শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

জকসু সংবিধির প্রস্তাব গৃহীত, ভোটে থাকছে না বয়সসীমা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জবি
প্রকাশিত: ২৬ আগস্ট ২০২৫, ১০:১৩ পিএম

শেয়ার করুন:

জকসু সংবিধির প্রস্তাব গৃহীত, ভোটে থাকছে না বয়সসীমা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ছবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) গঠনের জন্য প্রস্তাবিত সংবিধি সিন্ডিকেট সভায় পাস হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার বা প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বয়সসীমা রাখা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব নিয়মিত শিক্ষার্থী জকসুর ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাত ৯টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।


বিজ্ঞাপন


সিন্ডিকেট সভা শেষে উপাচার্য রেজাউল করিম বলেন, আজকের বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় জকসুর সংবিধির প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার বা রবিবারের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চূড়ান্ত কাজ শেষ করে পরবর্তী পর্যায়ে জকসু আইন করার জন্য পাঠিয়ে দেব। এরপর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারি হবে। তারপরই আমরা রোডম্যাপ ঘোষণা করব।

উপাচার্য আরও বলেন, খসড়ায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা ছিল, সেগুলো পাস হয়েছে। এছাড়া আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে চাকরির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফুলটাইম চাকরি যারা করেন তারা ভোটার হতে পারবেন না। এ বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। তবে খণ্ডকালীন চাকরি যারা করেন তারা ভোটার হতে পারবেন।

জকসুর খসড়া সংবিধি বিশ্লেষণে দেখা যায়, জকসুতে থাকছে না বয়সসীমা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী ছাড়া প্রফেশনাল পিএইচডিসহ কোনো কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা জকসুর সদস্য হতে পারবেন না। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কলেজ বা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও ভোটার হতে পারবেন না। একই সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিশেষ ডিগ্রি বা কোর্সে অধ্যয়নরত কিংবা দেশ-বিদেশের সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত ব্যক্তিরাও ভোটার হওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।


বিজ্ঞাপন


জকসুর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে—১৯৪৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দেশভাগ, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, গণআন্দোলন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানসহ ঐতিহাসিক চেতনাকে ধারণ ও প্রচার করা এবং স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও জাতীয় ঐক্যের চেতনাকে দৃঢ় করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সহযোগিতা গড়ে তোলা; বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের একাডেমিক ও অতিরিক্ত একাডেমিক সুযোগ-সুবিধার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা; শিক্ষার্থীদের প্রকৃত নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা এবং তাদের মধ্যে নেতৃত্বের দক্ষতা তৈরি করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সহযোগিতা করা; দেশ-বিদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ব্যক্তির স্বাধীনতা ও মুক্ত চিন্তার চর্চা নিশ্চিত করা।

জকসুর খসড়া সংবিধিতে উল্লেখ আছে, জকসু হবে ২১ সদস্যের নির্বাহী কমিটি। এর মধ্যে পদাধিকারবলে উপাচার্য হবেন জকসুর নির্বাহী কমিটির সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হবেন নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ। বাকি ১৯ পদে নির্বাচন হবে।

জকসু সংবিধিতে যুক্ত হয়েছে হল সংসদের বিধি। এতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট হলের নাম অনুসারে হল শিক্ষার্থী সংসদের নামকরণ করা হবে। হল সংসদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য সাতটি নির্দেশিকা উল্লেখ করা হয়েছে। হলের প্রভোস্ট পদাধিকারবলে হল শিক্ষার্থী সংসদের সভাপতি হবেন। হল সংসদের নির্বাহী কমিটির সদস্য হবেন ১৭ জন।

এদিন সিন্ডিকেট সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সদস্য বলেন, শিক্ষার্থীদের পক্ষে সব সিদ্ধান্ত হয়েছে। খুব দ্রুতই জকসু হবে। জকসুর রোডম্যাপের বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আইন পাস হওয়ার পরই রোডম্যাপ ঘোষণা হবে। আমরা কাজ করছি দ্রুত শেষ করার জন্য।

এআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর