বর্তমানে সাক্ষরতা মানে বুঝে পড়া, লিখে মনের ভাব প্রকাশ প্রকাশ, গাণিতিক সমস্যার সমাধানমূলক শিক্ষা, ইত্যাদিকে বোঝানো হয়। তবে নৈতিক শিক্ষা ও মানবিক মুল্যবোধ শেখানো হলেই বাংলাদেশে সাক্ষরতায় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জিত হবে। তাই নিরক্ষর মানুষের জন্য টেকসই সাক্ষরতা নিশ্চিত করে কর্মমুখী দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তর করা প্রয়োজন।‘
আজ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সেমিনারে এমন অভিমত জানিয়েছেন শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্টজনেরা।
বিজ্ঞাপন
‘সাক্ষরতায় বাংলাদেশের অর্জন এবং আগামীর পরিকল্পনা’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনিস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ও দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান। মূল প্রবন্ধে তিনি অভিযোগ করেন, নিম্নমানের প্রাথমিক শিক্ষা পদ্ধতি, কিছু এনজিওর প্রশ্নবিদ্ধ কার্যক্রম, গণসচেতনতার অভাব এবং দুর্বল সাক্ষরতা কার্যক্রমের কারণে নব্য সাক্ষরকারী অনেকেই আবার নিরক্ষতায় ফিরে যাচ্ছেন। তাই সাক্ষরতাকে সাফল্যমন্ডিত করতে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমকে ঢেলে সাজাতে হবে এবং শিক্ষক ও শিক্ষা কার্যক্রমের সংস্কার প্রয়োজন। ‘গ্রাম শিক্ষা ও বিনোদন কেন্দ্র’নামের পাইলট প্রকল্প নেওয়ার পাশাপাশি বর্তমানে চলমান সরকারের কারিগরি শিক্ষাভিত্তিক ‘স্কিলফো (SKILFOÓ)’ প্রকল্প সারাদেশে ব্যাপক প্রসার ঘটাতে হবে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। বিশেষ অতিথি ছিলেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব সোহরাব হাসান, সাবেক শিক্ষিকা ও অভিনেত্রী দিলারা জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক এবং একাডেমিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. কুতুবউদ্দিন, বিএনসিসির সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) নাহিদুল ইসলাম খান, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক দেবব্রত চক্রবর্তী এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক রবিউল কবির চৌধুরী।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব এবং নিমো লার্নিংয়ের চেয়ারম্যান জাফর রাজা চৌধুরী। তিনি জানান, নিমো লার্নিং- একটি শিক্ষা ও গবেষণাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। যেখানে প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে শিশুতোষ লেখাপড়ার উপযোগী বই, খেলনা প্রস্তুত করে থাকে। উন্নত বিশ্বের অনুকরণেই শিশুদের শিখনপদ্ধতিতে আধুনিক এবং আনন্দদায়ক করাই নিমো লার্নিংয়ে উদ্দেশ্য।
জাফর রাজা বলেন, স্কুলগামী একজন শিশু এবং একজন নিরক্ষর মানুষের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। ব্যবধান শুধু বয়স এবং অভিজ্ঞতার। তাই নিমো লার্নিং নিরক্ষর মানুষকে সাক্ষরতা শেখাতে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর পাঠ্যবই এবং শিখন উপকরণ তৈরির মাধ্যমে শিক্ষামূলক ইভেন্ট, প্রশিক্ষণ ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে। নিমো লার্নিং বিশ্বাস করে ‘প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিটি শিক্ষা উপকরণ শিশু এবং নিরক্ষর মানুষকে জ্ঞান, দক্ষতা এবং মানবিকতা শেখাবে।
বিজ্ঞাপন
এমআর/ক.ম

