মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষার্থীর শাস্তির দাবিতে মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, ঢাবি
প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০২:০৪ এএম

শেয়ার করুন:

S
মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট। ছবির ইনসেটে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়। ছবি- ঢাবি প্রতিনিধি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নারী হেনস্তার অভিযোগে তার শাস্তির দাবিতে মধ্যরাতে উত্তাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।  

ওই শিক্ষার্থী সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম রেডডিট-এ অজ্ঞাত পরিচয়ে নারীদের সম্পর্কে অশালীন, অবমাননাকর ও যৌন হয়রানিমূলক মন্তব্য করেন। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্ষণের বিষয়টিও স্বীকার করেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা। 


বিজ্ঞাপন


অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম শ্রীশান্ত রায় (স্টুডেন্ট আইডি- ২১০৬১৬৯) বুয়েটের ‘ট্রিপল ই- ২১’ ব্যাচ ও আহসানউল্লাহ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

বুধবার (২২ অক্টোবর) রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিল ও ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার করার দাবিতে বুয়েট কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সংলগ্ন ডিএসডব্লিউ ভবনের (ছাত্রকল্যাণ পরিদফতর) সামনে জড়ো হন।

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ধর্ষকের ঠিকানা, এই বুয়েটে হবে না’, ‘ধর্ষকদের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, ধর্ষকের বিচার চাই’সহ  নানা স্লোগান দেন।

অভিযুক্ত শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে বুয়েট ২১ ব্যাচের প্রকাশিত ধর্ষণ ও প্রমাণের মিলসমূহ:


বিজ্ঞাপন


১) রেডডিট ব্যবহারকারী নিজেকে ‘বুয়েট ইইই-২১’-এর শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।

২) একাধিক মন্তব্যে সে বাসইউস ব্র্যান্ডের এয়ারবাডস ব্যবহার করেন বলে উল্লেখ করেছেন, যা সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর সঙ্গেও মেলে।

৩) রেডডিট আইডি থেকে জানা যায়, সে জুন মাসে মুসটাং,নেপাল সফর করেছেন— একই সময়ে (৩ জুন) শ্রীশান্ত রায় তার ব্যক্তিগত সোশ্যাল মিডিয়ায় মুসটাং থেকে ছবি পোস্ট করেছেন।

৪) ওই রেডডিট আইডির অশালীন মন্তব্যগুলোর ভাষা, টোন ও লেখনশৈলী বহু সহপাঠী শনাক্ত করেছেন, যা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর স্বভাবগত লেখনভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

৫) যখন বুয়েট শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি বর্জনের পক্ষে সম্মিলিত স্বাক্ষর প্রদান করেন, তখন একমাত্র সেই কাগজে স্বাক্ষর করেননি, যা তার দৃষ্টিভঙ্গি ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘এসব প্রমাণ ও মিলের ভিত্তিতে আমরা দৃঢ়ভাবে সন্দেহ করছি যে, আমাদের ব্যাচের শ্রীশান্ত রায়ই ওই রেডডিট আইডির ব্যবহারকারী এবং সে-ই সচেতনভাবে নারীদের প্রতি অশালীন, লাঞ্ছনাকর ও হয়রানিমূলক আচরণ করেছেন।’

এছাড়া ‘যদি ওর কাছ থেকে আগেও এরকম কোনো আচরণের শিকার হয়ে থাকে বা কোনো প্রমাণ থেকে থাকে, সে যেন গোপনীয়তা বজায় রেখে হলেও সেটা প্রকাশ্যে আনে।’

পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ছাত্রকল্যাণ পরিদফতরের পরিচালক অধ্যাপক ড. এ কে এম মাসুদ লিখিত বিজ্ঞপ্তিতে সাময়িক বহিষ্কারাদেশ জারি করেন। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এতদ্বারা সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগের ‘২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায় (আইডি: ২১০৬১৬৯)-এর ছাত্রত্ব সাময়িকভাবে বাতিল করা হলো।’

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি স্থায়ী বহিষ্কারের বিষয়ে বুধবার (২২ অক্টোবর) বুয়েট উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে জানান অধ্যাপক মাসুদ।

এএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর