ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে কিছু মানুষের কাছে সমালোচিত হওয়া ডাকসুর কার্যনির্বাহী সদস্য সর্ব মিত্র চাকমা অভিনব এক প্রতিবাদ জানালেন। নিজের একটি কার্টুন ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে নিজেরই ফাঁসি চাইলেন তিনি।
বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে ছবিটি পোস্ট করেন ডাকসু নেতা সর্ব মিত্র। ছবির নিচের দিকে ডানপাশে একজন মাদকসেবীর কার্টুনও রয়েছে। সেখানে সর্ব মিত্রের কার্টুনটির ঠিক মাথার উপরে ইংরেজিতে লেখা ‘ওয়ান্টেড’। নিচে লেখা, ‘মাদকতা বিরোধী অপরাধী’। তার নিচে লেখা ‘ফাঁসি চাই’।
বিজ্ঞাপন
অর্থাৎ, নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তিনিসহ ডাকসু নেতারা যে পরিচ্ছন্নতা এবং মাদকবিরোধী অভিযান চালাচ্ছেন, এছাড়া অস্থায়ী দোকানপাট উচ্ছেদ করছেন, সেসব নিয়ে একটি মহল যে সমালোচনায় মেতে উঠেছেন, নিজের ফাঁসি চেয়ে অভিনব কায়দায় তারই জবাব দিলেন সর্ব মিত্র।
ডাকসু নেতার এই পোস্টের নিচে অনেক নেটিজেন তার এমন প্রতিবাদের প্রশংসা করেছেন। কেউ কেউ তাকে উপাধী দিয়েছেন ‘সাহসী বীর’। আবার একটা শ্রেণি তাকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েনি। তবে প্রশংসাসূচক মন্তব্যই অনেক বেশি পড়েছে সর্ব মিত্রের পোস্টে।
কাজী নুরুল আলম নামে একজন লিখেছেন, ‘সর্ব মিত্র সময়ের সাহসী বীর।’ দ্য আর্থ ওয়াকার নামে একটি আইডি থেকে মন্তব্য, ‘অসাধারণ প্রতিবাদ। হবে একটা কথা, ভালো কিছুর জন্য কোনো সমালোচনায় পিছু হটো না।’
সালমান সাদি বিন মোর্তজা নামে একজনের মন্তব্য, ‘সময়ের সাহসী জবাব।’ সজীবুল ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, ‘সমালোচনা না থাকলে ভালোর মূল্যায়ন হবে না। কাজেই স্পিরিট হারালে চলবে না। ভালো কাজ করে যেতে হবে।’
বিজ্ঞাপন
আসমা খানম নামে এক নারী নেটিজেনের মন্তব্য, ‘সর্ব মিত্র আপনি অসাধারণ কাজ করে যাচ্ছেন। সাবাশ!! ভয় নয়, হোক প্রতিবাদ।’ মিজানুর রহমান একজন লিখেছেন, ‘তোমার মাদকবিরোধী সংগ্রাম প্রশংসনীয়। এগিয়ে যাও প্রিয় সর্ব মিত্র।’
আনিসুর রহমান নামে একজনের মন্তব্য, ‘সমালোচনা না থাকলে কাজ করে মজা নেই। তুমি ঠিক পথেই আছ। এগিয়ে যাও। গাঞ্জার ডিলারকে সরিয়ে দিয়েছ, এতে তো কারও মন খারাপ হতেই পারে।’
আবদুল্লাহ আল মুবিন রিফাত নামে একজন লিখেছেন, ‘তুই এগিয়ে যা Sarba Mitra Chakma, যতদিন দেখবি সমালোচনা এবং সমালোচকদের সংখ্যা বাড়ছে, ততদিন বুঝবি You're on the right track.
এমন চার সহস্রাধিক ইতিবাচক মন্তব্য জমা পড়েছে সর্ব মিত্রের দেওয়া ওই প্রতিবাদমূলক পোস্টে। অন্যদিকে পোস্টটি শেয়ার করেছেন হাজার খানেক নেটিজেন।
প্রসঙ্গত, ডাকসুর নতুন নেতৃত্ব আসার পর থেকেই ঢাবি ক্যাম্পাস এবং এর আশপাশের এলাকায় পরিচ্ছন্নতা ও মাদকবিরোধী অভিযান চলছে খুব জোরেশোরে। সম্প্রতি একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, ঢাবি ক্যাম্পাস এলাকায় বয়োজ্যেষ্ঠ এক লোককে লাঠি হাতে ভয় দেখিয়ে তাড়ানোর চেষ্টা করছেন সর্ব মিত্র ও তার সঙ্গের আরেকজন।
এ ঘটনার নেপথ্যের কারণ না জেনে একটা শ্রেণি সর্ব মিত্রদের ব্যাপক সমালোচনায় মেতে ওঠেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই বৃদ্ধ আসলে মাদক বিক্রি করেন। তাকে ঢাবি ক্যাম্পাস থেকে একাধিকবার সরিয়ে দেওয়া হলেও বারবারই তিনি সেখানে চলে আসেন।
এএইচ
