শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

এক যুগেও অনার্স শেষ হয়নি জালালের, দায়ী করছেন ঢাবি প্রশাসনকে

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, ঢাবি
প্রকাশিত: ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১০:৩৯ পিএম

শেয়ার করুন:

Jalal
ঢাবির ২০১৩-১৪ সেশনের টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১৩-১৪ সেশনের টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ। দীর্ঘ ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও অনার্স শেষ করতে পারেননি তিনি। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ছাত্রত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদে আশিকুর রহমান সৈকত লিখেছেন, ‘ভাই, অনেক হইছে এবার থামেন! করোনা চলে গেছে তাও প্রায় ৩ বছর। আর কতকাল আপনি ছাত্র থাকতে চান?’


বিজ্ঞাপন


রকি হাসান লিখেছেন, ‘ভাই, আগে যা গিয়েছে তা বাদ দিন। এবার অ্যাকাডেমিক কাজ শেষ করে হল ছাড়ুন। এতে নিজের ব্যক্তিত্বও থাকবে, সবার ভালোবাসাও পাবেন।’

শামিম মাহফুজ লিখেছেন, ‘এখন কেন বের হচ্ছেন না? এইবারে মাস্টার্সটা শেষ করুন তাহলে? এইবার আবার রিএডমিশন নেওয়ার ধান্দায় আছেন! কেন?’

আরও পড়ুন: ১০ বছরেও শেষ হয়নি অনার্স, কারণ জানালেন মেঘমল্লার বসু

এ বিষয়ে বুধবার (১৩ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদে (ঢাবিশিস) এক ফেসবুক পোস্টে জালাল দায়ী করেন ঢাবি প্রশাসনকে। 


বিজ্ঞাপন


তিনি লিখেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার পড়াশোনা দীর্ঘায়িত হওয়ার জন্য আমি দায়ী নই! প্রশাসন দায়ী! পারলে প্রশাসনের সমালোচনা করুন, আমার নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো অপরাধ করলে সেই দোষ কি আমার? শিক্ষক আন্দোলন ও করোনা মহামারির কারণে পড়াশোনা স্থগিত ছিল! সেটার জন্য কি আমি দায়ী?’

জালাল তার লম্বা শিক্ষা জীবনের পেছনের কারণগুলো উল্লেখ করে লেখেন, ‘আমি সবসময় নতুন সিস্টেম, সিন্ডিকেট এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড আটকে যাওয়া, আরেফিন সিদ্দিক স‍্যার এবং ভর্তি কমিটির সুপারিশে অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করে টিএসসিতে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা দেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায়  চান্স পাওয়ার পরও ভাইভা না ডেকে  রহস্যজনকভাবে ভর্তির সুযোগ থেকে বাদ দেওয়া, উচ্চ আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে ছাত্রত্ব ফিরে পাওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র অবস্থায় বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আসামি হিসেবে একটানা ২২ মাস কারাবন্দি, ২০১৮ সালের ঐতিহাসিক কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে হলছাড়া হওয়া এবং ২০১৯ সালে গুমের শিকার হয়েছি।’

আরও পড়ুন: ১৩ বছর ধরে অনার্সে পড়ছেন ঢাবি ছাত্রদল নেত্রী মানসুরা!

নিজের ছাত্রত্বের বিষয়ে তিনি লেখেন, ‘বহু আইনি লড়াই চালিয়ে ছাত্রত্ব ফিরিয়ে এনেছি এবং টিকিয়ে রেখেছি। আমার এখনো ছাত্রত্ব আছে। ছাত্রত্ব শেষ হয়ে গেলেই হল ছেড়ে দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।’

এর আগে বামপন্থী নেতা ছাত্রনেতা বামপন্থী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সংসদের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ সেশনের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মেঘমল্লার বসু এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী মানসুরা আক্তারের দীর্ঘ সময় ধরে অনার্স শেষ করতে না পারার বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হয়।

এর মধ্যে মেঘমল্লার বসু ১০ বছর ধরে এবং আরও এক ধাপ এগিয়ে মানসুরা আক্তার দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে অনার্সে পড়ছেন ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারা দুজন ডাকসুর ভোটার তালিকায়ও আছেন।

আইএসএস/এএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর