শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

সামান্য ভুলসহও শিক্ষার্থীদের হাতে বই দিতে চান না শিক্ষা উপদেষ্টা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪ জুন ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম

শেয়ার করুন:

সামান্য ভুলসহও শিক্ষার্থীদের হাতে বই দিতে চান না শিক্ষা উপদেষ্টা

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার বলেছেন, সামান্য ভুলসহও পাঠ্যবই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে আমার মন সায় দিচ্ছে না। তাই যত কষ্টই হোক বইগুলো যত্ন এবং দায়িত্বের সঙ্গে নির্ভুল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি । আমি আশাবাদী এনসিটিবি এই গুরুদায়িত্ব পালন করতে পারবে।

বুধবার (৫জুন) মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা এ কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


উপদেষ্টা বলেন, সময়স্বল্পতার কারণে ২০২৬ সালের বই চলমান বছরের কারিকুলাম অনুযায়ী ছাপানো হবে এবং এতে যেসব সাধারণ ভুলভ্রান্তিগুলো ছিল সেগুলো ঠিক করে আগামী বছরের শুরুতেই যাতে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবই হাতে পায় তার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ২০২৫ সালে সম্পন্ন হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তাসহ সকলের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বড় ধরনের নকলের অভিযোগ শোনা যায়নি। ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষা একইভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশা করি এবং এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা চাই।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, আমার পুরো জীবনটাই আমি ব্যয় করেছি নিষ্ঠার সঙ্গে শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। এই লক্ষ্য থেকে শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের গুরুদায়িত্ব আমি গ্রহণ করেছি। যতটুকু সময় এই সরকারের রয়েছে সেই সময়ের মধ্যে কয়েকটি ন্যায়সঙ্গত মৌলিক পরিবর্তন এগিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করছি, যা হবে শিক্ষক এবং ছাত্রবান্ধব। দায়িত্ব নেওয়ার পর শিক্ষাব্যবস্থাকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে অনেকে নানা পরামর্শ দিয়েছেন। আমার নিজেরও রয়েছে অনেক স্বপ্ন।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষা কারিকুলামকে মানসম্পন্ন করা, অনলাইন শিখনের ব্যপ্তি ঘটিয়ে কেন্দ্র থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত একই মানের শিক্ষা নিশ্চিত করা, সাধারণ শিক্ষা ও মাদ্রাসা শিক্ষাকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর করা, কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেওয়া, জাতীয় পর্যায়ে পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভেতরে প্রতিযোগিতা তৈরি করে সব শিক্ষা মাধ্যমগুলোর রেটিং বৃদ্ধি করাসহ আরও অনেক স্বপ্ন রয়েছে।


বিজ্ঞাপন


উপদেষ্টা বলেন, আমরা মনে করি দেশের বেকারত্ব দূর করার ক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষার একটা বিরাট ভূমিকা রয়েছে। সেই লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমরা বিশ্বাস করি কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রম প্রণয়ন এবং ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিখাতের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। সেই লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, গ্লাস ও সিরামিক, চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ ও ঔষধ শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন এবং বিশিষ্ট শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থার চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় করণীয় চিহ্নিত করতে শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, গবেষক, প্রাইভেট সেক্টরের প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কর্মশালা করা হয়েছে। এখানে কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রম এবং দেশ ও বিদেশের শ্রমবাজারে কীভাবে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী কারিগরি শিক্ষায় দীক্ষিত মানবসম্পদ অন্তর্ভুক্ত করা যায় সে বিষয়ে অংশীদারদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে ও পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। কারিগরি শিক্ষাকে ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবক প্রিয় করার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। আমরা মনে করি কারিগরি শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ সীমিত, তাই এই বিষয়ে আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে এবং একইসঙ্গে অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী এবং প্রতিবন্ধীদেরও বেকারত্ব দূর করার জন্য কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষাকে প্রযুক্তি নির্ভর করতে আমরা কাজ করছি।

তিনি আরও বলেন, অবসরপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষকদের সুবিধাবৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার সম্প্রতি ২০০০ কোটি টাকার বন্ড এবং ২০০ কোটি টাকার নগদ বরাদ্দ দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের সমস্যা নিরসনে এটি একটি বড় ধরনের পদক্ষেপ।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সিদ্দিক জোবায়ের এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

বিইউ/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর