শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ঢাবির সঙ্গে বিচ্ছেদ, সাত কলেজের সামনে ‘নতুন দিগন্ত’

ঢাকা মেইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪২ এএম

শেয়ার করুন:

ঢাবির সঙ্গে বিচ্ছেদ, সাত কলেজের সামনে ‘নতুন দিগন্ত’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সঙ্গে সাত কলেজের সম্পর্ক শেষ হয়েছে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে সাত কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়।

বৈঠক শেষে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র জানান, তাদের জন্য একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


ঢাকা কলেজের প্রিন্সিপাল ও সাত কলেজের সমন্বয়ক অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস জানিয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত হয়েছে, সাত কলেজ আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকবে না। তবে তারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যাবে না।

এর আগে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ জানিয়ে দিয়েছিলেন, ২০২৪-২৫ সেশন থেকে সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি হবে না।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী আসনসংখ্যা ও ভর্তি ফি নির্ধারণসহ অন্যান্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে মন্ত্রণালয়।

এ সময় তিনি জানান, যারা বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পড়াশোনা করছেন, তাদের শিক্ষাজীবন যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্বশীল থাকবে।


বিজ্ঞাপন


এদিকে, সাত কলেজের বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর আন্দোলনের মুখপাত্র আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকছি না, এবং আমাদের জন্য একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। তবে আমাদের আরও কিছু দাবি পূর্ণ হয়নি, যেমন প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের পদত্যাগ, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং হামলার জন্য দায়ীদের বিচারের দাবি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মো. মজিবুর রহমান বলেন, ‘এটা একটি সমাধান নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেবল সিদ্ধান্ত জানিয়েছে, তারা আর শিক্ষার্থী ভর্তি নেবে না। তবে, পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, সেগুলো এখনও পরিষ্কার হয়নি।’

ঢাকা কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, ‘যাদের পরীক্ষা আছে, তাদের পরীক্ষা চলবে। তবে নতুন সেশনে ঢাবি আর ভর্তি নেবে না। তবে সাত কলেজ কোন কাঠামোর অধীনে থাকবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। দ্রুতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

সাত কলেজের অধিভুক্ত ছিল ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুরের সরকারি বাংলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। ২০১৭ সালে কলেজগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়েছিল। এর আগে, এই কলেজগুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল।

গত বছর ৫ আগস্ট থেকেই সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের জন্য স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আন্দোলন শুরু করে। তারা সড়ক অবরোধ, অবস্থান কর্মসূচি ও বিভিন্ন আন্দোলন পরিচালনা করে। এ আন্দোলন আরও তীব্র হয়ে ওঠে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে।

এ সপ্তাহে, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়, যা তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। এর ফলস্বরূপ, ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে।

অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, ‘আমাদের দেশে কোনো সমস্যার সমাধান না হলে তা চূড়ান্ত হয় না। যদি আগেই সমস্যা সমাধান করা হত, তাহলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হত না।’

অন্যদিকে, সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর আন্দোলনের মুখপাত্র আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমরা যৌক্তিক দাবির ভিত্তিতে আন্দোলন করেছি, কিন্তু আমাদের ওপর অনেক নির্যাতন করা হয়েছে।’ সূত্র: ডয়চে ভেলে

এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর