প্রস্তাবিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’র এক দফা অধ্যাদেশের দাবিতে শিক্ষা ভবন অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তারা ঢাকা কলেজের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে যাত্রা শুরু করেন।
এ সময় ‘সিন্ডিকেটের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’; ‘সিন্ডিকেটের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’; ‘তালবাহানা বন্ধ করো, অধ্যাদেশ জারি করো’; ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’; ‘সিন্ডিকেটের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’ প্রভৃতি স্লোগান দেন তারা।
বিজ্ঞাপন
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী সাবের আহমেদ বলেন, ‘আমরা নানা আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। সাত কলেজের অবস্থা কী ভয়াবহ সেটা আমরা সবাই জানি। ঠিকমতো ক্লাস না করা, ক্লাসরুম সংকট, ল্যাব সংকট, পরীক্ষার খাতা অবমূল্যায়নসহ নানা ধরনের সমস্যায় জর্জরিত সাত কলেজ।’
তিনি আরও বলেন, ‘যখনই সমাধান হিসেবে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, তখন থেকেই অসাধু চক্রের একটি মহল এর বিরোধিতা করে যাচ্ছে। একেক সময় একেক পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে আমাদের। আমাদের পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটছে। অধ্যাদেশ দিবে বলে এখনও দিচ্ছে না। আমরা চাই রাষ্ট্রপতি অতিসত্বর অধ্যাদেশ জারি করুক।’
গত বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে ৭ ডিসেম্বর (রোববার) অধ্যাদেশের দাবিতে লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণা দেন সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের অন্যতম প্রতিনিধি আব্দুর রহমান।
এদিকে পাল্টা কর্মসূচি পালন করছেন রাজধানীর পাঁচ কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির স্কুলিং মডেল বাতিলের দাবিতে বর্তমানে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। তারা বলেন, এই মডেল বাস্তবায়িত হলে উচ্চমাধ্যমিকের স্বতন্ত্রতা হারানোর পাশাপাশি সাত কলেজের বহু বছরের ঐতিহ্য হুমকির মুখে পড়বে।
বিজ্ঞাপন
গতকাল শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের জুম মিটিংয়ে ফাঁস হওয়া অডিও ক্লিপে ঢাকা কলেজের শিক্ষক রফিকুল আলমের বক্তব্য— যেখানে তিনি শিক্ষকদের দাবিতে ‘ছাত্রদের দিয়ে কাউন্টার মব’ তৈরি করার পরিকল্পনার কথা বলেন। যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
অন্যদিকে, ইতোমধ্যে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে একীভূত করে ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে নতুন একটি স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার। গত ১২ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ব্যক্তিগত ধারণা, অসম্পূর্ণ তথ্য বা গুজবের ভিত্তিতে বিভ্রান্তি কিংবা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি না করে সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানানো হচ্ছে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মূল্যবান শিক্ষা জীবন যাতে কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়, সে বিষয়ে সচেতন থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সরকারি সাত কলেজগুলো হলো— ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ এবং সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ।
এম/এফএ

