শোষণ-বৈষম্যহীন ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনে লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশের অন্যতম ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘কোথাও আঘাত ছাড়া অগ্রসর সূর্যালোক নেই’ এই স্লোগানকে ধারণ করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ছাত্র সমাবেশ ও প্রাক্তন পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন বক্তারা।
বিজ্ঞাপন
ছাত্র সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ’র সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি টিকলু কুমার দে এবং সালমান রাহাত।
এসময় মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, ৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পর শাসকের বদল হলেও শাসকের শ্রেণি চরিত্রের কোনো পরিবর্তন হয়নি। অভ্যুত্থানের চেতনা ফিকে হতে বসেছে। অভ্যুত্থানের ৮ মাস অতিক্রম হলেও জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয়নি। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতা৷
তিনি আরও বলেন, শত শত সংস্কারের আলাপের ভিড়ে শিক্ষাখাতের সংস্কারের কোনো আলাপ নেই। এটি মেনে নেওয়া যায় না। ছাত্র ইউনিয়ন তার জন্মলগ্ন থেকেই স্বৈরাচার, সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে এসেছে। মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ ও কমিউনিস্ট পার্টির সাথে মিলিতভাবে ২০ হাজার সদস্যের গেরিলা বাহিনী নিয়ে ছাত্র ইউনিয়ন লড়াই চালিয়ে এসেছে।
মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, ৭৩ বছরের পথচলায় ছাত্র ইউনিয়নকে ধ্বংস করবার বহু প্রচেষ্টা হয়েছে। কিন্তু যারা ছাত্র ইউনিয়নকে ধ্বংসের প্রচেষ্টা চালিয়েছে তারাই ধ্বংস হয়ে গেছে। ছাত্র ইউনিয়ন তার ইতিহাস অর্পিত দায়িত্ব নিয়ে একটি শোষণ-বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, সকলের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ বিনির্মাণের লড়াই চালিয়ে যাবে।
বিজ্ঞাপন
ছাত্র সমাবেশ শেষে সমাবেশ স্থল থেকে শুরু হয়ে একটি র্যালি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সমাবেশ স্থলে এসে শেষ হয়।
ছাত্র সমাবেশ পরবর্তীতে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে প্রাক্তন পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়। প্রাক্তন পুনর্মিলনীতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম এম আকাশ, সাবেক সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান সোহেল, সামসুল আলম সজ্জন, খান আসাদুজ্জামান মাসুম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাজেদুল হক রুবেল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ এবং গাইবান্ধা জেলা সংসদের সাবেক সভাপতি মিহির ঘোষ।
পুনর্মিলনীতে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করেন ছাত্র ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় সংসদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক শাওন কুমার রায়, কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য মারিয়াম বিনতে হাসান ফারিন, চট্টগ্রাম জেলা সাংস্কৃতিক ইউনিয়নের সদস্য স্নেহেন্দু বণিক।
প্রাক্তন পুনর্মিলনীতে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি তাহের উল্লা, লুনা নুর, এসএম শুভ, লাকী আক্তার, মেহেদী হাসান নোবেল, মো. ফয়েজ উল্লাহ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনীষী রায়, ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. শাকিল আখতার, ঢাকা মহানগর সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সাহা, ফয়জুর মেহেদী, জয়পুরহাট জেলা সংসদের সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম নান্নু, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাবেক সভাপতি জাহিদুল ইসলাম সজীব, খায়রুল হাসান জাহিনসহ বিভিন্ন জেলা সংসদের প্রাক্তন নেতৃবৃন্দ।
এসএইচ/এফএ

