দেশে করোনা ও ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এরই মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল ১০টায় শুরু হয়েছে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। ১০টার আগেই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করেছেন পরীক্ষার্থীরা। আর পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে অপেক্ষা করছেন উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ায় অভিভাবকরা মিশ্র প্রতিক্রিয়াও জানান। সম্প্রতি পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে একদল শিক্ষার্থী ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের সামনে আন্দোলনও করে।
রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্রের সামনে দেখা যায়, পরীক্ষার্থীরা হলে ঢুকে যাওয়ার পর থেকেই সেখানেই অবস্থান করছেন অনেক অভিভাবক। কেন এই ‘উদ্বেগ’ জানতে চাইলে তারা জানিয়েছেন, ‘পাবলিক পরীক্ষা, ঠিকভাবে লিখতে পারবে কিনা সে নিয়ে টেনশন কাজ করছে। এছাড়া করোনা ও ডেঙ্গুর ভয়ও লাগছে।’
বিজ্ঞাপন
এদিকে করোনা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে মাস্ক-হ্যান্ডস্যানিটাইজার বাধ্যতামূলকসহ ৭ নির্দেশনা দিয়েছে বোর্ড। এসব মেনেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল করোনায় ২ জন মৃত্যু ও নতুন করে ২৬ আক্রান্ত।
এছাড়া চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৩৬ জন, যাদের মধ্যে ৫২.৮ শতাংশ পুরুষ ও ৪৭.২ শতাংশ নারী।
বোর্ডে সূত্রে জানা যায়, এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী। তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১১ থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত।
বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর ভাসানটেক সরকারি কলেজের সামনে বসে আছেন আব্দুল জলিল নামের একজন অভিভাবক। তিনি বলেন, আমার মেয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। চিন্তা হচ্ছে প্রথম পরীক্ষা কেমন করছে এবং প্রশ্ন কেমন হয়েছে। এছাড়া করোনার ব্যাপারেও ভয় করছে বলে জানান এই অভিভাবক।
সরকারি বাঙলা কলেজের সামনে বসে আছেন আমেনা বেগম নামের একজন মা। তিনি বলেন, ছেলেকে পরীক্ষার হলে ঢুকিয়ে দিয়ে কেন্দ্রের একপাশে বসে দোয়া করছেন তিনি। তিনি বলেন, আমার ছেলে ভালো শিক্ষার্থী। কিন্তু পাবলিক পরীক্ষায় আসার পর অন্য ধরনের টেনশন কাজ করে।
রউফ আহমেদ নামের একজন অভিভাবক বলেন, দেশে করোনা ও ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভালো নয়। তার মধ্যে এত বড় পাবলিক পরীক্ষা হচ্ছে। এটা নিয়ে ভয় করছে কারণ অনেক সময় সরকারি শুধু নির্দেশনায় দেওয়া হয় সেভাবে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে কাজ হয় না। এছাড়া পরীক্ষার ব্যাপারে স্বাভাবিক একটা একটা ভয় তো কাজ করে। কেমন প্রশ্ন হয়েছে? কতটা ভালো করে উত্তর লিখতে পারছে?
>> আরও পড়তে পারেন
প্রশ্নফাঁসের কোনো সুযোগ অসাধু চক্র পাবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা
এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় বসেছে ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ ছাত্র এবং ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ ছাত্রী। সারাদেশে ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে।
প্রথম দিনে সাধারণ ৯ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ হাজার ৬০৫ কেন্দ্রে বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা হবে। মাদরাসা বোর্ডের অধীন ৪৫৯টি কেন্দ্রে আলিমের কোরআন মাজিদ এবং কারিগরি বোর্ডের অধীন ৭৩৩টি কেন্দ্রে এইচএসসি (বিএম/বিএমটি) পরীক্ষা নেওয়া হবে। সব বোর্ডের প্রথম দিনের পরীক্ষা সকাল ১০টায় শুরু এবং শেষ হবে দুপুর ১টায়।
এএসএল/এএস

