শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস আজ 

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০২:০৩ এএম

শেয়ার করুন:

আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস আজ 

আজ ৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে জাতীয় পর্যায়ের পাশাপাশি জেলা পর্যায়েও দিবসটি উদযাপন করা হবে। এবারের সাক্ষরতা দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সাক্ষরতা শিখন ক্ষেত্রের প্রসার’। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

এদিকে দেশ স্বাধীন হওয়ার অর্ধশতক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো শতভাগ স্বাক্ষরতার মাইফলক ছুঁতে পারেনি বাংলাদেশ। খোদ সরকারি হিসেবই বলছে, বর্তমানে দেশের সাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক ৬ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি ৪ জন মানুষের মধ্যে একজন অক্ষরজ্ঞানহীন। সবমিলিয়ে এর সংখ্যা প্রায় চার কোটি। তবে এসব নিরক্ষর মানুষকে সাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন করে তুলতে উদ্যোগ নিয়ে সরকার। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেই শতভাগ সাক্ষরতা অর্জন করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এমপি।  তিনি বলেন, দেশে বর্তমান সাক্ষরতার হার ৭৫.৬ শতাংশ। নানা কার্যক্রমের কারণে সাক্ষরতার হার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এখনো ২৪.৪ শতাংশ জনগোষ্ঠী নিরক্ষর। এ সকল নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে সাক্ষর করাতে না পারলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে না।


বিজ্ঞাপন


তিনি আরো বলেন, মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাব্যুরোর মাধ্যমে দেশের সুবিধাবঞ্চিত নিরক্ষর জনগোষ্ঠিকে মৌলিক শিক্ষাসহ দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ মানবসম্পদে গড়ে তোলার দঢ় প্রত্যয় নিয়ে ব্যুরোর ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ব্যুরোর জনবল কাঠামো শক্তিশালীকরণ, ব্যুরোর সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সক্ষমতার আলোকে নিয়মিত কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন ইত্যাদি বিষয় কর্মপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। 

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, সরকার দেশের ৬৪ জেলায় নির্বাচিত ২৪৮টি উপজেলার ১৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী ৪৪ লাখ ৬০ হাজার নিরক্ষরকে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাব্যুরোর মাধ্যমে 'মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্প (৬৪ জেলা)' বাস্তবায়ন কার্যক্রম ৩০ জুন ২০২২ তারিখে সম্পন্ন করা হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে ১৩৪টি উপজেলায় ৩৯ হাজার ৩১১টি শিখন কেন্দ্রের মাধ্যমে ২৩ লাখ ৬০ হাজার জন এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ৬০টি জেলার ১১৪টি উপজেলায় ৩৫ হাজার শিখন কেন্দ্রের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে ২১ লাখ নিরক্ষর নারী-পুরুষকে সাক্ষরতা প্রদান করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সকল শিশুর জন্য মানসম্মত ও যুগোপযোগী শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) বাস্তবায়ন করছে। পিইডিপি-৪-এর সাব-কম্পোনেন্ট ২.৫ এর আওতায় ৮ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত বয়সি বিদ্যালয় হতে ঝরে পড়া শিক্ষার্থী এবং যারা কখনও স্কুলে ভর্তি হয়নি এরূপ ১০ লাখ শিশুর মধ্যে ১ লাখ শিশুর শিক্ষাদান (পাইলট কর্মসূচির মাধ্যমে ৬টি জেলায়) সমাপ্ত হয়েছে এবং অবশিষ্ট ০৯ (নয়) লাখ শিশুর শিক্ষা প্রদান কার্যক্রম চলমান আছে।

কীভাবে ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ সাক্ষরতা অর্জন করা হবে—এর রূপরেখা সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, দেশে এখনো সাক্ষরতার কোনো রূপরেখা তৈরি করা হয়নি। কতটুকু শিখলে সাক্ষরতা জ্ঞান অর্জন হবে তার একটি রূপরেখা করা হবে। দেশে চার কোটি মানুষের বেশি এখনো সাক্ষরতার বাইরে রয়েছে। তাদেরকে এর আওতায় আনা হবে।


বিজ্ঞাপন


আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে প্রাথমিক এবং গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আজ সকাল ১১টায় মহাখালীস্থ উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো (বিএনএফই) অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। সভায় সভাপতিত্ব করবেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান। 

এছাড়াও দিবসের তাৎপর্য ও গুরুত্ব তুলে ধরে এদিন ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে আলোচনা এবং মোবাইল ফোনে ক্ষুদে বার্তা প্রেরণ করা হবে। 

প্রসঙ্গত, ১৯৬৫ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেস্কো) ৮ সেপ্টেম্বরকে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও সমাজের মধ্যে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও তাৎপর্য তুলে ধরার লক্ষ্যে এ দিবসটি নির্ধারণ করা হয়। ১৯৬৬ সালে বিশ্বে প্রথম আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালন করা হয়। প্রতিবছর এ দিবসটি উদযাপনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন দেশের সাক্ষরতা এবং বয়স্ক শিক্ষার অবস্থা তুলে ধরা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে প্রথম সাক্ষরতা দিবস উদযাপিত হয়। 

এসএএস/এমএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর