শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

জবির সিন্ডিকেট: ৪ সদস্যকে বাদ দিতে স্মারকলিপি প্রদান, একজনের পদত্যাগ 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, জবি
প্রকাশিত: ০৫ জুন ২০২৫, ০৭:২২ পিএম

শেয়ার করুন:

জবির সিন্ডিকেট: ৪ সদস্যকে বাদ দিতে স্মারকলিপি প্রদান, একজনের পদত্যাগ 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সিন্ডিকেটের সদস্যপদ বাতিল করতে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শততম সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত চার সদস্যকে বাদ দিতে স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা।

স্মারকলিপিতে উল্লেখিত চার সিন্ডিকেট সদস্য হলেন— আইন অনুষদের ডিন খ্রিস্টিন রিচার্ডসন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মনিরুজ্জামান, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক লাইসা আহমেদ লিসা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. ইলিয়াস হোসেন।


বিজ্ঞাপন


স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন— ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. নূর নবী, ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল, ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম, ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহরিয়ার হোসেন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রায়হান হাসান রাব্বি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মাসুদ রানা ও দর্শন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. তাওহিদুল ইসলাম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সদস্যরা হলেন—  উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দীন খান, সামাজিক বিজ্ঞান, আইন ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মো. মোশাররফ হোসেন, একই বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মনিরুজ্জামান, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক লাইসা আহমেদ লিসা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁঞা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. ইলিয়াস হোসেন,  ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক রইছ উদ্দীন, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন মোহাম্মদ আব্দুল মজিদসহ সরকার মনোনীত দুই জন যুগ্ম সচিব।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সিন্ডিকেটে সভার সকল সদস্যকে উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু এদের অধিকাংশ সদস্য বেশিরভাগ সময় অনুপস্থিত থাকেন। যোগাযোগ করার পরও তারা সিন্ডিকেট উপস্থিত হন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম সিন্ডিকেট সভা চলাকালে শিক্ষার্থীরা ‘স্বৈরাচারের দোসর’ আখ্যা দিয়ে উপাচার্যের কক্ষের সামনে চার সদস্যের পদত্যাগ দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের এই চার সদস্য বিগত সরকারের সময়ে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে কাজ করেছেন। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় তারা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। আমরা  সিন্ডিকেট থেকে তাদের পদত্যাগ চাই।


বিজ্ঞাপন


সিন্ডিকেটের সভা শেষে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে উপাচার্যের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক লাইসা আহমেদ লিসা। ২০২৪ সালের ১০ জুন একাডেমিক কাউন্সিলের ৬৩তম সভায় দুই বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয় অধ্যাপক লাইসা আহমদকে।

ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের চার সদস্যকে বাদ দিতে উপাচার্যের কাছে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। তার মধ্যে একজন স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন, বাকি তিনজন এখনও বহাল আছেন। উপাচার্য, মোশাররফ হোসেন স্যার ও রইছ উদদীন স্যার আমাদের অনুরোধ করেছেন বিধায় আমরা কোনো কর্মসূচি দেইনি। এখন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় সিদ্ধান্তেও আসা যায়নি। ক্যাম্পাস খোলার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি সিন্ডিকেট থেকে তাদের বাদ না দেয় আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্তে উপনীত হব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, অধ্যাপক লাইসা আহমেদ লিসার পদত্যাগপত্র আমি পেয়েছি। অন্যান্য সিন্ডিকেট সদস্যদের ব্যাপারে আমরা পরবর্তীতে আলাপ আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। বিশ্ববিদ্যালয় এখন বন্ধ হতে চলছে, কার্যক্রম স্বাভাবিক হলে আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।

এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর