জুলাই-আগস্টে গণহত্যা চলার সময়ে নীরবতা পালন করায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে না আসার আহ্বান জানিয়েছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে চলমান গণঅবস্থান থেকে এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ।
তিনি বলেন, জুলাই ও আগস্টে আমরা দুই হাজারেরও বেশি ভাই ও বোনকে হারিয়েছি। কিন্তু পুরো ঘটনার সময় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু চুপ করে ছিলেন। এছাড়া এটিও কারো অজানা নয় যে তিনি হাসিনার অবৈধ নির্বাচনের অবৈধ এমপিদের ভোটে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। একে একে হাসিনা পালিয়েছে। সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। হাসিনার এমপিরাও পালিয়ে গেছে। অথচ রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বহাল আছেন। ছাত্রজনতার পক্ষ থেকে তার পদত্যাগের দাবি জানানো হলেও তিনি সরে যাননি। কিন্তু তাকে জনগণও মেনে নেয়নি। তিনি স্রেফ কায়েমী স্বার্থবাদীদের মদদে টিকে আছেন।
বিজ্ঞাপন
আবদুল ওয়াহেদ বলেন, আমরা স্পষ্ট করে জানাতে চাই, সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে জনগণ জনপরিসরে দেখতে চায় না। তার উচিত বঙ্গভবনের চার দেয়ালের ভেতরে থেকেই জুলাইয়ে নিজের ভূমিকা পর্যালোচনা করা। ফ্যাসিবাদীদের সকলের পতনের পর নিজের টিকে থাকার অনর্থকতা অনুধাবন করা। আশা করছি তিনি বিদায়ের তাগিদ বুঝতে পারবেন। আমাদের দাবি হলো ফ্যাসিস্ট হাসিনার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু জুলাই বিপ্লবের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পা রাখবেন না। তিনি একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসবেন না।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এ আহ্বানের নিন্দা জানিয়ে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাংলাদেশ সমতা পার্টি।
দলটির আহ্বায়ক হানিফ বাংলাদেশীকে বার্তা প্রেরক করে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) কয়েকটি গণমাধ্যমে একটি নিউজ প্রকাশ করেছে যে একটি ছাত্রসংগঠন মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। বাংলাদেশ সমতা পার্টি এই আহ্বানের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অভিভাবক মহামান্য রাষ্ট্রপতি। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে অসংখ্য ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পরাজয় হয়েছে। যারা ছাত্র-জনতা হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের দেশের প্রচলিত আইনের মাধ্যমে শান্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। বর্তমান রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের সংসদ কর্তৃক নির্বাচিত বৈধ রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতি যেমন রাষ্ট্রের অভিভাবক, তেমনি এই পদটি অলংকার সরূপ। এই পদকে অপমান করা মানে রাষ্ট্রকে অবমাননা করা। রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করছেন, মূলত তারা দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। দেশকে নিয়ে সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সমতা পার্টি সব সময় সজাগ থাকবে।
এমএইচটি

