মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

‘পুলিশের লাঠিচার্জ নিয়ে উপদেষ্টা মাহফুজের দুঃখপ্রকাশ করা উচিত ছিল’

লাবিব বসুনিয়া
প্রকাশিত: ১৫ মে ২০২৫, ০৩:৫৬ পিএম

শেয়ার করুন:

R
কথা বলছেন জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছউদ্দীন। 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের দুঃখপ্রকাশ করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছউদ্দীন। 

একইসঙ্গে তিনি উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে লক্ষ্য করে বোতল নিক্ষেপের ঘটনায় দুঃখপ্রকাশও করেছেন। 


বিজ্ঞাপন


ড. রইছউদ্দীন বলেন, ‘গতকাল আমাদের এখানে (কাকরাইল মোড়ে) একজন উপদেষ্টা এসেছিলেন। তার সঙ্গে একটি ‘বোতলকাণ্ড’ ঘটেছে। আমি শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে তার কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে উপদেষ্টারও দুঃখপ্রকাশ করা উচিত ছিল।’

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে আন্দোলনরত জবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচিতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

আরও পড়ুন: ‘একটি গোষ্ঠী ৯ মাস ধরে আমার ওপর ক্ষেপে আছে, তারাই এটি ঘটিয়েছে’

অধ্যাপক রইছউদ্দীন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিগুলো যৌক্তিক। কিন্তু সরকার আদৌ আছে কিনা বুঝতে পারছি না। দুদিন হয়ে গেল, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো রেসপন্স আসেনি। এ সরকার জুলাই আন্দোলনের ওপর দাঁড়ানো। এখানকার প্রতিটি শিক্ষার্থীও জুলাই বিপ্লবী। সুতরাং আমাদের হুমকি দিয়ে লাভ নেই। আমরা ফ্যাসিবাদকে তাড়িয়েছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।’


বিজ্ঞাপন


এদিকে তিন দফা দাবি আদায়ে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো কাকরাইল মোড় অবরোধ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, মৎস্য ভবন থেকে কাকরাইলের দিকে যাওয়ার সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ফলে একমুখী সড়কের যান চলাচল বন্ধ আছে। এছাড়া কাকরাইল মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন করতে দেখা গেছে। 

আরও পড়ুন: পানির বোতল ছুঁড়ে মারায় কথা শেষ না করেই চলে গেলেন উপদেষ্টা 

এসময় শিক্ষার্থীদের সড়কের মাঝে বসে পড়তেও দেখা যায়। বুধবারের মতো আজও আন্দোলন ঘিরে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার দুপুরে জবির শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে (ইউজিসি) যান। কিন্তু সেখান থেকে আশানুরূপ কোনো ঘোষণা না আসায় তারা ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘জুলাই ঐক্য’ সংগঠনের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।

সেই মতো বুধবার দুপুরে ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাওয়ার সময় কাকরাইল মোড়ে আন্দোলনকারীরা পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। পরে তারা ব্যারিকেড ভাঙতে গেলে তাদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। আন্দোলনকারীদের ওপর টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিচার্জ করা হয়। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ আহত হন অন্তত অর্ধশতাধিক। পরে তাদের অনেককে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: জবি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ-টিয়ারশেল, আহত অর্ধশত

ওইদিন পুলিশের লাঠিপেটায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছউদ্দীনও আহত হন। এছাড়া ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসিরউদ্দিন, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক বেলাল, সহকারী প্রক্টর নাইম সিদ্দিকি, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন লিমন আহত হন।

এ ঘটনার পর ড. রইছউদ্দীন বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার ও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করব।

লং মার্চে পুলিশি বাধার বিষয়ে রমনা জোনের ডিসি মাসুদুল আলম বলেন, ‘পুলিশের ২০ জন সদস্য আহত হয়েছেন। যমুনার সামনে যাওয়া বা সেখানে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করার কোনো সুযোগ নেই।’

তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, কয়েকদিন আগেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে যমুনা ঘেরাও করা হয়েছে। সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তখন কোনো ধরনের বাধা দেয়নি। উল্টো গরমে বিক্ষোভকারীদের স্বস্তি দিতে তাদের ওপর ঠান্ডা পানি স্প্রে করার ব্যবস্থা করেছে সরকার।

এএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর