জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের আমেজের মধ্যে শিক্ষার্থীদের পছন্দ ও প্রত্যাশা নিয়ে এক বিশেষ জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ‘সোচ্চার-টর্চার ওয়াচডগ বাংলাদেশ’। জরিপে দেখা গেছে, আসন্ন নির্বাচনে ভিপি, জিএস ও এজিএস পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহিদ রফিক ভবনের নিচে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়। গবেষণা সহকারী জুনায়েদ আহমেদ সবুজ এই জরিপের তথ্যগুলো তুলে ধরেন।
বিজ্ঞাপন
জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, ভিপি পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত 'অদম্য জবিয়ান ঐক্য' মো. রিয়াজুল ইসলামের ৪৩ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের এ কে এম রাকিব পেতে পারেন ৪০ দশমিক ৪৮ শতাংশ ভোট। জিএস পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের আব্দুল আলিম আরিফ ৪১ দশমিক ৬৫ শতাংশ ভোট পেয়ে বড় ব্যবধানে এগিয়ে থাকবেন। এ পদে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের খাদিজাতুল কুবরা পেতে পারেন ২৯ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে এজিএস পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত মাসুদ রানা ৪০ দশমিক ৫৫ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন; তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের বি এম আতিকুর রহমান তানজিল পেতে পারেন ২৯ শতাংশ ৩৪ শতাংশ ভোট।
এদিকে জরিপে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী এখনও সিদ্ধান্তহীন। ভিপি পদে ৪১ শতাংশ এবং জিএস পদে ৩৭ দশমিক ৪ শতাংশ ভোটার কাকে ভোট দেবেন সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
ভোটারদের অংশগ্রহণ ও অভিজ্ঞতা বিষয়ে জরিপে দেখা যায়, ৮৫ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ভোটাধিকার প্রয়োগে আগ্রহী। একই সঙ্গে ক্যাম্পাসে নির্যাতনের অভিজ্ঞতার কথাও উঠে এসেছে ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী সরাসরি শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং ৩৪ দশমিক ৪ শতাংশ অন্যদের নির্যাতিত হতে দেখেছেন। তবু ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী আশাবাদী যে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ক্যাম্পাসকে নির্যাতনমুক্ত করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, জরিপটি ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০২ জন শিক্ষার্থীর ওপর পরিচালিত হয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩৭ দশমিক ২ শতাংশ নারী এবং ৮ দশমিক ৩ শতাংশ অমুসলিম শিক্ষার্থী ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
এসময় জুনায়েদ আহমেদ সবুজ বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশার জায়গায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে আবাসন সমস্যার সমাধান, খাবারের মান উন্নয়ন এবং নিরাপদ ও সহিংসতামুক্ত ক্যাম্পাস। ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রার্থীর ব্যক্তিত্ব, সততা এবং জুলাই আন্দোলনে ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিপরীতে মাদকাসক্তি, চাঁদাবাজি বা ছাত্র নির্যাতনে জড়িত কোনো প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ার ব্যাপারে শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট অবস্থান জানিয়েছেন।
প্রতিনিধি/ক.ম/

