জুলাইয়ের গ্রাফিতি মুছে দেওয়ার চেষ্টায় তুমুল সমালোচনার মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুনরায় গ্রাফিতি এঁকেছে। সেখানে ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধান শেখ হাসিনার ছবিতে জুতা ছুড়ে ক্ষোভ মিটিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা৷
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে পুনরায় ছবি আঁকার পর জনতা জুতা নিক্ষেপ করে।
বিজ্ঞাপন
এসময় শিক্ষার্থীরা, ‘শেখ হাসিনার দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই’, ‘আওয়ামী লীগের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জেলে ভর’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে রাজু ভাস্কর্য প্রাঙ্গণ মুখরিত করে তোলে।
সাদমান আহমেদ তুর্য নামে একজন বলেন, ‘ঘৃণা প্রকাশ করা থেকে আমরা থামতে পারি না। এই হাসিনা ও এই স্তম্ভ বাংলাদেশের একটি ঘৃণার প্রতীক হিসেবে থাকবে চিরকাল।’
বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ বলেন, ‘খুনি হাসিনার জুলাই আগস্ট বিপ্লবের গ্রাফিতি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মুছে ফেলা হয়, তারপর আজকে নতুনভাবে সবাই আবার তাদের ক্ষোভ ও ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। যারা মুছেছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। পাশাপাশি আমরা খুনি হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচার করার দাবি জানাই। গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চাই।’
বিজ্ঞাপন
ছাত্রী ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেন, ‘হাসিনার এই ঘৃণা স্তম্ভকে আমরা হারিয়ে যেতে দেব না, আমরা এটাকে বাংলাদেশের সকল স্বৈরাচারের জন্য একটা প্রতীক হিসেবে দাঁড় করাতে চাই। যে বা যারা এটা মুছেছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং এই ইস্যুতে সব ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের ঐক্য আছে বলে আমরা মনে করি।’
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার শাসনামলে মেট্রোরেলের রাজু ভাস্কর্য–সংলগ্ন দুই পিলারে শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রাফিতি আঁকে ছাত্রলীগ। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর জনতা তার গ্রাফিতিতে জুতা নিক্ষেপ, রক্তের প্রতীকস্বরূপ লাল রং, ইটপাটকেল ও ঝাড়ু মেরে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করে। ফলে এক সময়ের গ্রাফিতি জনতার ক্ষোভ ও ঘৃণার প্রতীকে রূপ নেয়। ফলে এর নামকরণ হয় ‘ঘৃণাস্তম্ভ’। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটি মুছে ফেলার চেষ্টা করে। তবে তুমুল সমালোচনার মুখে কর্তৃপক্ষ জানায়, এটি ভুলবশত হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এমন ভুল আর হবে না।
আরএ/জেবি