যথাযথ শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকাসহ বিভিন্ন জালিয়াতির আশ্রয়ে এমপিওর আবেদন করায় দেশের পাঁচটি মাদরাসা প্রধানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতর। সোমবার (২৭ মে) মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (অর্থ) মো. শরিফুল ইসলামের স্বাক্ষরে পৃথক এই নোটিশ দেওয়া হয়।
নোটিশে খুলনার বেজপাড়া হায়াতুন্নেচ্ছা দাখিল মাদরাসার সুপার এ কে এম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে বলা হয়, আপনার প্রতিষ্ঠানে সহকারী লাইব্রেরিয়ান পদে নিয়োগপ্রাপ্ত মো. নাহিদুজ্জামানের নিয়োগকালীন শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও নভেম্বর-২০২৩, ডিসেম্বর-২০২৩, ফেব্রুয়ারি-২০২৪ এবং মে-২০২৫ মাসে নতুন এমপিও আবেদন করেন। কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতাবিহীন নতুন এমপিও আবেদন না করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া সত্ত্বেও আপনি বারবার নতুন এমপিও আবেদন প্রেরণ করেছেন।
নোটিশে গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার চকশালাইপুর আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, সহকারী শিক্ষক (বাংলা) পদে নিয়োগপ্রাপ্ত গোবিন্দ চন্দ্র সরকারের শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুপযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও তিনি ২০২৪ সালের নভেম্বর ও ২০২৫ সালের মে মাসে দুইবার নতুন এমপিও আবেদন করেছেন। অথচ নীতিমালার স্পষ্ট নির্দেশনা অনুযায়ী, অযোগ্য ব্যক্তির এমপিও আবেদন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
অন্যদিকে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার আউলিয়ারহাট কাজী নিজামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট মো. আছাদুজ্জামানের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে। তিনি পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদের পরীক্ষায় ডিজি প্রতিনিধির অনুপস্থিতিতে নিয়োগের ফল ডিজির স্বাক্ষর জাল করে এমপিও আবেদন করেছেন। এতেও নির্ধারিত প্রক্রিয়া ও কর্তৃপক্ষকে ফাঁকি দেওয়ার সুস্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছে মাদরাসা অধিদফতর।
এ ছাড়া রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার ভাংনী আহমদিয়া ফাজিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. গোফরান আলী ওয়াহেদীও সহকারী লাইব্রেরিয়ান পদে কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও ছয়বার নতুন এমপিও আবেদন করেন। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হলে তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত শুরু হয়।
এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদরাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা’ অনুযায়ী ১৮.১ (গ) ও (ঙ) অনুচ্ছেদে বর্ণিত বিধান অনুসারে তাদের এমপিও সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। একইসঙ্গে আগামী ১৬ জুনের মধ্যে সন্তোষজনক লিখিত ব্যাখ্যা না দিলে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ২২ মে জাল সনদ ও ভুয়া সুপারিশপত্র ব্যবহার করে মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির আবেদনে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতর।
এএসএল

