শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

করোনাপরবর্তী শিখন ঘাটতি পূরণে 'ফ্লেক্সিবল লার্নিং প্যাকেজ'

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০১:০১ পিএম

শেয়ার করুন:

করোনাপরবর্তী শিখন ঘাটতি পূরণে 'ফ্লেক্সিবল লার্নিং প্যাকেজ'

করোনা মহামারির সময় দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের, বিশেষ করে ঢাকার নিম্ন আয়ের এলাকার শিক্ষার্থীদের নিয়মিত লেখাপড়ায় দেখা দেয় ঘাটতি। দীর্ঘদিন শ্রেণিভিত্তিক পড়াশোনায় অনিয়মিত থাকায় স্কুল খোলার পর নতুন শ্রেণিতে পুরোপুরি সক্রিয়ভাবে পড়াশোনায় সাড়া প্রদানে বেগ পাচ্ছে অনেক শিশু।

বিগত বছরের এই শিখন ঘাটতি কমিয়ে এনে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য ক্লাসের মূলধারায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে ‘ফ্লেক্সিবল লার্নিং প্যাকেজ’। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের সহায়তায় এই প্রশিক্ষণ রিসোর্স মডিউলটি তৈরি করেছে উন্নয়ন সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং বাস্তবায়নকারী পার্টনার সংস্থা সুরভি।


বিজ্ঞাপন


বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সিরডাপ মিলনায়তনে প্যাকেজটি উদ্বোধন করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর ‘চাইল্ড ব্রাইড টু বুকওয়ার্ম’প্রকল্পের আওতায় এই মডিউলটি ঢাকার ২২টি মাধ্যমিক স্কুলে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণে ব্যবহার করা হবে। প্যাকেজটিতে মোট তিনটি বিষয় (বাংলা, ইংরেজি ও গণিত) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতেরর মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, করোনা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় এক নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে। অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়নের মাধ্যমে আমরা সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অনেকটা সক্ষম হই। তবে সরাসরি ক্লাসের বিকল্প অনলাইন ক্লাস নয়। সরাসরি ক্লাসে শিক্ষার্থীদের শিখন অনেক বেশি কার্যকর হয়। দীর্ঘদিন বিরতি থাকার ফলে কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এই শিখন ঘাটতি পূরণে কাজ করে চলেছে। আর তাই এই ফ্লেক্সিবল লার্নিং প্যাকেজের পরিধি আরও বাড়ানো প্রয়োজন।

নেহাল আহমেদ বলেন, শিখন ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি ‘জেন্ডার ইকুইটি মুভমেন্ট ইন স্কুলস (জেমস) কার্যক্রমকে আরও ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন, যাতে করে সমাজে জেন্ডার সমতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা নিশ্চিত হয়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, করোনাকালীন সৃষ্ট শিক্ষার্থীর শিখন ঘাটতি পূরণে শিক্ষকরাই প্রধান নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করবেন। শিক্ষকরা ফ্লেক্সিবল লার্নিং প্যাকেজটি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির নির্দেশিকা যথাযথভাবে অনুসরণ করে পাঠদান করলে এই ঘাটতি পূরণ সম্ভব।


বিজ্ঞাপন


বিশেষ অতিথি মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন বলেন, বাংলাদেশে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচিত ছিল না। করোনা পরিস্থিতিতে আমরা এই বিষয়ে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছি। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ ও দ্য এডুকেশন কমিশনের এক সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষায় দক্ষিণ এশিয়ায় সেরা। আন্তর্জাতিক এই মানদণ্ডকে বজায় রাখতে বাংলাদেশ সরকার শিক্ষাব্যবস্থায় দলীয় কাজসহ বিভিন্ন আনন্দদায়ক পরিবেশে শিখন ব্যবস্থা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে। পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মাউশির পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ড. একিউএম শফিউল আজম, সুরভির নির্বাহী পরিচালক মো. আবু তাহের, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার বিষয়ক থিমেটিক লিড ড. ফেরদৌসি বেগম এবং এডুকেশন স্পেশালিস্ট ফারজানা বারী।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্লেক্সিবল লার্নিং প্যাকেজটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যা শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি চিহ্নিত করার পর তা দূর করতে সহায়তা করবে, সেই সাথে শিক্ষার্থী যে যেই শ্রেণিতে বর্তমানে অধ্যয়ন করছে সে শ্রেণির সমমানের লেভেলে তাকে নিয়ে যাওয়া যায়। এই প্যাকেজের অনুশীলনগুলো যথাযথভাবে শিখনের মাধ্যমে শিক্ষার্থী দ্রুততার শ্রেণিতে অধ্যয়নের উপযোগী দক্ষতা অর্জন করতে পারবে। ফলে শিখন ঘাটতি দূর করে নিজ শ্রেণির জন্য নির্ধারিত যোগ্যতা অর্জনের জন্য শিক্ষার্থীরা প্রস্তুত হতে পারবে।

ডব্লিউএইচ/জেবি

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর