুপারিশ গ্রহণ না করে, রিজেন্ট বোর্ডে ইউজিসি কর্তৃক প্রেরিত অভিন্ন নীতিমালা নির্দেশিকাটি হুবহু অনুমোদন করা হয়েছে।’


বিজ্ঞাপন


>> আরও পড়ুন: রাবি থেকে বিলুপ্তির পথে বিরল প্রজাতির জলমুরগি

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘ইউজিসি কর্তৃক প্রেরিত অভিন্ন নীতিমালায় শিক্ষকদের নিয়োগ ও পদোন্নতির বিভিন্ন শর্তের অস্পষ্টতা ও অসামঞ্জস্যতা বিদ্যমান থাকায় এবং অভিন্ন নীতিমালা পর্যালোচনা কমিটির কোনো সুপারিশ গ্রহণ না করায় বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষকবৃন্দ জরুরি সাধারণ সভায় নীতিমালাটি প্রত্যাখ্যান করে। উক্ত বিষয়ে দৃশ্যমান সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার সর্বসম্মতিক্রমে সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দকে আগামী ৯ নভেম্বর তারিখ হতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’

>> আরও পড়ুন: এবার লেখক আনিসুল হককে হেয় করে কারিগরি বোর্ডের প্রশ্ন

এ বিষয়ে কথা হলে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে দেবো। তারা পিছিয়ে থাকবে না। তাদের বিষয়টা নিয়ে আমাদেরও চিন্তা আছে।’

সার্বিক বিষয়ে কথা হলে বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য ড. এ কিউ এম মাহবুব ঢাকা মেইলকে বলেন, মোট ৩৫০ জনের মতো শিক্ষকের মধ্যে ১০০ জনই বাইরে (আন্দোলনে) আছে। আমাদের শিক্ষক লাগবে কিন্তু আমি কিছুই করতে পারছি না। তারপরও আমি আবার তাদের সঙ্গে বসব এবং রিজেন্ট বোর্ডে বিষয়টি আবারও তুলব।

উপাচার্য বলেন, ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকলে দিনশেষে শিক্ষার্থীরাই সমস্যায় পড়বে। শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করেই দ্রুত বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা করছি।

/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর