উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে আইন অমান্য করে কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ এনে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের বাণিজ্য বন্ধের আহ্বান জানানো হয়।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান।
বিজ্ঞাপন
অভিভাবকরা জানান, এসব দাবি শুধু নিহত পরিবারের প্রতি সহানুভূতির জন্য নয়, বরং দেশের সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই জরুরি। এসময় তারা মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হয়রানি, দাবির প্রতি অবজ্ঞা, সামাজিক ও গণমাধ্যমে মানহানিকর বক্তব্য এবং মিথ্যাচারের অভিযোগও তোলেন।
অভিভাবকরা বলেন, কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। এর জন্য এই মৃত্যুর দায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কতৃপক্ষকে নিতে হবে।
তারা উল্লেখ করেন, সেখানে বিল্ডিং তৈরির সময় কোনো কোড অব কন্ডাক্ট মানা হয়নি, কোনো অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না, জরুরি সিঁড়ি বা ফায়ার ডিটেক্টর মেশিনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। দুর্ঘটনার সময় বাচ্চাদের জোর করে কোচিংয়ে বসানো হয়েছিল। ফলে তারা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তাই কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা উচিত।

বিজ্ঞাপন
পরে তাদের ৯ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবির মধ্যে রয়েছে— আইন অমান্য ও নিয়ম ভঙ্গ করে কোচিং বাণিজ্যের মাধ্যমে শিশুদের মৃত্যুর দায়ে মাইলস্টোনের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা, সারাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করা, নিহত পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া, রানওয়ে এলাকা থেকে মাইলস্টোনকে স্থানান্তর করা, কোচিং বাণিজ্যের মূল হোতাদের অপসারণ করে আইনের আওতায় আনা, সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যকারী শিক্ষকদের বরখাস্ত করা, নিহত পরিবারের হয়রানি বন্ধে সরকারি পদক্ষেপ নেওয়া, ঘটনার সিসি ক্যামেরা ফুটেজ প্রকাশ করা এবং জনস্বার্থে দায়ের করা রিট অনুযায়ী সরকারি ক্ষতিপূরণ বাস্তবায়নসহ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জনবসতিহীন এলাকায় স্থানান্তর করা।
অভিভাবকেরা আশা প্রকাশ করেন, সরকারের হস্তক্ষেপে তাদের এই দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়িত হবে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
গত ২১ জুলাই মাইলস্টোন স্কুলে আছড়ে পড়ে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই কোমলমতি শিক্ষার্থী।
এএইচ/এএইচ

