বিদেশে উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্যে ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এম কে বাশারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি— প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে গড়ে ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে এবং অর্থ ফেরত চাইলে হামলার শিকার হয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে "বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান এম কে বাশারের বিরুদ্ধে বিদেশি উচ্চ শিক্ষার নামে প্রতারণা" শীর্ষক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. শিহাবুল ইসলাম। তিনি জানান, তারা বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও টিউশন ফি প্রদান করেছেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি টিউশন ফি না জমা দিয়ে সেই অর্থ আত্মসাৎ করেছে। টাকাগুলো ফেরত চাইলে প্রতিষ্ঠানটি নানা তালবাহানা করে এবং শিক্ষার্থীদের আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
চেক জালিয়াতি ও হামলার অভিযোগও তুলে ধরেন শিহাবুল ইসলাম। তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানটি তাদের পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য চেক প্রদান করে, কিন্তু ব্যাংকে এসব চেক ফেরত চলে যায়। তাদের দাবি— প্রতিটি শিক্ষার্থীর গড়ে ২০ লাখ টাকা পাওনা। পাওনা টাকা আদায়ের জন্য তারা থানায় অভিযোগ করেন, কিন্তু কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না পেয়ে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে গেলে বিএসবি চেয়ারম্যান খায়রুল বাশারের গুন্ডাবাহিনী তাদের ওপর আক্রমণ চালায় এবং তারা হুমকি পেতে থাকে।
ভুক্তভোগীরা জানান, সর্বশেষ ২৭ আগস্ট বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান বাশারের সঙ্গে এক স্টাম্প পেপার চুক্তি হয়। চুক্তিতে ২৩ সেপ্টেম্বর, ২২ অক্টোবর ও ২৫ নভেম্বরের মধ্যে তাদের পাওনা টাকা পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু প্রথম কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে, তারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনার বিষয়ে গুলশান থানা অবগত আছে।
এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা তাদের অর্থ উদ্ধারে নিরাপত্তা চেয়ে জিডি, প্রতারণা ও চেক জালিয়াতি মামলা দায়ের করেছেন এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরে অভিযোগ পাঠিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে তারা ৫ দফা দাবি জানান
-বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের প্রতারণার শিকার শিক্ষার্থীদের অর্থ জরিমানা সহ ফেরত দিতে হবে।
-প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এবং কাউন্সিলরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক।
-ভবিষ্যতে যাতে এমন কোনো শিক্ষার্থী প্রতারণার শিকার না হয়, সে জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
-টিউশন ফি ও ভিসা প্রসেসিংয়ের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া অর্থ বিদেশে পাচারের বিষয়টি তদন্ত করতে হবে।
-আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
ভুক্তভোগীরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এবং নিজেদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এমএইচ/এইউ

