শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার বলেছেন, সাংবাদিক সমাজ ও তাদের পরিবারকে সহায়তা করা শুধু মানবিক দায়িত্বই নয়, রাষ্ট্রেরও নৈতিক কর্তব্য। এ দায়িত্ব পালনের উদ্যোগ নেওয়ায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠান এনআরবিসি ব্যাংককে তিনি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও সাধুবাদ জানান।
বৃহস্পতিবার (২৭নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) উদ্যোগে প্রয়াত সাংবাদিকদের সন্তানদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি প্রদান ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মাদ আব্দুল কাইয়ুম খান। এ সময় ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং প্রয়াত সাংবাদিকদের পরিবারবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘রাষ্ট্রের সব দায়িত্ব সবসময় প্রত্যাশিত মাত্রায় পালন করা সম্ভব হয় না। সেখানেই নাগরিক সমাজ এবং ডিআরইউ-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রয়াত সাংবাদিকদের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি এবং তাদের ব্যক্তিত্ব ও প্রতিভা বিকাশে আপনাদের ধারাবাহিক উদ্যোগ সত্যিই অনুকরণীয়।’
বিজ্ঞাপন
উপদেষ্টা তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রয়াত সাংবাদিক আনোয়ারুল হকের কথা স্মরণ করে বলেন, ডিআরইউ প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্নে কিছু সাংবাদিক ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ায় নিজেদের সংগঠন তৈরির শক্ত সংকল্প থেকেই এই প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। আজকের এই অগ্রযাত্রা সেই সাফল্যের সাক্ষ্য বহন করে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘রিপোর্টারদের কর্মব্যস্ততার কারণে পরিবার, বিশেষত সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটাতে না পারা একটি বড় বেদনা। সেই শূন্যতা পূরণে সহকর্মী ও সংগঠনের পক্ষ থেকে যে সহমর্মিতা ও দায়বদ্ধতা আপনারা দেখাচ্ছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়।’
উপদেষ্টা ডিআরইউ পরিচালিত উইকেন্ড স্কুল, যেখানে শিশুদের সংগীত, নৃত্য, আবৃত্তি ও অন্যান্য প্রতিভা বিকাশের সুযোগ দেওয়া হয় এই উদ্যোগকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন এবং ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানটির একটি পূর্ণাঙ্গ স্কুল প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে ‘অত্যন্ত বাস্তবসম্মত ও অর্জনযোগ্য’ হিসেবে অভিহিত করেন।
এনআরবিসি ব্যাংকের ভূমিকার প্রশংসা করে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘ব্যাংকিং সেক্টরে নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও যে অঙ্গীকার নিয়ে তারা এই সামাজিক দায়িত্ব বহন করছে, তা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক।’
অনুষ্ঠানে ডিআরইউর পক্ষ থেকে দুটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে শিক্ষা উপদেষ্টা জানান, বিষয়গুলো তিনি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবেন এবং রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব সহায়তা করবেন।
সিআর আবরার বলেন, ‘প্রতিদিন নানান দাবিদাওয়ার কর্মব্যস্ততার মধ্যে মানবিক কোনো কাজে সময় দেওয়া যায় না। কিন্তু আজ এখানে এসে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর যে মহত্তর উদ্যোগ দেখলাম তা সত্যিই হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। ডিআরইউ যেন ভবিষ্যতেও এভাবেই মানবিক দায়িত্ব পালন করে এটাই আমার প্রত্যাশা।’
বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিআরইউর কল্যাণ সম্পাদক রফিক মৃধা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি গাযী আনোয়ার, যুগ্ম সম্পাদক নাদিয়া শারমিন, অর্থ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন, দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি, তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মো. বোরহান উদ্দিন, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মজিবুর রহমানসহ এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির হেড অব কমিউনিকেশন ডিভিশন মো. হারুন-অর-রশিদ।
বিইউ/ক.ম

