জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) একাধিক জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির ব্যানারে আয়োজিত বারবিকিউ অনুষ্ঠান ঘিরে ক্যাম্পাসে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির উদ্যোগে এসব আয়োজন করা হলেও প্রতিটি সমিতিতে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থায়নের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল–সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভিক জবিয়ান’ প্যানেলের বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, নড়াইল, সিরাজগঞ্জ, সাতক্ষীরা, যশোরসহ কয়েকটি জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির বারবিকিউ অনুষ্ঠানে জবি ছাত্রদল ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থায়ন করেছে। জকসু নির্বাচন সামনে রেখে ধারাবাহিকভাবে অর্থ বিতরণ ও ভোজের আয়োজনকে অনেক শিক্ষার্থী সরাসরি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হিসেবে দেখছেন। তাঁদের অভিযোগ, জেলা কল্যাণের নাম ব্যবহার করে ছাত্রদল–সমর্থিত ঐ প্যানেল শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে।
বিজ্ঞাপন
জকসু নির্বাচনী আচরণবিধিমালার প্রার্থীর খরচ সংক্রান্ত বিধি ১৭(ক)-এ বলা হয়েছে, একজন প্রার্থী হল সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা এবং কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা ব্যয় করতে পারবেন। একই বিধির ১৭(খ)-এ উল্লেখ রয়েছে, নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে নির্ধারিত টাকার অতিরিক্ত আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে।
এদিকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে খাবার, আপ্যায়ন ও আর্থিক সুবিধা প্রদান নিয়ে ক্যাম্পাসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী প্রশ্ন তুলছেন, একটি ছাত্রসংগঠন কীভাবে একযোগে একাধিক জেলা কল্যাণে বড় অঙ্কের অর্থায়ন করতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের তদারকি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এ বিষয়ে জবি শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনের আগে হঠাৎ করে এতগুলো জেলা কল্যাণে ৪০–৫০ হাজার টাকা করে দিয়ে বারবিকিউ আয়োজন নিছক সামাজিক হলে এত সমন্বিতভাবে হতো না।’
জেলা ছাত্রকল্যাণের কর্মসূচিতে ছাত্রসংগঠন থেকে অর্থ নেওয়া যায় কি না—এ বিষয়ে জানতে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রকল্যাণের সাধারণ সম্পাদক সোহেলুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আধা ঘণ্টা পরে ফোন দিন, আমি এখন ব্যস্ত আছি।’
বিজ্ঞাপন
অভিযোগ প্রসঙ্গে জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘শিক্ষার্থী হিসেবে তারা আমাদের দাওয়াত দিচ্ছে, তাই আমরা যাচ্ছি। এসব বারবিকিউ পার্টিতে অনুদান দেওয়ার মতো অর্থ আমাদের কাছে নেই। যারা এসব অভিযোগ করছে, তারা আমাদের বিতর্কিত করতেই এসব বলছে।’
এ বিষয়ে জকসু নির্বাচন কমিশনার ও আইন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বারবিকিউ পার্টির বিষয়টি নিয়ে এখনো কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ দেয়নি। আমরা এ বিষয়ে অবগত নই। তাই এ মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।’
এআর

